নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তোলায় ছাত্রদল সভাপতিকে ‘মিথ্যাবাদী’ বললেন
Published: 2nd, August 2025 GMT
‘উপাচার্য শিক্ষার্থীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করে নিয়োগের নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন’ সম্প্রতি এক সমাবেশে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী এ কথা বলেন। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রকাশিত এই বক্তব্যের ফটোকার্ড নিজের ফেসবুকে শেয়ারও করেন তিনি।
রাহীর এ বক্তব্যকে মিথ্যা, মনগড়া, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অসম্মানজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহা.
সুলতান আহমেদ রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান। সেখানে তিনি লিখেছেন, “রাবির একজন সাবেক ছাত্রের কাছ থেকে এ ধরনের মিথ্যা ও মনগড়া মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত এবং অসম্মানজনক! সাবেক এই শিক্ষার্থীর নিকট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এ মন্তব্যের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা চাওয়া।”
আরো পড়ুন:
চাকসুতে এমফিল-পিএইচডি শিক্ষার্থীদের প্রার্থিতার সুযোগ নিয়ে সমালোচনা
‘বিচার প্রক্রিয়া ও সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে’
একইসঙ্গে শাখা ছাত্রদলের সভাপতির বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ। তিনিও রাহীর ফটোকার্ড শেয়ার করার ছবি স্ক্রিনশট দিয়ে ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন, “একজন প্রাক্তন ছাত্রের কাছে তার প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যাচার অত্যন্ত গর্হিত কাজ। ভিসি মহোদয়ের শত্রুরাও এ অভিযোগ বিশ্বাস করবে না! এ ধরনের অভিযোগের প্রমাণ দিতে হবে অভিযোগকারীকে। অন্যথা এ মানহানিকর বক্তব্যের দায় নিতে হবে।”
এ বক্তব্যের প্রতিবাদে রাবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. আমিরুল ইসলাম কনক তার ফেসবুকে লিখেছেন, “ব্যক্তিগত কোনো পছন্দ অপছন্দের বিষয় নয়, কোনো ব্যক্তির প্রতি অনুরাগ বা বিরাগও নয়। যে ব্যক্তি বা সংগঠনেরই হউক, কোনো অছাত্র ক্যাম্পাসের ছাত্র রাজনীতিতে থাকা সমীচীন নয়। মিথ্যাচার, মানহানিকর বক্তব্য দিয়ে কেউ আইন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করলে মূল সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট শাখা সংগঠনকে তার দায় নিতে হবে।”
নিয়োগ বাণিজ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগের কোনো প্রমাণ আছে কি না জানতে চাইলে সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “আমি তো আর আদালত না। সাংবাদিকদের সংবাদের উপর ভিত্তি করে আমি বক্তব্য দেই। সাংবাদিকদের সুবাদে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আমি এই বক্তব্যটা দিয়েছি। আজ দেখলাম স্যারেরা ফেসবুকে আমার বক্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। আমিও চাই প্রশাসন আমার কাছে ব্যাখ্যা আহ্বান করুক। এর ব্যাখ্যা দিতে আমি প্রস্তুত আছি।”
নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ছাত্রদলের এ নেতা আরো বলেন, “আমরা জাসদ ছাত্রলীগের নেতাকে নিয়োগ দেওয়ার নিউজ দেখেছি। আওয়ামী লীগের সভাপতির জামাইকে নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্যের স্ত্রীর নিয়োগের বিষয়টা দেখেছি। বিভিন্ন টেন্ডার বাণিজ্যের অনিয়ম হয়েছে, ইন্টার পাশে নবম গ্রেডের চাকরি দেওয়ার বিষয়ে দেখেছি। এমন ভুরি ভুরি অভিযোগ আমাদের কাছে আছে।”
ছাত্রদল নেতার এমন মন্তব্যের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, “এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার। তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যাবাদী ও অপবাদকারী। কোটি কোটি টাকা তো দূরের কথা, একটি পয়সাও আমার বা আমাদের তরফ থেকে দুর্নীতি হয়নি।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অভ য গ শ য় র কর উপ চ র য ছ ত রদল ফ সব ক
এছাড়াও পড়ুন:
চলন্ত গাড়ির নিচে পড়েও অক্ষত অবস্থায় ফিরল ৩ বছরের শিশুটি
ভারতের গুজরাট রাজ্যের আহমেদাবাদের নোবলনগর এলাকায় গতকাল বুধবার গাড়ির নিচে পড়ে গিয়েছিল তিন বছরের এক শিশুকন্যা। তবে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে সে।
অভিযোগ উঠেছে, এক কিশোর গাড়িটি চালাচ্ছিল। এ ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। পরে এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গাড়িতে নম্বর প্লেট ছিল না, যা আইন লঙ্ঘনের শামিল। পুলিশ ঘটনার পর মামলা করে তদন্ত শুরু করেছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন শিশুটি তার বাড়ির বাইরে রাস্তায় খেলা করছিল। কিশোর চালকটি তাকে দেখতে না পেয়ে তার ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা চিৎকার শুরু করার পর চালক গাড়িটি থামায়। সঙ্গে সঙ্গে লোকজন জড়ো হয়।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গাড়ি থামানোর পর ভীতসন্ত্রস্ত শিশুটি চিৎকার করতে করতে গাড়ির নিচ থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসছে। এর মধ্যে চালকও বাইরে বেরিয়ে আসে। এরপর একজন নারী ওই কিশোর চালককে চড় মারছেন। এ সময় শিশুটি হাঁটাচলা করতে পারছিল।
আহমেদাবাদ পুলিশ নিশ্চিত করেছে, তারা চালকের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় ‘জি’ ডিভিশন ট্রাফিক থানায় বিএনএস আইনে মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনকারী ওই কিশোরের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এটি সড়কের নিরাপত্তা এবং আবাসিক এলাকায় আরও বেশি সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন।
একজন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী ঘটনাটিকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি লিখেছেন, ‘এটি ১০০ ভাগ আটকানো যেত। এর একটাই অলঙ্ঘনীয় নিয়ম—অপ্রাপ্তবয়স্ক বা লাইসেন্সবিহীন কোনো ব্যক্তিকে কখনোই গাড়ি চালাতে দেওয়া উচিত নয়। গাড়ির চাবি শিশুদের কাছ থেকে নিরাপদে দূরে রাখতে হবে। লাইসেন্সধারী চালকের জন্য নিয়ম হলো, সব সময় ধীরে ধীরে গাড়ি ঘোরানো এবং ভালোভাবে সব লুকিং গ্লাস ও ব্লাইন্ড স্পট পরীক্ষা করা।’
আরেক ব্যবহারকারী মা–বাবাকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এই ভিডিও প্রমাণ করেছে যে অলৌকক ঘটনা সত্যিই ঘটে...কিন্তু সব সময় নয়। রাস্তা খেলার জায়গা নয়...মা–বাবার উচিত বাচ্চাদের দিকে সব সময় নজর রাখা।’
অন্য আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেটি কীভাবে গাড়ির চাবি পেল? তার মা–বাবাকে কারাগারে পাঠানো উচিত।’