রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুলে ডুবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোছা. সায়মা হোসেনের মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তদন্ত কমিটি।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

জাপানের এনইএফ বৃত্তি পেলেন বাকৃবির ২০ শিক্ষার্থী

রাবি ছাত্রীর মৃত্যুর ৩ দিনেও তৈরি হয়নি প্রতিবেদন, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

লিখিত তদন্ত প্রতিবেদনে সকলের সামনে তুলে ধরেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপ উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দীন খান। তিনি বলেন, “সায়মা মৃত্যুর পরদিন থেকে ২১ জন ব্যক্তির সাক্ষাৎকার, মেডিকেল ও সুইমিংপুলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ, লিখিত বক্তব্য ও অন্যান্য বিচার বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে।”

প্রতিবেদন অনুযায়ী তিনি আরো বলেন, “সায়মা সেদিন সাইকেল নিয়ে সুইমিংপুলে প্রবেশ করে। তারপর সাইকেল রেখে রুমে গিয়ে পোশাক পরিবর্তন করে সাঁতারের জন্য নামে। এ সময় তার সঙ্গে আরো একজন শিক্ষার্থী নামে। তারা দুজন একইসঙ্গে সাঁতার শুরু করে। তবে তার সঙ্গে যে ছিল সে একটু এগিয়ে ছিল।’

অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “সায়মা সাঁতার শুরু করে ৪টা ১২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে। সে প্রথম লাইনেই সাঁতার কাটছিল ওয়ালের পাশে এবং তার পাশেই আরেকজন মেয়ে সাঁতার কাটছিল। প্রায় ১ মিনিট ঠিকভাবে সাঁতার কাটার পরেই সায়মা প্রবলেম ফেস করতে শুরু করে।”

সিসি ক্যামেরার ফুটেজে অনুযায়ি অধ্যাপক ফরিদ আরো বলেন, “সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, তখন সে বারবার ডুব দিচ্ছিল এবং উঠছিল। তারপরই সে পানির নিচে তলিয়ে যায়। কিন্তু কেউ সেটা খেয়াল করে না। তার পাশে যে মেয়েটা সাঁতার কাটছিল, সে সাঁতার কেটে কয়েকবার এপাশ থেকে ওপাশে গেছে ৷ সে তখনো খেয়াল করেনি।”

“সায়মা বাদেও সেখানে পাঁচজন সাতারু এবং তিনজন প্রশিক্ষক ছিলেন। তাদের কারোর দৃষ্টিতেই সায়মা ডুবে যাওয়ার বিষয়টি আসেনি। পাশের মেয়েটা সাঁতার কেটে উঠার পর সে লক্ষ্য করে, তার পাশে সাঁতার কাটতে থাকা সায়মা পাশে নেই। তারপর সে গিয়ে তার ম্যাডামকে জানালে তারা ওয়াশরুমসহ সব যায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও পায়নি। হঠাৎ সায়মাকে পানির নিচে ডুবে থাকতে দেখে রুনা লায়লা নামে একজন প্রশিক্ষক পানিতে ঝাঁপ দিয়ে উঠাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি উঠাতে পারেননি,” যোগ করেন উপ-উপাচার্য।

তিনি বলেন, “এরপর উপস্থিত আরো ২-৩ জন নামলেও সায়মাকে উঠাতে পারেনি তারা। সেখানে পানির গভীরতা প্রায় ৭ ফুট ছিল, ফলে তাকে তোলা সম্ভব হচ্ছিল না। এরপর বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে আশপাশ থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী আসে। তাদের মধ্যে একজন পানিতে নেমে মাথার সাহায্য তাকে উপরে তোলে এবং সবাই ধরাধরি করে তাকে উদ্ধার করা হয়।”

তিনি আরো বলেন, “এরপর সেখান থেকে উদ্ধার রাবি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যে ডাক্তার ছিলেন, তিনি তার পালস-বিপি কিছুই ছিল না বলে জানিয়েছেন। তবে সেখানে দক্ষ কর্মীর অভাবে অক্সিজেন দিতে প্রায় ১০ মিনিট বিলম্ব হয়। তারপর সেখান থেকে সায়মাকে রাজশাহী মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”

অধ্যাপক ফরিদ বলেন, “আমরা তার পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, তার আগে থেকেই শ্বাসকষ্টের সমসয়া ছিল এবং সে ইনহেলার নিত। তারপরেও কেনো তাকে সাঁতারে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হয়েছে, সেটার প্রশ্ন থেকেই যায়। একজন শিক্ষার্থী ডুবে যাওয়ার ২০ মিনিট পরেও কেউ কেন খেয়াল করল না, এ প্রশ্নও থেকে যায়।”

অধ্যাপক ফরিদ আরো বলেন, “সাঁতার কাটার সময় যারা উপস্থিত ছিল বা মেডিকেলের ডাক্তারের কোনো অবহেলা বা গাফিলতি আমরা লক্ষ্য করিনি। তার টের পাওয়ার পর যথেষ্ট চেষ্টা করেছে। সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি করেছে। তবে মেডিকেল সেন্টারে দক্ষ নার্স বা কর্মচারী না থাকায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে।”

সাঁতার প্রশিক্ষকের ব্যাপারে তিনি বলেন, “আরেকটা বিষয় বারবার সামনে আসছে, বলা হচ্ছে- প্রশিক্ষক সাঁতার পারে না। এটা সত্য নয়, তিনি সাঁতার পারেন। আমরা এখন পর্যন্ত এ তথ্যগুলো পেয়েছি, বাকিটা চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্টে জানানো হবে।”

এ সময় সিনেট ভবনে উপস্থিত ছিলেন, উপ উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতেখার আলম মাসউদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ড.

মো. সিদ্দিকুর রহমান, রাকসুর নবনির্বাচিত প্রতিনিধিরাসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, প্রতিশ্রুত ৭২ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও তদন্ত প্রতিবেদন না দেওয়ার প্রতিবাদে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তাদের প্রশাসন ভবনের সামনে টায়ার পুড়িয়েও বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপস থ ত র স মন রপর স ত রপর

এছাড়াও পড়ুন:

কিংসের কাছে হেরে মোহামেডানের হতাশার সন্ধ্যা, মোজাফফরভের লাল কার্ড

বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা গ্যালারির এক প্রান্তে কিছুক্ষণ পরপর স্লোগান ‘বসুন্ধরা, বসুন্ধরা’। ঢোলের বাদ্যও শোনা যাচ্ছিল ক্ষণে ক্ষণে। মাঠের অন্য প্রান্তে কম যাননি মোহামেডানের সমর্থকেরা। তাঁরা বড় ব্যানার নিয়ে এসেছেন। সঙ্গে ছোট ছোট পতাকাও। উদ্দেশ্য, বাংলাদেশ ফুটবল লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে নিজ দলকে উৎসাহ দেওয়া। কিংস অ্যারেনায় পরিবেশটা বেশ জমে উঠেছিল আজ সন্ধ্যায়।

শেষ পর্যন্ত মাঠের লড়াইয়ে রাতটা নিজেদের করে নিয়েছে কিংস। ষষ্ঠ রাউন্ডের খেলায় তারা মোহামেডানকে হারিয়েছে ২–০ গোলে। কিংসের হয়ে দুটি গোল করেন রাকিব হোসেন ও দরিয়েলতন গোমেজ। গোলহীন থাকা মোহামেডানের মোজাফফরভ লাল কার্ড দেখেছেন।

ম্যাচে কিংস এগিয়ে যায় ১৫তম মিনিটেই। ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের ক্রসে রাকিবের ডান পায়ের নিচু ভলিতে হয় ১-০। এবারের লিগে এটি তাঁর প্রথম গোল। রাকিব ছিলেন অরক্ষিত, পাহারায় মোহামেডানের কেউ ছিল না। ম্যাচ শেষে মাঠে দাঁড়িয়ে রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাঁচটি গোলে অ্যাসিস্ট করেছি, কিন্তু প্রথম গোল পেলাম আজ।’

ম্যাচে মোহামেডান দ্বিতীয় গোল হজম করে ৯০তম মিনিটে। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার দরিয়েলতন গোমেজ মোহামেডানের দুই ডিফেন্ডার এবং গোলকিপার সুজনকে কাটিয়ে ফাঁকা পোস্টে বল ঠেলে ২-০ করেন। এরপর মাঠে শুরু হয় গোলমাল। কিংসের সিনিয়র সোহেল রানাকে ঘুষি মেরে লাল কার্ড দেখেন মোহামেডানের উজবেক মিডফিল্ডার মোজাফফরভ। রেফারির সিদ্ধান্ত যে তাঁর পছন্দ হয়নি, সেটি বোঝা গেছে এরপর আরও উত্তেজিত হয়ে ওঠার ঘটনায়। ম্যাচ শেষে মোজাফফরভকে ড্রেসিংরুমে চুপচাপ বসে থাকতে দেখা গেছে।

মোজাফফরভ (১৭ নম্বর জার্সি) শেষ দিকে লাল কার্ড দেখেছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার ডিজিটাল ঋণ
  • ‘দুটি হাত ছাড়াই মানুষের কৌতূহলের জবাব দিতে পেরেছি’
  • বিশৃঙ্খলতায় পণ্ড মেসিকে ঘিরে কলকাতার আয়োজন
  • টাইব্রেকারে দুটি শট আটকে ফারইস্টকে বিদায় করে এআইইউবিকে ফাইনালে তুললেন রাজীব
  • দেয়াল টপকে ভেতরে ঢুকে মাস্ক পরা যুবক, এরপর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আগুন
  • চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল, জিয়া-জলিলের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি
  • তারেক রহমান দেশে ফিরছেন ২৫ ডিসেম্বর
  • কিংসের কাছে হেরে মোহামেডানের হতাশার সন্ধ্যা, মোজাফফরভের লাল কার্ড
  • হাদিকে গুলি: সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা গেল
  • রণবীরের হাঁটুর বয়সি নায়িকা সারাকে কতটা জানেন?