নেশার টাকা না পেয়ে যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও, ধস্তাধস্তিতে বাবার হাতে খুন
Published: 17th, August 2025 GMT
নাটোরের সিংড়া উপজেলায় এক যুবক নেশার টাকা না পেয়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাবার ওপর চড়াও হন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে বাবার হাতে ওই যুবক খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চামারী ইউনিয়নের মহিষমারী গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত শরিফুল ইসলাম (২৮) ওই গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী শহীদ মোল্লার ছেলে। ঘটনার পর থেকেই শহীদ পলাতক। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যায় ব্যবহৃত হাঁসুয়াটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরিফুল মাদকাসক্ত ছিলেন। নেশার টাকা জোগাড় করতে প্রায়ই এলাকার হাঁস-মুরগি ও বাসাবাড়িতে চুরি এবং পরিবারের সদস্যদের মারধর করতেন। তাঁকে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রেও রাখা হয়েছিল। পরে সেখান থেকে তিনি চলে আসেন। স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় নেশার টাকা না পেয়ে শরিফুল তাঁর বাবাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেন। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তিনি বাবার হাতের ধারালো হাঁসুয়ার কোপে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
স্থানীয় চামারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সাবান সরদার বলেন, ‘নেশার দ্রব্য কেনার জন্য টাকা চেয়ে না পেলে উগ্র হয়ে উঠত শরিফুল। গতকাল সন্ধায় ওই কারণে সে তার বাবাকে খুন করার জন্য তেড়ে আসে। ওই সময় বাবা আত্মরক্ষার জন্য ছেলেকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। পরে শরিফুল মারা যায়।’
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মমিনুজ্জামান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ধারালো হাঁসুয়া উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই নিহত যুবকের বাবা পলাতক। এ বিষয়ে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার: প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২
ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছ থেকে দুটো ড্রামের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুলের মরদেহের ২৬ টুকরো উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন ডিবি প্রধান।
অন্যদিকে, খুদে বার্তায় শুক্রবার রাতে র্যাব সদরদপ্তর থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
শুক্রবার নিহত আশরাফুল হকের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত আশরাফুল হক (৪৩) দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ও মালায়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল বাল্যবন্ধু। তাদের বাড়ি রংপুরের একই গ্রামে। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভে’ কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে জরেজুলের পরিচয় হয়। শামীমা দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় বসবাস করেন। একপর্যায়ে জরেজুল ও শামীমা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জরেজুল মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসতেন এবং শামীমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এই সম্পর্কের কথা জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে জানিয়েছিলেন। একসময় জরেজুলের কাছ থেকে আশরাফুল শামীমার ফোন নম্বর নেন। তিনিও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর জরেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই বাসায় তিনি শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। শামীমা তার দুই সন্তানকে কুমিল্লায় রেখে আসেন। গত মঙ্গলবার জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় আসেন। একপর্যায়ে জরেজুল বুঝতে পারেন, শামীমার সঙ্গে আশরাফুল সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
এ ঘটনার জেরে আশরাফুলকে হত্যা করা হয় এবং লাশ গুমের জন্য ২৬ টুকরো করে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশ জানায়। নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
ঢাকা/এমআর/ইভা