ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছ থেকে দুটো ড্রামের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুলের মরদেহের ২৬ টুকরো উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার।

কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‍্যাব জানিয়েছে।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি)  মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান। 

শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন ডিবি প্রধান। 

অন্যদিকে, খুদে বার্তায় শুক্রবার রাতে র‌্যাব সদরদপ্তর থেকে  জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।

শুক্রবার নিহত আশরাফুল হকের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

নিহত আশরাফুল হক (৪৩) দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর। 

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ও মালায়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল বাল্যবন্ধু। তাদের বাড়ি রংপুরের একই গ্রামে। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভে’ কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে জরেজুলের পরিচয় হয়। শামীমা দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় বসবাস করেন। একপর্যায়ে জরেজুল ও শামীমা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জরেজুল মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসতেন এবং শামীমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এই সম্পর্কের কথা জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে জানিয়েছিলেন। একসময় জরেজুলের কাছ থেকে আশরাফুল শামীমার ফোন নম্বর নেন। তিনিও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর জরেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই বাসায় তিনি শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। শামীমা তার দুই সন্তানকে কুমিল্লায় রেখে আসেন। গত মঙ্গলবার জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় আসেন। একপর্যায়ে জরেজুল বুঝতে পারেন, শামীমার সঙ্গে আশরাফুল সম্পর্কে জড়িয়েছেন। 

এ ঘটনার জেরে আশরাফুলকে হত্যা করা হয় এবং লাশ গুমের জন্য ২৬ টুকরো করে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশ জানায়। নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

ঢাকা/এমআর/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আশর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ ম্যাচকে মনে করানোর দিনে বুমরার ৫ উইকেট

২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছিল ভারত–বাংলাদেশ। সেটিই ছিল ভারতের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট, বাংলাদেশেরও। এরপর গত ছয় বছরে কলকাতার বিখ্যাত মাঠটিতে আর টেস্ট হয়নি। ইডেনের টেস্ট–খরা কেটেছে আজ ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে। অর্ধযুগ বিরতির কারণেই কিনা কে জানে, প্রথম দিনে খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছেন ৩৬ হাজার ৫১৩ দর্শক।

দিনটা তাঁদের মন্দ যায়নি। টসে জেতা দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট করেছে ভারত। এরপর দিনের শেষ দিকে ভারত ২০ ওভার ব্যাট করে শুধু যশস্বী জয়সোয়ালের উইকেটটাই হারিয়েছে। দিন শেষে দর্শকেরা সঙ্গে নিয়ে গেছেন যশপ্রীত বুমরার ৫ উইকেট দেখার আনন্দ।

দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। প্রথম ১০ ওভারেই ৫৭ রান তুলে ফেলেছিলেন দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও রায়ান রিকেলটন। ১১তম ওভারে রিকেলটনকে বোল্ড করে ভারতকে উদ্‌যাপনের প্রথম উপলক্ষ এনে দেন বুমরা। ২২ বলে ২৩ রান করা রিকেলটন বুমরার ঘণ্টায় ১৪০.৭ কিলোমিটার গতির ডেলিভারি ঠিকঠাক বুঝেই উঠতে পারেননি।

প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার করা বুমরা শেষটিতে তুলে নেন মার্করামকেও। ১ ছক্কা ৫ চারে ৪৮ বলে ৩১ রান করা মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে ঋষভ পন্তের হাতে। ৫ রানের মধ্যে বুমরা দুই ওপেনারকে তুলে নেওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় ভারতের হাতে।

কুলদীপ যাদব এসে টেম্বা বাভুমাকে ফেরানোর পর টনি ডি জর্জি ও উইয়ান মুল্ডার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের ৪৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিও ভেঙে দেন কুলদীপ। এরপর আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি।

১১৪ থেকে ১৫৯—৪৫ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে শেষ উইকেট হিসেবে কেশব মহারাজকে এলবিডব্লু করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন বুমরা। টেস্টে এটি তাঁর ১৬তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইশান্ত শর্মার পর ভারতের মাটিতে টেস্টের প্রথম দিনে কোনো পেসার ৫ উইকেট পেলেন এই প্রথম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি হয়েছিল গোলাপি বলে।

লাল বল বিবেচনায় নিলে ভারতে টেস্টের প্রথম দিনে ফাস্ট বোলারদের ৫ উইকেট নেওয়ার সর্বশেষ ঘটনা ২০০৮ সালে আহমেদাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনের।

বুমরার ৫ উইকেট নেওয়ার দিনে বল হাতে ভালো করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররাও। কাগিসো রাবাদা চোটের কারণে ছিটকে পড়লেও মার্কো ইয়ানসেন, করবিন বশ ও মুল্ডাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। ২০ ওভার ব্যাট করে ভারত তুলতে পেরেছে মাত্র ৩৭ রান। এর মধ্যে ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জয়সোয়াল। ৫৯ বলে ১৩ রান করা লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৩৮ বলে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা ওয়াশিংটন সুন্দর।

সব মিলিয়ে ইডেনে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে ৭৫ ওভারে দুই দল মিলিয়ে উঠেছে ১৯৬ রান, উইকেট পড়েছে ১১টি। ইডেনে টেস্টের প্রথম দিনে এর চেয়ে বেশি উইকেট পড়েছিল শুধু ২০১৯ সালের বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচেই (১৩টি)।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৫৯ (মার্করাম ৩১, মুল্ডার ২৪, ডি জর্জি ২৪, রিকেলটন ২৩; বুমরা ৫/২৭, কুলদীপ ২/৩৬)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ২০ ওভারে ৩৭/১ (রাহুল ১৩*, জয়সোয়াল ১২; ইয়ানসেন ১/১১)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্ধুকে আসামি করে মামলা করলেন নিহতের বোন
  • বাংলাদেশ ম্যাচকে মনে করানোর দিনে বুমরার ৫ উইকেট
  • শ্রীলঙ্কাকে থাকতে রাজি করিয়েছেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান
  • রোনালদোর লাল কার্ড, পর্তুগালকে চমকে দিল আয়ারল্যান্ড
  • স্পিন-জালে আয়ারল‌্যান্ডকে ‘শিকার’ বাংলাদেশের
  • ফেসবুকে প্রেম, গোপনে বিয়ে, এরপর হত্যার ঘটনায় ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ড
  • বিপিএলের নিলামে দেশি খেলোয়াড়দের বাজেট সাড়ে ৪ কোটি
  • ফুটবল খেলতে খেলতে মাঠেই ঢলে পড়লেন তরুণ, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
  • অভিনেত্রী সালি কর্কল্যান্ড মারা গেছেন