বুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা
Published: 28th, August 2025 GMT
শাহবাগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এ ঘটনা নিন্দা জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে এ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালণ করা হয়। রাইজিংবিডির বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-
আরো পড়ুন:
৩ দফা দাবিতে আগারগাঁওয়ে শেকৃবি শিক্ষার্থীদের ব্লকেড
রাবিতে ৭০ স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আরজেপি টেক অলিম্পিয়াড
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)
জবিতে হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। মিছিল শেষে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশি দমন-পীড়ন দেশের জন্য অশনিসংকেত। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দমননীতি অব্যাহত থাকলে শিক্ষা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট হবে। অবিলম্বে শিক্ষাব্যবস্থার মৌলিক সংস্কার করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশি হামলা বন্ধ করতে হবে।
এতে জবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি মাইন আল মুবাশ্বির, সেক্রেটারি হাসান মাহদী, শাখা ছাত্রশিবিরের অফিস সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় (খুবি)
ক্লাস বর্জন করে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে চলমান প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে খুবির ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং (ইসিই) ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা।
ঢাকায় প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে মানববন্ধনের শিক্ষার্থীরা বলেন, অধিকার আদায়ের আন্দোলনে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। প্রকৌশলীরা ন্যায্য দাবি তুললেও তাদের দমন করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা এই দমন-পীড়নের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
তারা আরো বলেন, প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ন্যায্য ও যৌক্তিক দাবিতে আয়োজিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের এ ধরনের দমননীতি কোনভাবেই কাম্য নয়। শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে এ ধরনের আক্রমণ গভীর উদ্বেগজনক এবং অগ্রহণযোগ্য।
মানববন্ধনে একাত্বতা জানিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড.
ইসিই ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “বিগত দিনের ঘটনাগুলো দেখে মনে হচ্ছে, আমরা টেকনিশিয়ান এবং ইঞ্জিনিয়ার এই পার্থক্যটা বুঝি না। আমাদের বোঝা উচিত, টেকনিশিয়ানদের কাজ এবং ইঞ্জিনিয়ারদের কাজ ভিন্ন। সুতরাং যার যেটা কাজ, তাকে সেটা করতে দেওয়া উচিত। পাশাপাশি গ্র্যাজুয়েট প্রকৌশলীদের সহকারী প্রকৌশলী বা সমমানের পদে নিয়োগে কোটাসংক্রান্ত বৈষম্য দূর করা জরুরি।”
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি)
ঢাকায় তিন দফা দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছেন গোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, “প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পুলিশের হামলার ঘটনায় গোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরাও মারাত্মক আহত হয়েছেন। তাদের ন্যায্য দাবি পূরণে সরকারকে অনুরোধ করছি এবং আহত শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি।”
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি)
রাজধানীতে প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন মাভাবিপ্রবির বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থীরা। দুপুরে ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলন এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের হল চত্বর থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা চলমান প্রকৌশল আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে নতুন ৫ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আন্দোলনকারীদের সামনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে ও জবাবদিহি করতে হবে; ডিসি মাসুদের বক্তব্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের হাতে ছুরি থাকার প্রমাণ দিতে হবে, প্রমাণ দিতে ব্যর্থ হলে তাকে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে।
অন্য দাবিগুলো হলো- পূর্বে গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যাখ্যান করা হলো, অনতিবিলম্বে শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত তিন দফা নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন করতে হবে; হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে এবং আন্দোলন চলাকালীন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; প্রকৌশল আন্দোলনের অন্যতম নেতা রোকন ভাইয়ের ওপর হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে চাকরি থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)
বুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের উপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে আহত করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেন বেরোবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের ন্যায্য দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন। তাদের ওপর অকারণে যে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে, তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের দাবি শোনা ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা উচিত ছিল। শিক্ষার্থীদের ওপর এ ধরনের হামলা শিক্ষাঙ্গনকে আতঙ্কিত করে তোলে। অবিলম্বে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা এবং দোষীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”
ঢাকা/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ঘটন য় ব প রব প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার ও ২১ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ
সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন, দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পুনর্বহাল এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ২১ দফা দাবিতে শহরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক ইউনিয়ন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি আবু সাউদ মাসুদের সভাপতিত্বে এবং একেএম মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, নিউ নেশন পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক এ আর ফররুখ আহমেদ খসরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মো: মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক মনির হোসেন, দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনের রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম হানিফ, দৈনিক বাংলাদেশ বুলেটিন পত্রিকার সাংবাদিক উজ্জল হোসেন মাসুম, দৈনিক ইয়াদ পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার মেহবুব মিয়া, দৈনিক পূর্বাভাস পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি, দৈনিক দেশ পত্রিকার সাংবাদিক মোখলেসুর রহমান তোতাসহ প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, ‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’ নীতি কার্য্যকর, সাংবাদিকদের বেতন সর্বনিম্ন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ, প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন, সাংবাদিক সুরক্ষা নীতিমালা প্রনয়ন, সাংবাদিকদের সাপ্তাহিক ছুটি ২দিন নির্ধারণ, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনীসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, গনমাধ্যমের স্বাধীনতা বিরোধী সকল কালাকানুন বাতিল, আইন অনুযায়ী সাংবাদিকদের ন্যায্যা পাওনা আদায়ের জন্য পৃথক শ্রম আদালত স্থাপন সহ ২১ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ আমরা মানববন্ধন করছি।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের আহ্বান অনতিবিলম্ভে আমাদের এসব দাবিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি এম আর কালাম, নাহিদ আজাদ, বাংলাদেশ নিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ইমতিয়াজ আহমেদ, নিউজ টুয়েন্টিফোর টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শরিফ সুমন, দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি মোশতাক আহমেদ, বাংলাদেশের খবর পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি আল আমিন, দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি সাব্বির হোসেন, মানব জমিনের ফতুল্লা প্রতিনিধি আবু সাঈদ পাটুয়ারী রাসেল, মুসলিম টাইমসের নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি সাইফুল্লাহ খালিদ রাসেল, চ্যানেল এস এর সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি সাদ্দাম হোসেন মুল্লা, দৈনিক সংগ্রামের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি ইখতিয়ার রাহয়ান, সাংবাদিক শরিফুল ইসলাম আরজু, এস এম জহিরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, সম্রাট প্রমুখ।