প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কেউ যদি নির্বাচনের কোনো বিকল্প নিয়ে ভাবে, সেটা হবে এ জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক। রবিবার (৩১ আগস্ট) রাতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিষয়টি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে একমত জামায়াত, অভিযোগ ষড়যন্ত্রের

যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধি দল

শফিকুল আলম বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা যে ঘোষণা দিয়েছেন, নির্বাচন সে সময়ের মধ্যে হবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”

প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেছেন, কেউ যদি নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নিয়ে ভাবে, সেটা হবে জাতির জন্য গভীর বিপজ্জনক।”

প্রেস সচিব বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন হবে। তিনি বারবার বলেছেন, এটা বাংলাদেশর ইতিহাসে ওয়ান অব দ্য বেস্ট ইলেকশন হবে। পিআর পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের কথা হচ্ছে। বিষয়টি কমিশন গণমাধ্যমকে জানাবে।”

শফিকুল আলম বলেন, “বৈঠকে জাতীয় পার্টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। একেকজন একেক ধরনের মতামত দিয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা সেটা শুনেছেন।”

এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, “খুবই সৌহার্দ্যপূর্ণ ও আন্তরিক পরিবেশে বৈঠক হয়েছে।”

বৈঠকে দুর্গাপূজার বিষয়টি এসেছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, “দুর্গাপূজা ঘিরে দেশে যেনকোনো ধরনের ষড়যন্ত্র, কেউ যেন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সেজন্য সব রাজনৈতিক দলকে সজাগ থাকার পাশাপাশি সবার সহযোগিতা চেয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।”

বৈঠকের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সাক্ষাৎ করেন বলে জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, “জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে কী কী অগ্রগতি হয়েছে, তারা প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেছেন। পাশাপাশি জুলাই সনদের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো কী মতামত দিয়েছে, সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।”

ঢাকা/রুহানী/রায়হান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব কল প ন র জন ত ক বল ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে

সংস্কার প্রশ্নে বাড়াবাড়িতে না গিয়ে দ্রুত নির্বাচনমুখী কর্মসূচির দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে শিগগিরই নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন এবং প্রার্থী বাছাইয়ের দিকেও মনোযোগ দেবে দলটি।

গত সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায় চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার পর এসব বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলটির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রে জানা গেছে।

এ ছাড়া জুলাই জাতীয় সনদ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দলের যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা, জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্য না হলে এর প্রতিক্রিয়ায় কী হতে পারে, অথবা সরকারের দিক থেকে অমীমাংসিত সংস্কার চাপিয়ে দেওয়া হলে এর পরিণতিতে কী হতে পারে—এসব বিষয়ে নেতারা আলোচনা করেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সভায় অংশ নেন। তারেক রহমান ও মির্জা ফখরুল সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন।

ওই সূত্র বলছে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করেন, জুলাই জাতীয় সনদ বা গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক সংস্কার প্রশ্নে বিএনপির দিক থেকে যে অবস্থান প্রকাশ করা হয়েছে, এর বাইরে আর তেমন কিছু করার নেই। এখন বিএনপির অপেক্ষায় থাকাই ভালো যে এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বা সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি বিএনপির উচিত হবে এ নিয়ে কোনো ধরনের বাড়াবাড়িতে না গিয়ে দ্রুত নির্বাচনমুখী কর্মসূচির দিকেই যাওয়া—যাতে অন্য শক্তি নির্বাচনমুখী পরিবেশ সৃষ্টির পথে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে না পারে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকব। সংস্কারের ব্যাপারে সরকার যা খুশি করুক, ভবিষ্যতে যাতে এটা নিয়ে আইনি চ্যালেঞ্জ না হয়, সেটাই বিএনপির চাওয়া।’

এর আগে স্থায়ী কমিটির একটি সভায় সারা দেশে জাতীয় নির্বাচনের ঢেউ সৃষ্টি এবং মানুষকে নির্বাচনমুখী করে তুলতে মাঠের কর্মসূচি শুরুর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দলটির নেতারা। কিন্তু সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সমাপ্তি না হওয়ায় বিএনপি মাঠের কর্মসূচি থেকে বিরত থাকে।

জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলনসহ সাতটি দল জুলাই সনদের ভিত্তিতে নির্বাচন আয়োজনসহ কয়েকটি দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিএনপি মনে করে, ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনা অমীমাংসিত রেখেই দলগুলো কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। সে কারণে বিএনপিরও কর্মসূচি শুরু করা উচিত বলে মনে করেন দলটির নেতারা।

অবশ্য জামায়াতসহ কয়েকটি দলের কর্মসূচির বিষয়ে সোমবার রাতে প্রথম আলোকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, জুলাই সনদ নিয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি ঘোষণা স্ববিরোধিতা। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, এই আন্দোলন কাদের বিরুদ্ধে, সেটা দেখতে হবে। এটা কি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে, নাকি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে, নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে? এটা নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার কোনো কৌশল কি না, সেটাও দেখতে হবে।

সোমবার স্থায়ী কমিটির সভায় বিএনপির নেতারা বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক কৌশলের বিপরীতে মাঠের কর্মসূচি দিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্যের মাধ্যমে জবাব দেওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা মনে করছেন, মাঠপর্যায়ে নির্বাচনী হাওয়া উঠে গেলে বিরোধীদের সব চক্রান্ত এবং অযৌক্তিক দাবি হারিয়ে যাবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি একাধিকবার এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং দেশবাসীকে দৃঢ়ভাবে আশ্বস্ত করেছেন। সে অনুযায়ী নির্বাচনের লক্ষ্যে মাঠপর্যায়ে সভা-সমাবেশের মাধ্যমে ভোটের হাওয়া তৈরি করার কথা ভাবছেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী নেতারা।

সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, নির্বাচনী অঙ্গীকার বা প্রতিশ্রুতি হিসেবে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির বিষয়েও নেতারা স্থায়ী কমিটির সভায় আলোচনা করেন। ইশতেহার তৈরির জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থ-বাণিজ্য, পররাষ্ট্র, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন খাতভিত্তিক বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের ব্যক্তিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সভায় জাতীয় পার্টিকে (জাপা) নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। বিএনপি নীতিগতভাবে কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের মতো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে। সেটি তারা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকেও বলেছিল।

স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে জনপ্রত্যাশা পূরণের অঙ্গীকারের পাশাপাশি সংস্কার বাস্তবায়নমুখী ইশতেহার হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সংবিধান আদেশ’ জারির সুপারিশ করতে পারে কমিশন: আলী রীয়াজ
  • অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
  • ফেব্রুয়ারিতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজনের অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
  • ‘স্বৈরাচারের পতন হলেও ষড়যন্ত্রের অবসান হয়নি’
  • কমিটি গঠন, প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত 
  • বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
  • বিএনপি নির্বাচনমুখী কর্মসূচিতে যাবে
  • চরাঞ্চলের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি
  • কারিগরি শিক্ষার্থীদের অবরোধের ঘোষণা সহিংস আন্দোলনের উসকানি: সংবাদ সম্মেলনে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
  • বৃষ্টি উপেক্ষা করে প্রচার শুরু, প্রার্থীদের ছোটাছুটিতে উৎসবমুখর ক্যাম্পাস