নুরের ওপর হামলার পর সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে: রাশেদ খান
Published: 31st, August 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, “আমরা তো সেনাবাহিনীর পক্ষে সবসময় বক্তব্য দিয়েছি যে, এই প্রতিষ্ঠানকে বিতর্কিত করা যাবে না। তবে, নুরুল হক নুরের ওপর হামলার পরে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এটা পুনরুদ্ধারের জন্য হলেও দোষীদের বিচার করা দরকার।”
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ প্রতিষ্ঠার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রবিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বিপ্লবীরা কতটা নিরাপদ’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিলে তিনি একথা বলেন।
আরো পড়ুন:
নুরের ওপর হামলার দায় সরকারকে নিতে হবে: আসিফ
নুরের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া
রাশেদ খান বলেন, “পুলিশের মধ্যে যারা এই হামলায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান নেতার ওপর হামলা, কার্যালয়ে ঢুকে নেতাকর্মীদের আহত করা ছোট কোনো ঘটনা নয়। এই ঘটনার সমাধান ও প্রতিকার না হলে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আরো ঘটতে পারে।”
গণঅধিকার পরিষদ সবসময় আইনের শাসনে বিশ্বাস করে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আমাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিষিদ্ধের দাবি করেছি। আমরা মনে করি, ফ্যাসিবাদ ও তার দোসরদের এই দেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই। সুতরাং, ইনক্লুসিভ নির্বাচনের নামে আওয়ামী লীগ ও তার দোসর জাতীয় পার্টির মাধ্যমে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। যদি তারা ন্যূনতম সুযোগ পায়, তবে আবারো ফ্যাসিবাদ ফিরিয়ে আনবে।”
“আরেকটা বিষয় স্পষ্ট করি, আমরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে না, নির্বাচন বানচালও আমরা করতে দেব না। আমরা চাই, ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংস্কার ও বিচারের সঠিক গতিপথ তৈরির মাধ্যমে এই দেশে নির্বাচন হবে। এই সরকারের ভুল থাকতে পারে, কিন্তু সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে পারি না,” যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুর মোরশেদ মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ, জাতীয় যুব শক্তির সদস্য সচিব ডা.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র
এছাড়াও পড়ুন:
সবাই আমাকে ভার্সেটাইল অভিনেতা বলেন, কিন্তু কাজ দেয় না: রুদ্রনীল
ভারতীয় বাংলা সিনেমার দাপুটে অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ। রুপালি পর্দার অনেক কাজ দিয়ে নিজেকে বহুবার প্রমাণ করেছেন। ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কারণে টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন, কর্মহীন হয়ে পড়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এর আগে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে কাজও চেয়েছিলেন এই অভিনেতা।
কয়েক দিন আগে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এ আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে ‘ভার্সেটাইল’ অভিনেতা বলা হয়। তবু অনেক অভিনেতা আরো বেশি জনপ্রিয়তা উপভোগ করেন। কেবল তাই নয় অনেক বেশি কাজও পান। ৫২ বছর বয়সে, এটা কি আপনাকে হতাশ করে, নাকি ২৫ বছরের অভিজ্ঞতা আপনাকে সবকিছু স্বাভাবিকভাবে নিতে শিখিয়েছে?
আরো পড়ুন:
আমার যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে, প্রশ্ন শ্রীলেখার
শাকিবের নায়িকা হতে ইধিকার ৩৮ লাখ টাকা পারিশ্রমিক দাবি?
এ প্রশ্নের জবাবে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “একসময় আমার ঈর্ষা হতো এবং নিজের সক্ষমতা নিয়ে সন্দেহ করতাম। কিন্তু সময়ের সঙ্গে উপলদ্ধি করেছি, জনপ্রিয়তা সবসময় পারফরম্যান্সের প্রতিফলন নয়। কাউকে যদি ‘সুপার’ অভিনেতা বলা হয়, কিন্তু তিনি দর্শক টানতে না পারেন, তাহলে সেটাই সব বলে দেয়। আগে খারাপ লাগত, যখন মিডিয়া এমন অভিনেতাদের পেছনে ছুটত এবং আমাদের মতো মানুষদের উপেক্ষা করত। কিন্তু এখন আর সেটা ভাবি না। অনেকে আছেন যারা প্রকাশ্যে আমার সঙ্গে কথা বলেন না। কিন্তু পরে ফোন করে নিজেদের গল্প শোনান। জীবন, তথাকথিত বন্ধুত্ব এই ইন্ডাস্ট্রিতে এমনই।”
অভিনয়শিল্পীদের ‘মেগাস্টার’, ‘সুপারস্টার’, ‘টলি কুইন’ ইত্যাদি উপাধিতে ডাকা হয়, এ নিয়ে আপনার মতামত কী? জবাবে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “আমি শুধু এটুকুই বলব—দর্শক নির্বোধ নন। আসল বিষয় হলো—গল্প এবং অভিনয়। ট্যাগ বা তকমা দিয়ে তাদের চিরকাল বোকা বানানো যায় না। গুণগতমান সবসময় প্রচারের চেয়ে বেশি কথা বলে। ধরুন, শিশুদের জন্য একটি হেলথ ড্রিংক তৈরি করা হলো, যার নাম ‘অশিম’। বিক্রি না হওয়ায় সেটিকে হঠাৎ ‘মহা অশিম’ নামে বাজারে আনা হলো। কিন্তু সেই পানীয় কেবল তখনই টিকবে, যখন এটি সত্যিই শিশুদের উপকারে আসবে। এটাই আমি বোঝাতে চাচ্ছি।”
২০১৬ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তারপর থেকে শোনা যাচ্ছে, ইন্ডাস্ট্রিতে আপনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। বলা হয়, কিছু পরিচালক আপনাকে কাস্ট করতে চান না। কারণ কাস্ট করলে তাদের সিনেমা নন্দন বা অনুরূপ স্থানে না দেখানোর ভয় রয়েছে। এই পরিস্থিতি কীভাবে সামলেছেন? উত্তরে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “২০২০ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে আমি বছরে মাত্র ১০–১৫ দিন কাজ করেছি। বেঁচে থাকার জন্য আমাকে নিজের গাড়ি ও বাড়ি বিক্রি করতে হয়েছে। বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্ক্ষীরাও আমাকে কাজ দিতে পারেননি।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “পাঁচ বছর ধরে, প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে, স্নান করে, বাড়িতেই বসে থাকতে হয়। অথচ অভিনয়ই ছিল আমার জীবন, আর হঠাৎ সেটা থেমে গেল। কিন্তু আমি টিকে আছি; বাঁচার প্রবৃত্তিই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে। রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে আমার কোনো অনুতাপ নেই। কিন্তু যারা বন্ধুত্বকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করেছেন, তাদের নিয়ে দুঃখ আছে।”
“অভিনয় আমার ভালোবাসা আর রাজনীতি দায়িত্ব—দুটোই সমাজ পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে। আমি ছাত্র রাজনীতির অংশ হয়ে বড় হয়েছি। আমি বিশ্বাস করি, রাজনীতি কোনো কলঙ্ক নয়, বরং এক ধরনের কর্তব্য।” বলেন রুদ্রনীল।
শোনা যাচ্ছে, আপনি সৃজিত মুখার্জির পরের সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছেন? এ বিষয়ে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “আশার কথা, আমি সৃজিতের পরবর্তী সিনেমার অংশ। মজার একটি চরিত্রের জন্য সে আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমি এটা করিনি। কারণ আমার আগের কিছু কমিটমেন্ট ছিল। সৃজিত একমাত্র ব্যক্তি যার সিনেমার অংশ হলেও কে কী বলল তা সে তোয়াক্কা করে না।”
পরিচালক রাজ চক্রবর্তী প্রসঙ্গে রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “রাজ কেন আমাকে ‘কাঠমান্ডু’ (২০১৫) সিনেমার পর আর কাস্ট করেননি, সেটা একমাত্র রাজই বলতে পারবে। আমরা তো একসময় স্ট্রাগল করেছি, সেই সময়ে রুমমেট ছিলাম, একই প্লেটে খেতাম, কারণ দুই প্লেট ভাত কেনার টাকাও ছিল না। আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন বিষয় হলো, আমার সেই বন্ধুরা, যারা একসময় আমাকে ভালোবাসত, তারাই এখন আমাকে কাজ দিতে পারে না।”
এর আগেও রুদ্রনীল ঘোষ টলিউডে ‘একঘরে’ হয়ে থাকার অভিযোগ তুলেছিলেন, এমনকী তাকে কাজ দিচ্ছেন না প্রযোজকরা—এমন অভিযোগও করেছিলেন। তবে বারবার সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল। বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বহু কলাকুশলী টলিউডে কাজ করছেন, সেখানে রাজনৈতিক দল বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি বলে দাবি তৃণমূলের।
ঢাকা/শান্ত