খুলনার শিপইয়ার্ড সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চালুর দাবিতে সড়কে ধানের চারা রোপণ করে প্রতীকী প্রতিবাদ ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (কেডিএ) লাল কার্ড প্রদর্শন করেছেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) খুলনা মহানগর শাখা। দ্রুত কাজ শুরু না হলে তারা কেডিএ ঘেরাও করার কথা জানান।

কর্মসূচিতে খুলনার নাগরিক ও স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা সংহতি প্রকাশ করেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রূপসা সেতুর পশ্চিম পাশের শিপইয়ার্ড সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। 

আরো পড়ুন:

খুবির কেন্দ্রীয় মাঠের বেহাল দশা

খুলনায় ব্যবসায়ী অপহরণ, মুক্তিপণের টাকাসহ ২ নারী গ্রেপ্তার

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহকারী মহাসচিব ও দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন। নিসচা খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মুন্নার সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি শেখ মো.

নাসির উদ্দিন। প্রধান বক্তা ছিলেন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার।

বক্তারা বলেন, খুলনার অন্যতম ব্যস্ত সড়ক রূপসা ট্র্যাফিক মোড় থেকে খানজাহান আলী (রহ.) সেতু পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার পথ মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ১২ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে সড়কে। ফলে প্রতিদিন হাজারো মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।

নির্মাণ প্রকল্পের কাজ করা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহাবুব ব্রাদার্সের গাফিলতি ও অনিয়মের কারণে সড়কের কাজ শেষ হয়নি। খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লুটপাতের কারণে যেটুকু কাজ সম্পন্ন হয়েছে তা নিম্নমানের। 

বর্তমানে সড়কটিতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে তাতে পানি জমেছে। সড়কের দুইপাশ খুঁড়ে বছরের পর বছর ফেলে রাখায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এক কথায় সড়কটি মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।  প্রকল্পে এত ধীরগতি ও ব্যর্থতার পরও কেন ঠিকাদারকে প্রায় ৭০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কেন তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হয়নি কেডিএর কাছে এমন প্রশ্ন তোলেন বক্তারা। 

বক্তারা অবিলম্বে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, শিপইয়ার্ড সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়ন না হওয়ার দায় কেডিএ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাহবুব ব্রাদার্স এড়াতে পারে না। এ প্রকল্পের সঙ্গে যারা জড়িত সবার বিচার করতে হবে। তারা সংশ্লিষ্টদের প্রতি অবিলম্বে এই সড়কের কাজ সম্পন্নের আহ্বান জানান। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কের নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু না হলে কেডিএ ঘেরাও করার কথা জানান বক্তারা।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, আমরা বৃহত্তর খুলনাবাসীর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সরদার আবু তাহের, সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুজ্জামান, খুলনা ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (কেডিএস) চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শিমুল, দৈনিক প্রবাহের স্টাফ রিপোর্টার মোস্তফা কামাল, খুলনা ব্লাড ব্যাংক ও ফুড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা সালেহ উদ্দিন সবুজ, ইউনাইটেড খুলনার সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাহিদুর রহমান, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক মো. ফিরোজ মাহমুদ, সহকারী সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম উজ্জ্বল, ইসলামী আন্দোলনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ কবির হোসেন, যুব আন্দোলনের সহ সভাপতি মো. লাবলু সরদার, ছাত্রদলের সদর থানার সদস্য সচিব আব্দুস সালাম, রূপসা সেতু সংলগ্ন হক সুপার মার্কেটের সভাপতি মজিবুর রহমান, নিসচার খুলনা মহানগর শাখার সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. আবু মুছা।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প র রহম ন বক ত র র সহ স সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর

শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।

পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।

একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।

ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।

শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।

ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
  • নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে সড়ক সংস্কার, দুদকের অভিযান