মাদ্রাসা সুপারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, পদত্যাগ দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ
Published: 5th, September 2025 GMT
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার নন্দীপুর ডি এস দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসা চত্বরে বিক্ষোভকালে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, মাদ্রাসা সুপার সরকারি বই চুরি, অ্যাডহক কমিটি গঠনে অনিয়ম, মাদ্রাসার সম্পদ বিক্রি এবং নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত।
স্থানীয় বাসিন্দা আশরাফুল বলেছেন, “আমাদের গ্রামে মসজিদ ও পাশাপাশি মাদ্রাসা রয়েছে। প্রতিবছর মসজিদের পুকুর থেকে যা আয় হয়, তার অর্ধেক টাকা মাদ্রাসায় দান করা হয়। কিন্তু, এই সুপার আসার পর মসজিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এই মামলায় প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আগে অন্য সুপারের সময় কোনো সমস্যা হয়নি। তাই, আমরা এই সুপারের পদত্যাগ চাই।”
আরেক স্থানীয় বাসিন্দা আলম হোসেন বলেন, “মাদ্রাসার সুপার স্থানীয়দের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করেই তার পছন্দমতো দূর থেকে সভাপতি নিয়ে এসে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছেন। এর জবাব চাই।”
হাসনাত, আরিফুল, ইমরান, আফজালসহ কয়েকজন বলেন, এই সুপারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ। তিনি মাদ্রাসার বই চুরি করে বিক্রি করেন, মাদ্রাসার গাছ বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেন। মাদ্রাসার সাইনবোর্ড টিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ আছে, যা গ্রামবাসী সবাই জানে। আমরা এমন দুর্নীতিবাজ সুপার চাই না। তাকে অপসারণ না করলে দেখা যাবে, অচিরেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অন্যত্র চলে যাবে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার রায়হান কবির বলেন, “আমি নিয়মমাফিক অ্যাডহক কমিটি করেছি। নারী কেলেঙ্কারি বিষয়ে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে।” অন্যান্য অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
হাকিমপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর-আলম বলেছেন, “নন্দীপুর মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগগুলো উঠেছে, সেগুলো তদন্ত করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেছেন, “নন্দীপুর মাদ্রাসায় অ্যাডহক কমিটি গঠন নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।”
হাকিমপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেছেন, “এ বিষয়ে জেনেছি। খতিয়ে দেখা হবে।”
ঢাকা/মোসলেম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান
সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।
ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।
আরো পড়ুন:
আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য
আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান
এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।
যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।
লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।
বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।
ঢাকা/আমিনুল