জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে প্রার্থিতা বহাল চেয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার সারা হোসাইন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে এ আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

জাকসু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হচ্ছে: শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম

জাকসু নির্বাচন: ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল

নোটিশে বলা হয়েছে, জাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা অনুযায়ী অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল বেআইনি, স্বেচ্ছাচারী এবং ন্যায়বিচারের নীতি ও সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। 

নোটিশে আরো বলা হয়েছে, অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বহাল করে এ নোটিশ প্রাপ্তির ১২ ঘণ্টার মধ্যে তা জানাতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায়, এটি ধরে নেওয়া হবে যে, আপনারা ন্যায়বিচার প্রদানে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এবং সে ক্ষেত্রে অমর্ত্য রায়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের অধীনে রিট দায়ের করার নির্দেশ রয়েছে, যার সব খরচ ও পরিণতির দায়ভার আপনাদের ওপর বর্তাবে।

চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের আটদিন পর শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী অমর্ত্য রায় জনের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামানের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। 

ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একে এম রাশিদুল আলম, সদস্য অধ্যাপক এম মাফরুহী সাত্তার ও অধ্যাপক লুৎফুল এলাহী।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী অমর্ত্য রায় জন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) গঠনতন্ত্রের ৪ ও ৮ ধারা মোতাবেক ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। এজন্য ভোটার ও প্রার্থী তালিকা থেকে তার নাম প্রত্যাহার করা হলো।

গত ১৭ আগস্ট জাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর ২৫ আগস্টের খসড়া প্রার্থী তালিকা ঘোষণা এবং ২৯ আগস্টের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় ভিপি পদপ্রার্থী হিসেবে অমর্ত্য রায়ের নাম ছিল। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সাতদিন পর শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়।  

এ নিয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক একে এম রাশিদুল আলম বলেন, “জাকসু নির্বাচনের গঠনতন্ত্রের ৪ ও‌ ৮ ধারা মোতাবেক অনুযায়ী অনিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভোটার বা প্রার্থী হতে পারেন না। তাই তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে।”

নির্বাচনী গঠনতন্ত্রের ৪ ধারায় বলা আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়মিত ও বৈধ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-সংসদের সদস্য বলে গণ্য হবেন। কেবল তারাই ভোটার বলে বিবেচিত হবেন এবং শিক্ষার্থী সংসদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

এক্ষেত্রে শর্তাবলি হচ্ছে, যে সকল শিক্ষার্থী স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ৬ (৪+২) বছর অথবা স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ২ (১+১) বছর ধরে অধ্যয়ন করছেন, কেবল সেসব শিক্ষার্থীর নাম জাকসু ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত এমফিল, পিএইচডি, উইকেন্ড ও ইভিনিং প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ব্যাচের অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নাম জাকসুর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে না।

অন্যদিকে, গঠনতন্ত্রের ৮ ধারায় উল্লেখ আছে, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করা সাপেক্ষে সংসদে ও যেকোনো নিয়মিত সদস্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদান করতে পারবে।

এ ঘটনার পর শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় এক সংবাদ সম্মেলনে অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিল প্রজ্ঞাপন সম্পূর্ণ অবৈধ ও নিয়মবহির্ভূত দাবি করে প্রার্থিতা ফেরত চেয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত‘সম্প্রীতির ঐক্য’ প্যানেল।

ঢাকা/আহসান/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অমর ত য র য় র প গঠনতন ত র র ৪ স প ট ম বর প রক শ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ