বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখার মুখ্য সংগঠক মো. হাসিবুল ইসলাম পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান। সেখানে তিনি বলেছেন, গত ১৯ আগস্ট তিনি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আহ্বায়কের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন৷

গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরিচিত। ডাকসুতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে হাসিবুল ইসলামকে প্রার্থী করেছিল গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ-সমর্থিত ‘বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ’। কিন্তু প্যানেল ঘোষণার তিন দিনের মাথায় ‘বিদ্রোহ’ করে বসেন হাসিবুল। তিনি সহসাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।

হাসিবুল ইসলাম ফেসবুক পোস্টে  লেখেন, ‘আমার দায়িত্বকালীন সময়ে আমি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও প্রচেষ্টা দিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংগঠনিক কার্যক্রম ও শিক্ষার্থীবান্ধব উদ্যোগগুলো পরিচালনার চেষ্টা করেছি। সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনকালে আমার কোনো ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকলে, তা সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, এই প্রত্যাশা করি।’

পোস্টে আরও লেখেন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ তাঁর কাছে শুধু একটি সংগঠন নয়; বরং আবেগ ও অনুভূতির নাম। তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, ভবিষ্যতেও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ শিক্ষার্থীদের আস্থা, বিশ্বাস ও ভরসার জায়গা হয়ে থাকবে।’

হাসিব লেখেন, ‘সত্য আর ন্যায়ের মিছিলে আমি সব সময় থাকতে ওয়াদাবদ্ধ। গণ-অভ্যুত্থানের বৈপ্লবিক রূপান্তর নিশ্চিতে রাজপথের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে। জুলাইয়ে দেশ ও জনতার প্রতি যে কমিটমেন্ট গড়ে উঠেছিল, তা বাস্তবায়নে সামনে আরেও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।’

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের একাংশের উদ্যোগে গত ফেব্রুয়ারিতে আত্মপ্রকাশ করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। এবারের ডাকসু নির্বাচনে তাদের প্যানেলের নাম বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ। কিন্তু প্যানেলের বাইরে এজিএস পদে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন সংগঠনটির চার নেতা। একইভাবে সম্পাদকীয় পদেও সংগঠনটির অন্তত চারজন নেতা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হয়েছেন। এ ছাড়া সদস্য পদে সংগঠনের প্যানেলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করেন তিনজন।

আরও পড়ুনডাকসু নির্বাচন: বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী, ক্যাম্পাসে আলোচনা ২৮ আগস্ট ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনের বিধিমালা প্রণয়নে প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে বলে অভিযোগ করেছে শাখা ছাত্রদল। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ অভিযোগ তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

ইডিএস মাস্টার্স ফেলোশিপ পেলেন ঢাবি শিক্ষার্থী

সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে  মাদকবিরোধী কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে: জবি উপাচার্য

লিখিত বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা ছিল প্রশাসন একটি আধুনিক, যুগোপযোগী ও বাস্তবসম্মত জকসু নীতিমালা প্রণয়ন করবেন। কিন্তু আমরা দেখেছি, প্রশাসন একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে, যা হতাশাজনক।”

তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবার জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আমরা চাই এটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হোক—যাতে জকসু শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচনের মুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়, কোনো দলীয় প্রভাবের শিকার না হয়।”

তিনি আরো বলেন, “জকসুর মেয়াদ ও দায়িত্বের ক্ষেত্র নির্দিষ্ট ও বাস্তবসম্মত করা, সদস্যপদের যোগ্যতা সহজ করা এবং সংবিধানে শিক্ষার্থীদের কল্যাণমূলক কার্যক্রমে গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষমতা শুধু সহ-সভাপতির মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সাধারণ সম্পাদক ও সহসাধারণ সম্পাদককেও যুক্ত করতে হবে।”

সংগঠনটি জকসুর কাঠামোতে নতুন ১০টি পদ সংযোজনের প্রস্তাব করেছে তারা। প্রস্তাবিত পদগুলো হলো— বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীবিষয়ক সম্পাদক, ছাত্রীকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক (শুধু নারীদের জন্য), দক্ষতা উন্নয়ন (ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট) সম্পাদক, ধর্ম ও সম্প্রীতি সম্পাদক, মিডিয়া ও যোগাযোগ সম্পাদক, দফতর সম্পাদক, বিতর্ক সম্পাদক, স্বাস্থ্য সম্পাদক, পরিবেশ সম্পাদক, সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পাদক এবং কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক।

এর আগে, ছাত্রদলের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক এবং একটি সদস্য পদ জকসু বিধিমালায় সংযোজন করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই যোগ্য। তবে এখনো প্যানেল নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়নি। নির্বাচনে অধিক গ্রহণযোগ্য প্রার্থীদের নিয়েই প্যানেল প্রকাশ করা হবে।”

তিনি বলেন, “আমরা এমফিল ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছিলাম, কিন্তু তা রাখা হয়নি। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ থাকলেও জকসুতে তা নেই। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্টদের বিচার না হওয়াটা প্রশাসনের ব্যর্থতা।”

সংবাদ সম্মেলনে শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, আহ্বায়ক সদস্যসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এনসিপির জাতীয় ছাত্রশক্তির কমিটি ঘোষণা, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে জাহিদ–বাকের
  • জকসুতে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে তাড়াহুড়ো করেছে প্রশাসন: ছাত্রদল