নাটোর কারাগারের জেলার শেখ মো. রাসেলকে সপরিবার হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে নাটোর সদর থানায় তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জেলার শেখ মো. রাসেল বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে ভারতের একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত ফোনে কল আসে। ফোনে ওই ব্যক্তি নিজেকে নাটোর-২ আসনের সাবেক এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল বলে পরিচয় দেন। কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে আটক থাকা মো.

রাশিদুল ইসলাম কোয়েল তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি বলে তিনি জানান এবং তাঁর জামিন বিষয়ে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা বা পুলিশ কর্মকর্তাকে না জানানোর নির্দেশ দেন। তা না হলে ‘সমস্যা হবে’ বলে হুমকি দেওয়া হয়। গতকাল বুধবার বিকেলে রাশিদুল ইসলাম জামিনে মুক্তি পেলেও কুষ্টিয়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁকে পুনরায় গ্রেপ্তার করে।

শেখ মো. রাসেল আরও বলেন, গতকাল রাতে তাঁর সরকারি ফোনে আবারও একটি হুমকিমূলক বার্তা আসে। বার্তায় লেখা ছিল ‘আপনি যে অন্যায় কাজটি করলেন, আল্লাহ যদি আমাকে বাঁচিয়ে রাখেন, মনে রাখবেন, আপনার বউসহ পুরো পরিবারকে কীভাবে বাঁচাবেন, রক্ষা করবেন, সেটা ঠিক করে রাখবেন।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে আমি ও আমার পরিবার আতঙ্কে আছি। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে থানায় জিডি করেছি।’

নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ঝালকাঠি পাক হানাদার মুক্ত দিবস আজ 

আজ ৮ ডিসেম্বর, ঝালকাঠি পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এদিন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তীব্র আক্রমণের মুখে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা ঝালকাঠি শহর থেকে পালিয়ে যায়। বিজয়ীর বেশে মুক্তিযোদ্ধারা ঝালকাঠি শহরে প্রবেশ করেন। সর্বত্র আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন স্বাধীনতাকামী জনতা। পাশাপাশি শুরু হয় বিভিন্ন গণকবর আর বধ্যভূমিতে হারানো স্বজনের লাশ খোঁজার পালা। 

১৯৭১ সালের ২৭ এপ্রিল ভারী কামান আর মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ করে পাকিস্তানি বাহিনী ঝালকাঠি শহর দখলে নেয়। পাক বাহিনী তাদের এ দেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আল শামসের সহায়তায় ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা জুড়ে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগসহ নারকীয় নির্যাতন চালায়। 

আরো পড়ুন:

আজ গোপালগঞ্জ মুক্ত দিবস

আজ শত্রুমুক্ত ফেনীতে প্রথম উড়েছিল লাল সবুজের পতাকা

বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানান, জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাসহ নিরীহ বাঙালিদের ধরে এনে পালবাড়ী টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন চালাতো পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা। পরে সুগন্ধা তীরবর্তী পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করতো তাদের। জেলার বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা ও বাঙালিদের হত্যা করে মাটি চাপা দেয় পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসররা। 

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণের মুখে টিকতে না পেরে ৭ ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠি শহরে কারফিউ জারি করে পাকবাহিনী। পরে তারা ঝালকাঠি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ৮ ডিসেম্বর স্থানীয়রা ঝালকাঠিকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করে। 

একইদিন পাক হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠির বর্তমান নলছিটি উপজেলা। নলছিটি থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা সেকান্দার আলী মিয়ার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন।

এর আগে, ঝালকাঠির রাজাপুর পহানাদার মুক্ত হয়। বরিশাল অঞ্চলে সর্বপ্রথম হানাদার মুক্ত হয় রাজাপুর থানা। মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালের ২৩ নভেম্বর বরিশাল অঞ্চলের মধ্যে সর্বপ্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয় রাজাপুরে। 

বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল সাহা বলেন, ‍‍“এ অঞ্চলে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন আব্দুর রাজ্জাক ও হোসেন আলী নামে দুই মুক্তিযোদ্ধা। আহত হন কমপক্ষে ২০ জন । ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ক্যাম্পে আক্রমন চালায়। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি গুলি। রাতভর যুদ্ধের পরে হানাদার বাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।” 

বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যবান সেন বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে ৯ নম্বর সাব সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর। কানুদাসকাঠিতে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটি তৈরি করেন। রাজাপুর থানায় সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হলে তিনিও এ যুদ্ধে অংশ নেন এবং সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য শাহজাহান ওমর বীর উত্তম খেতাবে ভূষিত হন।”

ঢাকা/অলোক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ