তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার নতুন ঘর
Published: 29th, October 2025 GMT
প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার জন্য শুরু হয়েছে ঘর নির্মাণের কাজ। তার নড়বড়ে মাটির ঘরটি ভেঙে আধাপাকা ঘর নির্মাণ করছে সাইলেন্ট হ্যান্ডস নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
নতুন ঘর পাওয়ার আনন্দে আপ্লুত ৭৮ বছর বয়সী এই নারী বলেন, “এখন আর কোনো চিন্তা বা হতাশা নেই। নতুন ঘরে আরাম করে ঘুমাতে পারব।”
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ৭ দাবিতে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের অবস্থান কর্মসূচি
চার বছর ধরে বন্ধ দৃষ্টিহীনদের শিক্ষালয়
গত ২৭ অক্টোবর ‘ঝুপড়ি ঘরে দুর্বিষহ জীবন কাটছে প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার’ শিরোনামে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজপোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি নজরে আসে উপজেলা প্রশাসন ও সাইলেন্ট হ্যান্ডস নামে সংগঠনটির। এরই মধ্যে ইউএনও প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার বাড়িতে গিয়ে চাল-ডালসহ শুকনো খাবার দিয়ে এসেছেন।
মেহেরুন নেছা দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে গ্রামটিতে গিয়ে দেখে যায়, মেহেরুন নেছার নির্জন নড়বড়ে মাটির ঘরটি আর নেই। সেই স্থানে নির্মাণ হচ্ছে একটি আধাপাকা বারান্দাসহ ঘর। মেঝেসহ ঘরের অর্ধেকটা ইট বালু আর সিমেন্টের তৈরি। মজবুত করে তৈরি করা হয়েছে সিমেন্টের খুঁটি। বাঁশ আর কাঠের বাটার ওপরে দেওয়া হয়েছে টিনের ছাউনি। পাশে তৈরি হচ্ছে মোটা টিনের বেড়া।
নির্মাণাধীন ঘরের বারান্দায় বসে আছেন মেহেরুন নেছা
নতুন ঘর পেয়ে নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মেহেরুন নেছা বলেন, “আমি খুবই খুশি। আমার জন্য নতুন ঘর তৈরি হচ্ছে। আমার আর কোন কষ্ট হবে না। যারা আমার এই উপকার করলেন, আল্লাহ তাদের ভাল করবে।”
গ্রামের বাসিন্দা লাল মিয়া, আবু সাইদ, সোহেল রানা জানান, এই প্রতিবন্ধী মানুষটি অনেক অসহায়। তার স্বামী, ছেলে-মেয়ে কেউ নেই। অনেক কষ্ট করে চলাফেরা করেন। তার আগের ঘরটি বসবাসের মতো ছিলো না। ঝড়-বৃষ্টিতে তার খুব কষ্ট হতো। সাংবাদিকরা নিউজ করায় তার ঘরটি ভেঙে নতুন করে ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। গ্রামবাসী সবাই অনেক খুশি।
এ বিষয়ে ঘর নির্মাণের জায়গায় উপস্থিত সাইলেন্ট হ্যান্ডস সংগঠনের প্রতিনিধি কথা বলতে রাজি হননি।
সিংড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো.
তিনি বলেন, “মেহেরুন নেছার ঘরটির অবস্থা অনেক খারাপ ছিল। তাকে একটা সুন্দর বাসস্থান করে দেওয়ার চেষ্টা ছিলো। তাকে নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে মিডিয়ায় সংবাদ হয়েছে। এই সংবাদ অনেক কাজে লেগেছে।”
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি মেহেরুন নেছার বাড়িতে গিয়ে চাল-ডাল সহ শুকনো খাবার দিয়ে এসেছি। তার প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড আছে। একটি সংস্থা তার মাটির ঘরটি ভেঙে নতুন ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সবসময় তাকে সাহায্য সহযোগিতা করছেন। মেহেরুন নেছাকে আমরা সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করব।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঘর ঘর ন র ম ণ র ঘরট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয়ে ইউএনওকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ, পরে নিজেই বিপাকে
সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার উদ্দেশে সকালে কক্সবাজারের নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাটে হাজির হয় ১১ পর্যটকের একটি দল। তবে ঘাটে পৌঁছানোর আগেই নির্ধারিত জাহাজ ছেড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন দলের সদস্যরা। একপর্যায়ে তাঁরা বাগ্বিতণ্ডায় জড়ান জাহাজ কর্তৃপক্ষ ও ঘাটে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে। দলের একজন নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এরপর ঘাটে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন ইউএনওকে গ্রেপ্তার করতে। যদিও বিষয়টি নিয়ে পরে বিপাকে পড়তে হয় ওই পর্যটক দলের সদস্যদের। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, বাঁকখালী নদীর জোয়ার–ভাটা একেক সময় একেক রকম। জোয়ার–ভাটা বিবেচনায় নিয়ে জাহাজ ছাড়ার সময় নির্ধারণ করা হয়। ইউএনওর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা ওই পর্যটক ঘাটে এসে জাহাজ দেখতে না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়েছেন।
হোসাইন ইসলাম বাহাদুর আরও বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা পরিচয় দেওয়া ওই ব্যক্তির নাম ইব্রাহিম। তিনি হয়তো ঘাটে থাকা ইউএনওকে চিনতে পারেননি। সাধারণ নারী মনে করে গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়েছেন। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তিনি ইউএনওর কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। পরে আরেকটি জাহাজে পর্যটকদের ওই দল সেন্ট মার্টিনে যায়।
জানতে চাইলে কক্সবাজার সদরের ইউএনও তানজিলা তাসনিম বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কেন জাহাজ ছেড়ে গেছে, এ বিষয়টি নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন ইব্রাহিম নামের ওই ব্যক্তি। এ সময় নিজেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দাবি করে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশ সদস্যকে বলেন, আমাকে গ্রেপ্তার করতে। এ ঘটনার ভিডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হলেও এভাবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে বলার এখতিয়ার রাখেন না।’
ইউএনও বলেন, পর্যটকদের অসুবিধার কথা বিবেচনা করে তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নুনিয়াছটায় বিআইডব্লিউটিএর জেটিঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল সাতটায় সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ ছাড়ে। কয়েকটি জাহাজে দৈনিক দুই হাজার পর্যটকের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের সুযোগ রাখা হয়। জাহাজে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন যাতে করা না হয়, সে বিষয়টি তদারকি করে ইউএনওর নেতৃত্বে গঠিত একটি কমিটি।
১ ডিসেম্বর কক্সবাজার–সেন্ট মার্টিন রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে রাত্রী যাপনের সুযোগও রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার ঘোষিত ১২টি নির্দেশনা মেনে চলতে হচ্ছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দ্বীপটি ভ্রমণের সুযোগ থাকবে।