রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় পদ্মা নদীর পাড় ও পানির মধ্যে থেকে গ্যাস নির্গত হচ্ছে। সেখানে প্রায় অর্ধশত বুদ্বুদ দেখা যাচ্ছে। দিয়াশলাই দিয়ে আগুন দিলে বালুতেই আগুন জ্বলছে। এ নিয়ে ওই এলাকায় জনমনে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী ঠাকুরঘাট এলাকায় এমন বুদ্বুদ দেখতে পান স্থানীয়রা। গভীর রাত পর্যন্ত উৎসুক মানুষ সেখানে ভিড় করেন। বুধবার সকাল থেকেও আশপাশের গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা নদীপাড়ে ভিড় করছেন।

খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহম্মেদ। বুধবার দুপুরে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর পানি ও পাড়ে প্রায় অর্ধশত স্থান থেকে বুদ্বুদ উঠছে। এর মধ্যে বালুর বুদ্বুদগুলো থেকে গ্যাস বের হওয়ার শব্দও পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো.

শিহাব জানিয়েছেন, সম্প্রতি নদীর এই স্থানটিতেই নৌকা ডুবে তিনজনের মৃত্যু হয়। লাশ উদ্ধারের জন্য সেদিন ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল এসেছিল। তারা জানিয়েছিলেন, পানিতে নামতে গেলে তাদের কাছে মনে হচ্ছে যে ওপরের দিকেই চলে আসছেন। এখন তারা ধারণা করছেন, সেটি গ্যাসের চাপ ছিল।

ওই এলাকার আরেক বাসিন্দা পিয়াস উদ্দিন বলেছেন, কয়েকদিন ধরে নদীর পানি কমছে। গতকাল এলাকার লোকজন এসব বুদ্বুদ দেখতে পান। তার পর থেকেই উৎসুক মানুষের ভিড় লেগে আছে। গভীর রাত পর্যন্ত লোকজন আগুন জ্বালিয়ে গ্যাসের উপস্থিতি দেখেছেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের গোদাগাড়ী স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার জমির উদ্দিন বলেছেন, “এখানে অসংখ্য বুদ্বুদ দেখা যাচ্ছে। গ্যাসের কারণে এটি হচ্ছে কি না, তা আমরা জানি না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তারা এসে দেখবেন।”

গোদাগাড়ীর ইউএনও ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছেন, সকালে প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে বিষয়টি তাকে জানানো হয়। তিনি ফায়ার সার্ভিসকে ঘটনাস্থলে পাঠান। তারা এসে একটি রিপোর্ট দেবেন। গ্যাসের উপস্থিতি আছে কি না, তা জানতে পরীক্ষার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঈশ্বরগঞ্জের পিআইওর বিরুদ্ধে প্রতি প্রকল্পে ২৫% ঘুষ আদায়ের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানদের

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে প্রতিটি প্রকল্পের বিপরীতে ২৫ শতাংশ নগদ টাকা ঘুষ আদায়সহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানরা। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার উপজেলার ১১টি ইউপির চেয়ারম্যানরা লিখিতভাবে ওই অভিযোগ করেন। পরে ঈশ্বরগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠন করেন সরিষা ইউপি চেয়ারম্যান একরাম হোসেন ভুঁইয়া।

লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঈশ্বরগঞ্জের পিআইও মোহাম্মদ রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রতারণা ও হয়রানি করছেন। তিনি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) ও গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা-কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় গৃহীত প্রকল্পগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়নের পরও তাঁদের বিল দিতে গড়িমসি করেন। পরে ঘুষ দাবি করলে তাঁরাসহ (ইউপি চেয়ারম্যানরা) প্রকল্প সভাপতিরা তাঁকে প্রতিটি প্রকল্পের বিপরীতে ২৫ শতাংশ নগদ অর্থ ঘুষ দিতে বাধ্য হন। এ ছাড়া প্রকল্পগুলোতে ভ্যাট ও আয়কর বাধ্যতামূলক না থাকলেও সেটার জন্য তিনি প্রতিটি প্রকল্পের বিল থেকে ১৫ শতাংশ (১০ শতাংশ ভ্যাট ও ৫ শতাংশ আয়কর) টাকা কেটে রেখে নিজে আত্মসাৎ করেছেন। উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছেন, ওই টাকা তিনি জমা দেননি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, কোনো প্রকল্পের বিল জমা দেওয়ার সময় তিনি (পিআইও) একটি নির্দিষ্ট হারে বিল-ভাউচার ও মাস্টাররোল সমন্বয়ের নাম করে প্রতিটি প্রকল্প থেকে তিন হাজার টাকা হারে আদায় করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া তাঁর আচার-আচরণ কর্মকর্তাসুলভ নয়। তিনি সর্বদা উত্তেজিত অবস্থায় থাকেন এবং ইউপি চেয়ারম্যানদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন; যা একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে অবমাননাকর। এমতাবস্থায় পিআইও রেজাউল করিমের দুর্নীতি, অনিয়ম, প্রতারণা ও হয়রানির বিষয়ে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু হানিফা, উচাখিলা ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হাসান খান, আঠারবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান জুবের আলম কবির, মগটুলা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শিহাব উদ্দিন আকন্দ, মাইজবাগ ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পিআইও মোহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘টিআর-কাবিখার বরাদ্দের বিষয়ে আমাকে বাদ দিয়ে চেয়ারম্যানদের নিয়ে ইউএনও (উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) সভা করে তালিকা তৈরি করে গত বুধবার আমাকে স্বাক্ষর করতে বলেন। নীতিমালা অনুযায়ী মিটিং করতে হবে। কিন্তু মিটিং না করেই আমাকে স্বাক্ষর করতে চাপ দিলে আমি দুই দিন সময় চাই প্রকল্পগুলোর বাস্তবতা দেখার জন্য। এতে ইউএনও আমার ওপর গরম হয়ে যান। জেলা প্রশাসকের কাছেও অভিযোগ করেন ইউএনও। সেখানে আমাকে ডাকা হলে জেলা প্রশাসকের কাছেও আমি দুই দিন সময় নিয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘তালিকা অনুযায়ী মাঠে খোঁজ করে দেখি, অনেক ভুয়া প্রকল্প রয়েছে, ত্রুটিবিচ্যুতি রয়েছে। তখন আমি জানিয়েছি, এসব প্রকল্প চলবে না। তখন চেয়ারম্যানরা কিছু প্রকল্প পরিবর্তনও করেন। আমার অপরাধ এতটুকুই।’ ২৫ শতাংশ ঘুষ আদায়ের বিষয়ে বলেন, ‘আমার নামে যা কিছু বলতাছে, তা ভুয়া ও মিথ্যা। আমি এমন কিছু করিনি।’

অন্যদিকে পিআইওর দাবি মিথ্যা ও বানোয়াট উল্লেখ করে ঈশ্বরগঞ্জের ইউএনও সানজিদা রহমান বলেন, প্রকল্পগুলোর ৮০ ভাগ চেয়ারম্যানরা দিয়েছিলেন। বাকি ২০ ভাগ তিনি দিয়েছিলেন। জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তাও এসেছিলেন। কোনো ভুয়া প্রকল্প পাননি তিনি, সবই ঠিক আছে। চেয়ারম্যানরা দাবি করছেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভ্যাট-আয়করের নাম করে টাকা নেওয়া হয়েছে। ওই ঘটনার সঙ্গে বর্তমানের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘আশ্রয় লিয়্যাছি বাঁশঝাড়ের তলে, মশার কামড়ে ঘুম আসে না’
  • তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধী মেহেরুন নেছার নতুন ঘর
  • ঈশ্বরগঞ্জের পিআইওর বিরুদ্ধে প্রতি প্রকল্পে ২৫% ঘুষ আদায়ের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যানদের
  • কেশবপুরে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে নাগরিক সনদে জাল সইয়ের অভিযোগ, নোটিশ
  • লৌহজংয়ের পদ্মা পাড়ে কুমির আতঙ্ক