খবরটা অনানুষ্ঠানিকভাবে আগেই পেয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এবার জেনেছে আনুষ্ঠানিকভাবে। সে খবরটাই বিসিবি সংবাদবিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিশ্চিত করল আজ—চেন্নাইয়ে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি সাকিব আল হাসান। যার অর্থ, বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলিং নিষিদ্ধই থাকছে।

খবরটি এমন সময়ে এল, যখন আইসিসির কাছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির চূড়ান্ত দল জমা দেওয়ার আর ১ দিন বাকি। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে সাকিবের সে দলে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।

সাকিব এ নিয়ে দ্বিতীয়বার বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষায় ফেল করলেন। গত সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডে কাউন্টি ক্রিকেট খেলার সময় তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন আম্পায়াররা। এ জন্য ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বার্মিংহামের লাফবোরো ইউনিভার্সিটিতে আইসিসি অনুমোদিত কেন্দ্রে অ্যাকশনের পরীক্ষা দেন সাকিব। পরে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) জানায়, সাকিব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেননি। আর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায় ইংল্যান্ডের ঘরোয়া তিনি বোলিং করতে পারবেন না।

আইসিসি বিধি অনুযায়ী সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও বোলিংয়ের অযোগ্য হয়ে পড়েন। বোলিং নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে গত ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে আবার পরীক্ষা দেন সাকিব। আজ বিসিবির সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শ্রী রমাচন্দ্র সেন্টার ফর স্পোর্টস সায়েন্সে দেওয়া স্বতন্ত্র পুনর্মূল্যায়ন পরীক্ষায়ও সাকিব উত্তীর্ণ হতে পারেননি। যার ফলে ইসিবির দেওয়া পূর্বের রায় বহাল থাকছে।

বোলিংয়ের অনুমতি পেতে হলে সাকিবকে পরীক্ষায় পাস করতে হবে। সেই পরীক্ষা চাইলে তিনি আরও দিতে পারবেন। তবে একবার নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়ে বোলিংয়ে ফেরার পর যদি আবার প্রশ্নবিদ্ধ হন, তাহলে পরবর্তী এক বছরের নিষিদ্ধ থাকবেন।
বিসিবি জানিয়েছে, সাকিবের বিষয়টি নিয়ে সংস্থাটি এই মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করবে না।

সাকিব বাংলাদেশ দলের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্টে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে এক হাজার গাছের চারা বিতরণ না করে খালে ফেলে দিলেন অধ্যক্ষ

রূপগঞ্জে প্রায় এক হাজার বিভিন্ন প্রকার সরকারি ফলজ গাছের চারা বিতরণ না করে খালে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ভুল ষতা স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারিভাবে বন্ধ থাকার সুযোগে শুক্রবার সকালে অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের নির্দেশে গাছের চারা গুলো খালের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। 

গাছের চারা বিতরণ না করে খালের পানিতে ফেলে দেওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বাধা দেন এবং প্রতিবাদ করেন।  চারা গুলো বিতরণ না করে ফেলে দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসনের গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন নারায়ণগঞ্জ কর্মসূচির আওতায় চলমান বৃক্ষরোপণের অংশ হিসেবে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের কৃষি প্রণোদনায় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষক এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মাঝে বিনামূল্যে এ চারা বিতরণ করা হয়।

জেলার রূপগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার গাছের চারা দিয়ে বৃক্ষরোপণের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিয়া।

নারায়ণগঞ্জ হবে সবুজে ঘেরা প্রান্ডের ড্যান্ডি হবে বিশ্বে সেরা এই শ্লোগানকে সামনে রেখে রূপগঞ্জ উপজেলার সকল ইউনিয়ন ও পৌরসভার  বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়া, শিমুল সুপারি, নারিকেল, তাল, সাজিনা, অর্জুন, নিম, কাঁঠাল, আম, বকুল ও সোনালু প্রজাতির গাছের চারা রোপনের উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম বৃক্ষরোপণের কার্যক্রম শুরু করেন। 

বৃক্ষরোপণের অংশ হিসেবে রূপগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে গত ১৫ জুলাই  প্রায় ১২'শ গাছের চারা ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। পরে ১৬ জুলাই ১২০ টি গাছের চারা রোপণ করা হয়। 

বাকি প্রায় এক হাজার গাছের চারা রোপণ বা বিতরণ না করে নষ্ট করে ফেলা হয়। সরকারিভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের সুযোগে গাছের চারা গুলো আটি করে অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের নির্দেশক্রমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান মোস্তফা মিয়া ও সুইপার জুবায়ের হোসেন সামনে থাকা খালের পানিতে ফেলতে শুরু করে।  

গাছের চারা বিতরণ না করে খালের পানিতে ফেলে দেওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় এলাকাবাসী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে বাধা দেন এবং প্রতিবাদ করেন।  

এ সময় ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দারোয়ান মোস্তফা মিয়া ও সুইপার জুবায়ের হোসেন বলেন, আমাদের অধ্যক্ষ সূরাইয়া পারবিন ম্যাডাম বলেছেন গাছের চারা গুলো নষ্ট হয়ে গেছে এগুলো ফেলে দিতে, তাই ফেলে দিয়েছি।  চারা গুলো বিতরণ না করে ফেলে দেওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের কম্পিউটার অপারেটর শামীমা সুলতানা উমা বলেন, স্কুলের পাশেই আমার টেইলার্সের দোকান রয়েছে। গাছের চারা খালের মধ্যে আটি করে ফেলে দেওয়ার সময় স্থানীয়রা আমাকে খবর দিলে আমি দারোয়ান ও সুইপারকে জিজ্ঞেস করি। তারা বলে অধ্যক্ষ ম্যাডামের নির্দেশে তারা এগুলো ফেলে দিচ্ছে। 

ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অভিযুক্ত সুরাইয়া পারবিনের সঙ্গে যোগাযোগ করার বারবার চেষ্টা করা হলেও তিনি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। 

রূপগঞ্জ উপজেলা সহকারি কৃষি কর্মকর্তা ফারিয়া আক্তার রুবি বলেন, সরকারি গাছের চারা বিতরণ না করে নষ্ট করে ফেলে দেয়ার অধিকার কারো নেই। বৃক্ষরোপণ বা বিতরণ না করতে পারলে সেগুলো আমাদের কৃষি অফিসে জমা দিবে। কিন্তু ফেলে দিয়ে অন্যায় করেছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে এটা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উল্লেখ্য,  ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সুরাইয়া পারভীনের বিরুদ্ধে সরকারি বই গোপনে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার ভুলতা স্কুল এন্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।

বই বিক্রির সময় স্থানীয়দের হাতে অধ্যক্ষ, পিকআক চালক ও চোরাই বই ক্রেতাকে আটক করা হলেও  উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূরে আলম মোটা অংকের টাকা বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।

এতে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এর আগে, অধ্যক্ষ সুরাইয়া বেগমের বিরুদ্ধে  টাকা আত্মসাৎ, কাজ না করিয়ে বিল তোলাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে।  বই বিক্রির ঘটনায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রূপগঞ্জে এক হাজার গাছের চারা বিতরণ না করে খালে ফেলে দিলেন অধ্যক্ষ