পুলিশের এক কনস্টেবলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁর নাম মোহাম্মদ সুজন হোসেন। রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছাত্র–জনতার ওপর গুলি করার ঘটনায় তাঁকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর স্থিরচিত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে।

আজ রোববার কনস্টেবল মোহাম্মদ সুজন হোসেনকে হাজির করা হলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো.

গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

আরও পড়ুনপুলিশ কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে কারাগারে পাঠালেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল৩০ অক্টোবর ২০২৪

প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানিতে অংশ নিয়ে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর বি এম সুলতান মাহমুদ বলেন, রাজধানীর চানখাঁরপুলে বোরহানউদ্দিন কলেজের পাশে গত ৫ আগস্ট সুজন হোসেনকে কখনো দাঁড়িয়ে বা কখনো শুয়ে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি করতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর স্থিরচিত্র ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়েছে। শুনানিতে সুজন হোসেনের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।

বি এম সুলতান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, সুজন হোসেনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে এখনো কোনো মামলা নেই। তবে শাহবাগ থানার একটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।

আরও পড়ুনচানখাঁরপুলে শিক্ষার্থীদের অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি, পাঁচজন গুলিবিদ্ধ১৬ জুলাই ২০২৪

শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ