ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ
Published: 12th, December 2025 GMT
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় বীর চট্টলার ছাত্র-জনতার ব্যানারে নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। একই দাবিতে রাত আটটায় দেওয়ানহাট মোড় থেকে আগ্রাবাদ পর্যন্ত মিছিল করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের চট্টগ্রাম নগর দক্ষিণ শাখা।
বীর চট্টলার ছাত্র-জনতা মিছিলে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব সাগুফতা বুশরা মিশমা, চট্টগ্রাম নগরের সমন্বয়কারী রিদুয়ান হৃদয়সহ ইনকিলাব মঞ্চ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা বলেন, ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশে এখনো সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আজ শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ২টা ২৫ মিনিটে একটি মোটরসাইকেলে দুর্বৃত্তরা আসে। মোটরসাইকেল থেকে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়।
হামলাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবিতে সন্ধ্যা ছয়টায় ২ নম্বর গেট এলাকার বিপ্লব উদ্যানে অবস্থান নেন শতাধিক ছাত্র-জনতা। পরে তাঁরা ২ নম্বর গেট মোড়ে সাময়িক সড়ক অবরোধ করেন। ১০ মিনিট পর মিছিল নিয়ে নগরের ওয়াসা মোড় এলাকার দিকে যান তাঁরা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়একই দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু)। দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় গোলচত্বরের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে থেকে আবার গোলচত্বরে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন চাকসুর সহসভাপতি (ভিপি) মো.
বিক্ষোভ মিছিলে আরও উপস্থিত ছিলেন চাকসুর বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক মো. মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়াবিষয়ক সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, নির্বাহী সদস্য সোহানুর রহমান ও সোহরাওয়ার্দী হল সংসদের সহসভাপতি মো. নিয়মিত উল্লাহ প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বব দ য নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
ওসমান হাদির ওপর গুলির ঘটনায় জেলায় জেলায় বিক্ষোভ
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও জেলায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। তাঁরা ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের পরদিনই এ ধরনের ঘটনাকে দেশের জন্য অশনিসংকেত হিসেবে দেখছেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে সেখান থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে তাঁরা জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলায় মদদদাতা শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিচারের দাবি জানান। তাঁদের ভাষ্য, হাদির ওপর হামলা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ চলার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে জুলাই হামলায় জড়িত শিক্ষকদের বিচার শেষ করার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা বিচারকার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত রেজিস্ট্রার ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে চলে আসেন এবং সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে রেজিস্ট্রার ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
বিক্ষোভ শেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বহুল আকাঙ্ক্ষিত নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার ঠিক পরের দিন আমরা দেখতে পেয়েছি জুলাই আন্দোলনের অগ্রনায়ক, ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী কণ্ঠস্বরকে আজকে দিনদুপুরে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়েছে। এই ইন্টেরিম সরকার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের বিচার করতে যে ব্যর্থ হয়েছে, সে ব্যর্থতার একটি নমুনা আজকে আমরা দেখতে পেয়েছি। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ জুলাই জাবি ক্যাম্পাসে যেসব শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী আমাদের নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, রক্তাক্ত করেছিলেন তাঁদের বিচার আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি।’
জাকসুর সমাজসেবা ও মানবসম্পদ উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক আহসান লাবিব জানান, ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। জুলাই হামলার সন্ত্রাসীদের বিচার না করা এবং দোষীদের গ্রেপ্তার না করার ফলেই এ ধরনের হামলা হচ্ছে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়বিকেল সাড়ে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল শুরু হয়। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরের তালাইমারিতে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
বিক্ষোভকারীরা মিছিলে ‘হাদির ওপর হামলা কেন, ইন্টেরিম জবাব দে’, ‘চব্বিশের হাতিয়ার গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘আবু সাঈদের অ্যাকশান, ডাইরেক্ট অ্যাকশান’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।