হাদিকে নিয়ে নাহিদের আবেগঘন পোস্ট
Published: 13th, December 2025 GMT
রাজধানীর বিজয়নগরে প্রকাশ্য দিবালোকে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন আসন্ন এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি।
তাকে নিয়ে ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি- এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
তিনি লিখেছেন, “আমাদের মাঝে ফিরে এসো ভাই। ফিরে আসুন মানুষ এবং যে আন্দোলনে আপনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। আমরা অপেক্ষা করছি। আমরা আমাদের জীবন হারাতে পারি কিন্তু আমরা জুলাই ছেড়ে দেব না।”
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেইজে এক পোস্টে জুলাই বিপ্লবে হাদির ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
পোস্টে নাহিদ ইসলাম আরো লেখেন, “হাদি ভাই, আমরা তোমাকে রক্ষা করতে পারিনি। তুমি এই দেশের জন্য দাঁড়িয়েছিলে আর আমরা তোমাকে ব্যর্থ করেছি। সম্মান ও ন্যায়বিচারের জন্য, জুলাই মাসের জন্য আপনি আপনার জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন। আমরা জুলাই প্রজন্ম একত্রিত করতে ব্যর্থ হয়েছি। তরুণরা যারা সাহসী, রাগী এবং আশাবাদী ছিল। তারা একটি ন্যায্য রাষ্ট্র চেয়েছিলেন। আমরা তাদের একসাথে রাখতে পারিনি। আমরা সময় হারিয়ে ফেলেছি।”
তিনি লেখেন, “আমরা রাজনৈতিক ভুল করেছি এবং মানুষ মূল্য পরিশোধ করেছে। জুলাইয়ে, আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করা হয়েছিল। তারা ক্ষমতা, দল বা পদের জন্য মরেনি। তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে কারণ তারা ফ্যাসিবাদকে চ্যালেঞ্জ করেছিল এবং বিশ্বাস করেছিল যে বাংলাদেশ ভিন্ন হতে পারে।”
এনসিপির আহ্বায়ক আরো লেখেন, “আমরা জুলাই থেকে দূরে যাব না। আমরা চাপের মধ্যে আছি। আমরা আহত। কিন্তু আমরা এখনও দাঁড়িয়ে আছি। আর আমরা এই সংগ্রাম চালিয়ে যাব যেন আপনার সন্তান এবং এই দেশের প্রতিটি সন্তান সম্মানের সাথে বাঁচতে পারে। আমরা আমাদের ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণ করি।”
ফেসবুক পোস্টে নাহিদ ইসলাম লেখেন, “আমরা স্বীকার করি গত দেড় বছরে ইতিহাস যা দাবি করেছে তা আমরা করিনি। কিন্তু পশ্চাদপসরণ একটি বিকল্প নয়। আপনি যেমন বলেছেন, আমরা আমাদের শত্রুদের প্রতিও ন্যায় বিচার করব। তবে ফ্যাসিবাদীদের ক্ষমা হবে না। যারা এই দেশকে ধ্বংস করেছে, যারা দমনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে এবং যারা আমাদের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছে তাদের জন্য এক ইঞ্চিও ক্ষমা নয়।”
ঢাকা/রায়হান/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
আরও বাড়বে সোনার দাম, ২০২৬ সালে বিশ্ববাজারে উঠতে পারে ৪,৯০০ ডলার
এক বছর ধরে বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ছেই। চলতি বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গিয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে। বিভিন্ন পূর্বাভাসে জানা গেছে, ২০২৬ সালেও সেই ধারা বজায় থাকবে।
সোনার দাম যখন আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেল, তখনই অনেক সংস্থা পূর্বাভাস দেয়, সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। সর্বশেষ গোল্ডম্যান স্যাকসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ ভাগে বিশ্ববাজারে সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৯০০ ডলারে উঠে যেতে পারে।
গত দুই মাসে বিভিন্ন বৈশ্বিক সংস্থা সোনার দাম নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছে। এসব পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে, আগামী বছর সোনার দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ৫০০ ডলার থেকে ৪ হাজার ৯০০ ডলারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।
গোল্ডম্যান স্যাকস বাজার বিশ্লেষণ করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, বর্তমানে সোনায় যে পরিমাণ বিনিয়োগ হওয়ার কথা, সে পরিমাণ হচ্ছে না। সে কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনায় আরও বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছেন। বিষয়টি হলো এখন বিনিয়োগকারীদের সোনা ধরে ধরে রাখার প্রবণতা কম বলে ভবিষ্যতে হঠাৎ যদি বিনিয়োগ বেড়ে যায়, তাহলে সোনার দাম হুট করে অনেকটা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে সোনার দাম আরও বৃদ্ধির ক্ষেত্রে যে চাহিদা অনেকটা বাড়তে হবে তা নয়; বরং বিনিয়োগকারীরা স্টকে বিনিয়োগের পাশাপাশি কিছু পরিমাণে সোনা কিনলেই এর দাম অনেকটা বেড়ে যাবে। ফলে বিনিয়োগ যত বেশি বাড়বে, সোনার দাম তার চেয়েও বেশি হারে বাড়বে।
চলতি বছর ইতিমধ্যে সোনার দাম ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গোল্ডম্যান স্যাকস মনে করছে, চলতি বছর সোনার দাম অতটা বাড়বে না। তবে যে দুটি কারণে এ বছর সোনার দাম বেড়েছে, সেই কারণ দূর হবে না।
প্রথমত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সোনা কেনার ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০২২ সালে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সম্পদ পশ্চিমারা জব্দ করার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক বুঝে যায়, এখন সোনায় বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলও মাস খানিক আগে সে কথা বলেছে।
ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) সেন্ট্রাল ব্যাংক গোল্ড রিজার্ভ সার্ভে ২০২৫-এ বলা হয়েছে, ৪৩ শতাংশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সোনার ভান্ডার বৃদ্ধি করতে আগ্রহী।
দ্বিতীয়ত, ফেডারেল রিজার্ভ এখন নীতি সুদ কমাচ্ছে। ডিসেম্বর মাসেও নীতি সুদহার কমানো হয়েছে। বিশ্লেষকেরা ধারণা করছেন, ২০২৬ সালে আরও ৭৫ ভিত্তি পয়েন্ট হারে নীতি সুদহার কমানো হতে পারে। বিনিয়োগকারীদের সোনার দিকে ঝুঁকে পড়ার যেসব কারণ অতীতে ছিল, সেগুলো এখনো আছে।
ভূরাজনীতিতে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম খুঁজছেন। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে বাণিজ্যকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তাতে বিনিয়োগকারীরা ডলারভিত্তিক বন্ডের চেয়ে সোনায় বিনিয়োগ করা নিরাপদ মনে করছেন।
সোনার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এর দাম সাধারণত কমে না। গোল্ড প্রাইস ডট অর্গের তথ্যানুসারে, গত ২০ বছরে সোনার দাম বেড়েছে ৭১৮ শতাংশ। গত পাঁচ বছরে বেড়েছে ১৩৪ শতাংশ; এক বছরে ৬১ দশমিক ৬৪ শতাংশ।