হৃদ্রোগীদের জন্য সুখবর, চমেক হাসপাতালে নতুন ক্যাথল্যাব
Published: 13th, December 2025 GMT
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগে আরেকটি নতুন ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তবে এটি পুরোপুরি সেবার জন্য চালু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। গত মে মাসে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অব্যবহৃত দুটি ক্যাথল্যাবের মধ্য থেকে একটি চট্টগ্রামে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের হৃদ্রোগ বিভাগে বর্তমানে ১৬০ শয্যার বিপরীতে ২৫০ জন পর্যন্ত রোগী থাকেন। একটিমাত্র ক্যাথল্যাব দিয়ে দিনে গড়ে ৮টি অ্যানজিওগ্রাম, ২-৩টি রিং পরানো হয়। এ ছাড়া সপ্তাহে এক থেকে দুটি পেসমেকার লাগানো হয়। হাসপাতালে দুটি ক্যাথল্যাব থাকলেও ২০২২ সাল থেকে একটি নষ্ট। ফলে একটিমাত্র ক্যাথল্যাব দিয়েই রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছিল। অতিরিক্ত চাপের কারণে গত সেপ্টেম্বরে ওই ক্যাথল্যাবেও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ কারণে সেটিও বন্ধ ছিল পাঁচ দিন।
বর্তমানে সচল ক্যাথল্যাবটির মেরামতের মেয়াদ ২০২৭ পর্যন্ত রয়েছে। কিন্তু এটি এখনই পর্যাপ্ত সেবা দিয়ে ফেলেছে বলে চিকিৎসকেরা জানান। এর আগে ২০২২ সালে একটি ক্যাথল্যাব নষ্ট হয়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ায় ওই ক্যাথল্যাব মেরামতে তিন কোটি টাকার মতো দরকার। তাই মেরামতে না গিয়ে বিকল্প হিসেবে মানিকগঞ্জের অব্যবহৃত ক্যাথল্যাব আনার সিদ্ধান্ত হয়। এটি স্থাপনের কারণে রোগীদের সেবা বাড়বে বলে আশাবাদ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে গতকাল এমবিবিএস, বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা ও হাসপাতাল পরিদর্শন এবং ক্যাথল্যাবের উদ্বোধন শেষে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা–সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় যোগ দেন উপদেষ্টা। হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো.
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেন, ‘আমাদের হাতে সময় বেশি দিন নেই, ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নেব। এই স্বল্প সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। চট্টগ্রামে নার্সিং পড়ার আগ্রহ কম। নার্সিং পেশাকে অসম্মানজনক মনে করা হয়। যার কারণে দেশের অন্যান্য বিভাগ থেকে চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোয় নার্স নিয়োগ দিতে হয়।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ড ক ল কল জ
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ‘আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন’ পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে থাকা শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বেসরকারি এই প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে দেখিয়ে আবাসন বৃত্তি থেকে তাঁদের বঞ্চিত করছে, এমন অভিযোগে আজ বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে অবস্থান নেন।
এর আগে দুপুর নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণ ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। তাঁদের স্লোগানের মধ্যে ছিল: ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, ভুজুংভাজুং ছেড়ে দে’, ‘এক দুই তিন চার, বৃত্তি আমার অধিকার’ এবং ‘আস–সুন্নাহে বৃত্তি দে, নইলে গদি ছেড়ে দে’।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি নীতিমালায় আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্পকে ‘হল’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে তাঁরা আবাসন বৃত্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, প্রকল্পটি বেসরকারি হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব হল না হওয়ায় তাঁদের বৃত্তি থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুল বাশার সুমন বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য কোনো হল নেই। আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের মেধাবী প্রজেক্ট নামের একটি প্রকল্প আমাদের জন্য করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যত কোনো হল নয়।’
শিক্ষার্থী সুমন আরও বলেন, ‘বৃত্তি নীতিমালায় সুকৌশলে আস–সুন্নাহ প্রজেক্টকে হল হিসেবে উপস্থাপন করে বৃত্তি থেকে আমাদের বাদ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা এ পাঁয়তারাকে রুখে দিতে প্রতিবাদ করছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের মেধাবী প্রকল্প থেকে যখন আগামী জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে যাবে, তখন তাদের আশ্রয়স্থল কোথায়? আমাদের দাবি মানা না হলে আমরা আরও কঠিন আন্দোলন করব।’
শিক্ষার্থীরা প্রায় বিকেল চারটা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটক অবরোধ করে থাকেন। পরে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত আবাসন প্রকল্পে ফিরে যান।
জানা যায়, আস–সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পরিচালিত মেধাবী প্রকল্পের আওতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩, ২০২৩-২৪ এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থীকে আবাসন সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে থাকেন। এই প্রকল্পে থাকা–খাওয়ার ব্যবস্থার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা রয়েছে।