মাত্র তিনটি কবিতার বই লিখে যিনি বাঙালির হৃদয়ে তুমুল আলোড়ন তুলে দিতে পেরেছেন তিনি হেলাল হাফিজ। আজ এই কবির মৃত্যুদিন। ২০২৪ সালের ১৩ ডিসেম্বরে মারা যান হেলাল হাফিজ। ৭৬ বছর বয়সেও কবি ছিলেন নিঃসঙ্গ। একটি হোস্টেলে থাকতেন তিনি। 

জীবনের শেষ দিকে এসে অনুভব করেছিলেন, ‘‘কেউ পাশে থাকা অনেক দরকার’’। প্রেসক্লাবেই কেটে গেছে কবির জীবনের সোনালি সময়। একটি সাক্ষাৎকারে কবি বলেছিলেন, ‘‘সারা দিন প্রেসক্লাবে কতজন দেখা করতে আসে, এভাবে দিন কেটে যায়। প্রেসক্লাব আমার সেকেন্ড হোম নেই আর, ফার্স্ট হোম’’। দিন শেষ হলে রাতে হোটেলে ফিরতেন হেলাল হাফিজ। আর তখনই নাকি একজন সঙ্গীর অভাব খুব বোধ করতেন।  

আরো পড়ুন:

সিকদার আমিনুল হকের কবিতায় প্রেম ও নারী

রেজাউদ্দিন স্টালিনের কবিতা: দশক ছাড়িয়ে সমগ্রতার ঘণ্টাধ্বনি

কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। এর ১৭ বছর আগে তার কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ ব্যাপক আলোড়ন তৈরি করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় ১৯৬৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের সময় হেলাল হাফিজের লেখা ওই কবিতার প্রথম দুইটি লাইন ‘‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়; এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’’ রাজনৈতিক স্লোগানে পরিণত হয়। এখনো পর্যন্ত এটি নিঃসন্দেহে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশিবার ব্যবহৃত রাজনৈতিক স্লোগান।
হেলাল হাফিজ একা জীবন কাটাতে গিয়ে এবং জীবিকা জোগাতে জুয়াতে মনোযোগ দিয়েছিলেন। তার জুয়ার ভাগ্য ছিলো সুপ্রসন্ন।  অনেক দিন পর্যন্ত এই জুয়াই ছিল হেলাল হাফিজের উপার্জনের একমাত্র মাধ্যম। শহুরে জীবনে হেলাল হাফিজ এক সময় ‘জেগেলো’র জীবনও যাপন করেছেন। তাও নাকি কবিতার কারণেই। সমাজের ধনী নারীরা টাকার বিনিময়ে কবিকে ভাড়া নিতে পারতেন। এ সব বিষয়ে হেলাল হাফিজ ছিলেন বরাবর অকপট। 

তিনি এও বলেছিলেন যে, ‘‘ এই যে বোহেমিয়ান জীবন- আমার ক্ষেত্রে যা হয়েছে সেটা বাধ্যতামূলক। এইভাবে জীবনযাপনে আমি বাধ্য, আর কোনো উপায় ছিলো না আমার’’।

হেলাল হাফিজের জীবনে অনেক নারী এসেছেন। তাদের কেউ কেউ কবিতায় স্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু হেলাল হাফিজ আমৃত্যু মার্তৃস্নেহের পিপাসায় কাতর ছিলেন। শৈশবে মাকে হারিয়েছিলেন, মায়ের স্মৃতিও মনে ছিলো না হেলাল হাফিজের।  এই ছিলো তার একমাত্র অপ্রাপ্তি। জীবনে টাকা পয়সা জমানোর ইচ্ছা কোনোদিনই ছিলো না তার, কিন্তু মানুষ জমাতে চেয়েছিলেন কবি। 

হেলাল হাফিজের কবি হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ ছিলো মাতৃহীনতার বেদনা। সেই বেদনার প্রকাশই কবিকে বাংলা সাহিত্যের জগতে সমাদৃত করেছে। কবির কবিতায় অনেকে খুঁজে নিয়েছেন একান্ত আশ্রয়। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ যাঁদের টার্গেট করেছে, গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদি তাঁদের অন্যতম: রাশেদ খান

গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেছেন, কয়েকজন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগ (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) টার্গেট করেছে। তাঁর মধ্যে গতকাল গুলিবিদ্ধ হওয়া ওসমান হাদি অন্যতম ছিলেন। টার্গেট করা অন্য প্রার্থীদের ওপরও হামলার আশঙ্কা আছে।

রাশেদ খান বলেন, ‘আগামীকাল হয়তো আমার পালা, আপনার পালা। সরকার যদি নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে আমরা কীভাবে জনসংযোগ করব।’

আজ শনিবার রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন রাশেদ খান। গুলিবিদ্ধ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ‘পর্যবেক্ষণে’ থাকা ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে রাশেদ খান সেখানে যান।

এ সময় যারা ওসমান হাদিকে গুলি করেছে, তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান রাশেদ খান। তিনি বলেন, ‘চিরুনি অভিযান শুরু করতে হবে। আওয়ামী লীগকে আপনারা ধরছেন না, বরং আমরা দেখেছি, তারা জামিন পাচ্ছে।’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে ‘মাজাভাঙা’ উপদেষ্টা বলে মন্তব্য করেছেন রাশেদ খান।

রাশেদ খান বলেন, এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করতে পারবে না। সরকার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চায়, তাহলে সর্বপ্রথম স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিতে হবে। বিভিন্ন জেলা–উপজেলা প্রশাসনে রদবদল হলেও উপদেষ্টা পরিষদে কেন রদবদল হয়নি, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

আরও পড়ুনওসমান হাদিকে গুলি: সন্দেহভাজন একজনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তথ্য দিতে অনুরোধ১ ঘণ্টা আগে

রাশেদ খান আরও বলেন, গতকাল গণসংযোগ করে ফেরার পথে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা যেভাবে ওসমান হাদিকে গুলি করেছে, এ ঘটনার পর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া কোনো ব্যক্তি আর নিরাপদে নেই। এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে সরকার কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতির নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার দায় নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগেরও দাবি জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের এই নেতা বলেন, ‘এই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোনোভাবেই আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারছেন না।’

আরও পড়ুনআশঙ্কামুক্ত নন ওসমান হাদি, ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে: ইনকিলাব মঞ্চ ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ