গ্রেপ্তার বমদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অপরাধের অভিযোগ আনুন, না হয় মুক্তি দিন
Published: 12th, December 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রামে বম জনগোষ্ঠীর ৫৯ সদস্যকে বিনা বিচারে বন্দী রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ থাকলে হয় আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনতে হবে, না হয় তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে এমন আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। চিঠিটি শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বম জনগোষ্ঠীর আটক সদস্যদের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরার পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টাকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় চলমান সামরিক অভিযানের অংশ হিসেবে ২০২৪ সালের ৭ এপ্রিল থেকে বম জনগোষ্ঠীর ১৪২ সদস্যকে নির্বিচার গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে তিনটি শিশু। ১৮ মাসও পর তিন শিশুসহ ৫৯ জনকে বিনা বিচারে বন্দী করে রাখা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ৮০ জন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির চিঠিতে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে ২০২৪ সাল থেকে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের তিনজন হেফাজতে মারা গেছেন। এখনো যাঁরা বন্দী, তাঁরা গুরুতর ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ২০২৪ সালের এপ্রিলে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে দুটি ব্যাংকে ডাকাতি এবং এক ব্যাংকের ব্যবস্থাপককে জিম্মি করার অভিযোগের পর তদন্তের অংশ হিসেবে বিপুলসংখ্যক বম নাগরিককে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিবর্তনমূলক বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে। এতে বলা হয়েছে, এর সঙ্গে দণ্ডবিধির আওতায় ডাকাতি, অপহরণসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। যদিও ডাকাতির ঘটনায় একজনকে জড়িত থাকার দায় প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তথ্যপ্রমাণ ব্যবহার করা হয়নি।
চিঠিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ বম জনগোষ্ঠীর ৫৯ সদস্যকে স্বেচ্ছাচারীভাবে বন্দী করে রেখেছে। তাঁদের অন্যায্য ফৌজদারি ব্যবস্থা এবং বর্ণবৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে সংস্থাটির আহ্বান—পর্যাপ্ত গ্রহণযোগ্য প্রমাণ থাকলে দ্রুত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কোনো ফৌজদারি অপরাধে অভিযোগ আনতে হবে অথবা তাঁদের মুক্তি দিতে হবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি আরও বলেছে, বন্দী থাকা ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত আইনগত প্রতিনিধি এবং যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। গ্রেপ্তারের ভয় ছাড়াই তাঁদের সঙ্গে আত্মীয়স্বজনদের দেখা করার অনুমতি দিতে হবে। এ ছাড়া বম জনগোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন বন্ধ করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মানবাধিকার–সংক্রান্ত সব ধারা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বম জনগ ষ ঠ র অ য মন স ট আহ ব ন
এছাড়াও পড়ুন:
গুচ্ছ ভর্তিতে আবেদন শুরু, দ্বিতীয়বার পরীক্ষা–ভুলে নম্বর কাটাসহ দেখুন বিস্তারিত
গুচ্ছ (জিএসটি) পদ্ধতিতে ১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়েছে আজ বুধবার (১০ ডিসেম্বর ২০২৫) থেকে। আগ্রহী শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় দ্বিতীয়বারও ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ থাকছে। ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’—তিন ইউনিটে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী শিক্ষার্থীরা।
গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর ২০২৫) প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লিখিত ভর্তি পরীক্ষা তিনটি ইউনিটে অনুষ্ঠিত হবে—‘এ’ (বিজ্ঞান), ‘বি’ (মানবিক) ও ‘সি’ (ব্যবসায় শিক্ষা)। ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালের এসএসসি/সমমান এবং ২০২৪ ও ২০২৫ সালে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা ভর্তিতে আবেদন করতে পারবেন। বিস্তারিত পূর্ণাঙ্গ বিজ্ঞপ্তি শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
পাস নম্বর কত—
১৯টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর ৩০। প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য ০.২৫ নম্বর কাটা যাবে। প্রতি চারটি ভুল উত্তরের জন্য ১ নম্বর কাটা যাবে।
ভর্তি বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুয়ায়ী, প্রতিটি ইউনিটের ফলাফল জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। শুধু উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরাই জিএসটি গুচ্ছভুক্ত স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শর্তাবলি পূরণ সাপেক্ষে পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
পরীক্ষার সময়সূচি
—ইউনিট C (বাণিজ্য): ২৭-০৩-২০২৬ (শুক্রবার)। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
—ইউনিট B (মানবিক): ০৩-০৪-২০২৬ (শুক্রবার), বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
—ইউনিট A (বিজ্ঞান): ১০-০৪-২০২৬ (শুক্রবার), বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।
—আর্কিটেকচার ব্যবহারিক (ড্রয়িং) পরীক্ষা: ১০/০৪/২০২৬ (শুক্রবার), বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
গুচ্ছের বাইরে ৫ বিশ্ববিদ্যালয়—
এবারও গুচ্ছের বাইরেই থাকছে পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়। আগের মতোই এ প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেবে এসব বিশ্ববিদ্যালয়। বেরিয়ে যাওয়া পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয় হলো—জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। গুচ্ছ–প্রক্রিয়ায় যুক্ত হওয়া নিয়ে তাদের সঙ্গে ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ইউজিসির সঙ্গে বৈঠক হলেও তারা রাজি হয়নি। ফলে ১৯ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই এবার গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা হবে।
আরও পড়ুনকুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি, আবেদন শুরু ২৭ নভেম্বর, দ্বিতীয়বারের সুযোগ২৬ নভেম্বর ২০২৫গুচ্ছভুক্ত ১৯ বিশ্ববিদ্যালয় হলো—
১. ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ২. মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টাঙ্গাইল ৩. পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী ৪, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী ৫. জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ ৬. যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর ৭. পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা ৮. বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ৯. গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ ১০, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল ১১. রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি ১২. রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, সিরাজগঞ্জ ১৩. ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি, বাংলাদেশ, গাজীপুর ১৪ নেত্রকোণা বিশ্ববিদ্যালয়, নেত্রকোণা ১৫. জামালপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জামালপুর ১৬. চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চাঁদপুর ১৭. কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়, কিশোরগঞ্জ ১৮. সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সুনামগঞ্জ ও ১৯. পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পিরোজপুর।
আরও পড়ুনএমবিবিএস ও বিডিএস পরীক্ষা শুক্রবার, ১৫ মিনিটে বেশি পাবেন শিক্ষার্থীরা২ ঘণ্টা আগেওই পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বিষয়ে নানা আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে এবারেও বাইরেই থাকছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষায় বেরিয়ে যায় পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়।
পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের সভায় নিজস্ব প্রক্রিয়ায় ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ইতিমধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ভর্তি পরীক্ষার পদ্ধতি ও তারিখ চূড়ান্ত করেছে।
গত বছর গুচ্ছের তালিকায় থাকা ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়েই এই বছরও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নতুন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এখনো যুক্ত হয়নি।
আরও পড়ুনরুয়েটের ভর্তিতে বিজ্ঞপ্তি, আসন ১২৩৫, পদ্ধতিসহ জেনে নিন বিস্তারিত৩০ নভেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনশিক্ষক-কর্মচারীরা আইন পেশা, সাংবাদিকতাসহ একই সঙ্গে অন্য চাকরি করতে পারবেন না, নীতিমালা জারি১৯ ঘণ্টা আগে