‘ত্রয়োদশ নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক পথে উত্তরণে একটি বড় অগ্রগতি। কিন্তু আগামী নির্বাচন কি আবার গত তিনটি নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় হবে কিনা, সেটা নিয়ে আজও প্রশ্ন আছে।’

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের আয়োজনে আসন্ন নির্বাচন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই সংশয়ের কথা তুলে ধরেন।

সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।

বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, জিয়া হাসান, অধিকার কর্মী জাকির হোসেন, শিক্ষক ও গবেষক স্বপন আদনান প্রমুখ।

সভার সভাপতিত্ব করেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সভাপতি হাসনাত কাইয়ূম। সঞ্চালনায় ছিলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার ভূঁইয়া।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের সবাই অনেক প্রশংসা করেছিলেন। আমরা আশান্বিত হয়েছিলাম। কিন্তু এক সময় সব অথরিটির কাছে গিয়েও সে সংস্কার প্রস্তাবের প্রায় কোন কিছুই বাস্তবায়ন করাতে পারেনি।”

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের  মামলায় হাইকোর্টে তিনিও বক্তব্য রেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নির্বাচন এবং সংস্কার নিয়ে আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।”

আলতাফ পারভেজ বলেন, “নির্বাচন এবং সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে। এসবের প্রধান শিকার হবে জনগণের গণতন্ত্রের আকাঙ্খা। গণঅভ্যুত্থানের সাথে প্রতারণা চলছে। প্রশাসনিক ক্যু চলছে। এদেশকে কেউ কেউ ইরাক, সিরিয়া বানাতে চায়। এসব রুখতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নিবন্ধন এবং নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি।”

সভাপতির বক্তব্যে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন সর্বোচ্চ ধৈর্য্য ধরেছে যেন নির্বাচন কমিশনের ইম্প্রেশন খারাপ না হয়। আমরা সঠিক সময়ে সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। নয়তো দেশ একটা বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের সে আকাঙ্ক্ষা আছে কিনা, সেটা একটা বড় প্রশ্ন।”

“আগামী রবিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করা হবে এবং ১৭ ডিসেম্বর সমাজের বিশিষ্টজন এবং রাজনৈতিক নেতাদের সাথে নিয়ে নির্বাচন কমিশনার এবং প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করে অভিযোগ করা হবে,” বলেও ঘোষণা দেন তিনি। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদে’ কূটনীতিকদের নৌযাত্রা

শতবর্ষী প্যাডেল স্টীমার পিএস মাহসুদে
কূটনীতিকদের নৌযাত্রা/
 বাংলাদেশের নৌ পর্যটনের অপার সম্ভাবনায় মুগ্ধ  কূটনীতিকগণের সহযোগিতার আশ্বাস 

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র  মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার ‘পিএস মাহসুদে’ কূটনীতিকদের নিয়ে ঢাকা-চাঁদপুর-ঢাকা রুটে এক বিশেষ নৌযাত্রা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর ২০২৫) ঢাকার সদরঘাট থেকে ঐতিহাসিক স্টিমার পিএস মাহসুদে করে অ্যাম্বাসাডরস’ আউটরিচ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। এর উদ্দেশ্য বিদেশি কূটনীতিকদের সামনে বাংলাদেশের নদীপথ, নৌ-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও নৌপরিবহন খাতে সরকারের অগ্রগতি তুলে ধরা।

আমন্ত্রিত অতিথিরা সদরঘাটের ভিআইপি টার্মিনালে সমবেত হন এবং সকাল ৯টায় পিএস মাহসুদ স্টিমারে যাত্রা শুরু করেন। দিনব্যাপী ক্রুজ চলাকালে কূটনীতিকরা চাঁদপুর পর্যন্ত নদীপথের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন এবং জাহাজে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। কূটনৈতিকদের সম্মানে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন অংশ নেন। 

নৌপরিবহন সচিব ড. নূরুন্নাহার চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়ামসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্রজে যোগ দেন। তারা কূটনীতিকদের নদীভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন, নদী সংরক্ষণ কার্যক্রম এবং ঐতিহ্যবাহী নৌযান সংরক্ষণে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে অভিহিত করেন। পাশাপাশি ঐতিহাসিক ‘পিএস মাহসুদ’–এর সংরক্ষণ কার্যক্রম ও ইতিহাস সম্পর্কেও ধারণা দেওয়া হয়।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পিএস মাহসুদে বিদেশি কূটনৈতিকদের স্বাগত জানান। তিনি বাংলাদেশের নদীকেন্দ্রিক পর্যটনের অপার সম্ভাবনার বিষয়টি কূটনৈতিকদের সামনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “নদীপথের পুনরুজ্জীবন ও নৌপরিবহন ব্যবস্থার আধুনিকায়নে সরকার ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী  পিএস মাহসুদ–এ আপনাদের যাত্রা আমাদের নদীজ সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার একটি প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।”

অংশগ্রহণকারী কূটনীতিকরা বাংলাদেশের নদী-নির্ভর পর্যটনের সম্ভাবনায় মুগ্ধ হন। তারা জানান, স্ব স্ব দেশের পর্যটকদেরকে বাংলাদেশের নদীপথভিত্তিক পর্যটন-বিশেষ করে শতবর্ষী ঐতিহাসিক প্যাডেল স্টিমারে ভ্রমণউদ্দীপিত করতে তারা ভূমিকা রাখবেন।

দিনব্যাপী এ রিভার ক্রুজ শেষে বিকেল স্টিমারটি পুনরায় সদরঘাট ভিআইপি টার্মিনালে নোঙর করে। অনুষ্ঠানটি অংশগ্রহণকারী বিদেশি কূটনীতিকদের মাঝে বাংলাদেশের নদীপথ, সংস্কৃতি এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রা সম্পর্কে ইতিবাচক ও ঘনিষ্ঠতর ধারণা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ