পশ্চিমবঙ্গের প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ চত্বরে প্রথম জুমার নামাজে লাখ
Published: 12th, December 2025 GMT
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গায় প্রস্তাবিত ‘বাবরি মসজিদ’ চত্বরে আজ (১২ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম জুমা উপলক্ষে এদিন মসজিদ নির্মাণ কমিটির তরফে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়।
নামাজে অংশ নিতে সকাল থেকেই হাজার হাজার মুসলমান মুর্শিদাবাদ, মালদা, নদীয়া সহ আশেপাশের জেলা থেকে মসজিদ চত্বরে উপস্থিত হয়েছিলেন। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এদিন মসজিদ চত্বরে জুমার নামাজ আদায় করেছেন কমপক্ষে এক লাখ মুসল্লি। নামাজ শেষে প্রস্তাবিত মসজিদ চত্বরেই ভোজের আয়োজন করা হয়।
মসজিদের প্রধান উদ্যোক্তা সাসপেন্ড তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর জুমার নামাজকে কেন্দ্র করে ব্যাপক জনসমাগমের দাবি করেন। তিনি জানিয়েছেন, লক্ষাধিক মানুষ আজ নামাজ পড়তে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। নামাজ শেষে বহু মানুষকে খিচুড়ি পরিবেশনও করা হয়।
হুমায়ুন কবীর দাবি করেছেন, বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণের উদ্দেশ্যে গঠিত ট্রাস্টের নামে এখন পর্যন্ত প্রায় চার কোটি রুপি জমা পড়েছে। মানুষের আবেগ ও সমর্থনই এই বিপুল অর্থসংগ্রহ সম্ভব করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
তার বক্তব্য, “মানুষ নিজের ইচ্ছায় দান করছেন। আমরা সম্পূর্ণ স্বচ্ছতার সঙ্গে ট্রাস্ট পরিচালনা করছি।”
তবে এদিন তিনি মসজিদের নাম করে বেআইনিভাবে অর্থ চুরির অভিযোগে আনেন। ট্রাস্টের অ্যাকাউন্টের বারকোড জালিয়াতি করে ভুয়া কিউআর কোড বানিয়ে টাকা জালিয়াতের অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। স্থানীয় একটি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন তিনি।
১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সেই দিনটিকে স্মরণে রেখে চলতি ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখ মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় একই নামে মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সাময়িক বহিষ্কৃত বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
ঢাকা/সুচরিতা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের অযোগ্যতার বিধান নেই ইসির পরিপত্রে
মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় কারও বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হলে তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এমন বিধান যুক্ত করা হলেও প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা পরিপত্রে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর ইসি সচিবালয় এ–সংক্রান্ত একটি পরিপত্র (পরিপত্র-১) জারি করে।
পরিপত্রে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচনী সময়সূচি জারি, সময়সূচির প্রজ্ঞাপন, রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের প্রজ্ঞাপন, সময়সূচির গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, প্রার্থীর যোগ্যতা-অযোগ্যতা, নির্বাচনী ব্যয় নির্বাহের জন্য নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, ছবিসহ ও ছবি ছাড়া ভোটার তালিকার ব্যবহার–সম্পর্কিত বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়।
পাশাপাশি প্রার্থীদের যোগ্যতা ও অযোগ্যতার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও)১২ অনুচ্ছেদের বিধানগুলো উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ওই পরিপত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনের বিধানটি বাদ পড়েছে।
নির্বাচন কমিশনের পরিপত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি বাদ পড়ার কারণ জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনের এই ধারা ভুলবশত পরিপত্রে বাদ পড়েছে। বিষয়টি আমরা ঠিক করে দেব।’
এর আগে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার বিধানটি আরপিওতে যুক্ত করার সুপারিশ করেছিল। সেই সুপারিশ অনুযায়ী আরপিও সংশোধন না হলেও গত অক্টোবরে অধ্যাদেশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে বিধানটি যুক্ত করা হয়।
সংশোধিত ওই আইনে বলা হয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল হলে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার অযোগ্য হবেন। এ ছাড়া তিনি কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের সদস্য, চেয়ারম্যান বা মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হতে পারবেন না। এমনকি প্রজাতন্ত্রের কোনো চাকরিতে নিয়োগ বা কোনো সরকারি পদে থাকারও অযোগ্য বিবেচিত হবেন।