হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িতদের ধরতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের
Published: 12th, December 2025 GMT
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আটক করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ২৪ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে সংগঠনটি। এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর শাহবাগে প্রতিরোধ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আবদুল্লাহ আল জাবের রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে ওসমান হাদির চিকিৎসা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি আলটিমেটাম ও কর্মসূচির বিষয়ে জানান।
আরও পড়ুনহাদিকে গুলির ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যা পাওয়া গেল৫ ঘণ্টা আগেআবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুঁজে বের করে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। শরিফ ওসমান হাদির কিছু হলে তার দায়ও সরকারকে নিতে হবে।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আবদুল্লাহ আল জাবের বলেন, শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা এখনো শঙ্কামুক্ত নয়। হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে বিদেশে নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার রাত ১০টায় ওসমান হাদিকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা—সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, আদিলুর রহমান খান ও ফাওজুল কবির খান। এ ছাড়া জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীরা হাসপাতালে ওসমান হাদিকে দেখতে যান।
আরও পড়ুনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, জড়িতদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম৩ ঘণ্টা আগেগুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে তাঁর পরিবারের সিদ্ধান্তে শুক্রবার রাত ৮টার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে আনা হয়।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় তাঁকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। মাথায় গুলিবিদ্ধ হাদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুনওসমান হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: প্রধান উপদেষ্টা১ ঘণ্টা আগেগুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। সেই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত তদন্ত চালিয়ে জড়িতদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুনহাদিকে গুলির নিন্দা–প্রতিবাদ বিভিন্ন দল ও সংগঠনের, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ৫ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ওসম ন হ দ ক ওসম ন হ দ র ন উপদ ষ ট শ ক রব র র ঘটন য় র বর ত সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তফসিলের পরদিন ‘প্রার্থী’ গুলিবিদ্ধ
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ঢাকায় দিনের বেলায় গুলি করা হলো ভোটে সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদিকে (৩৩)। তিনি ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন এবং বেশ কিছুদিন ধরে প্রচার চালাচ্ছিলেন। হাদি ইনকিলাব মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের আহ্বায়ক।
গুলি করার পর আহত হাদিকে রিকশায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গুলি তাঁর মাথায় লেগেছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। রাতে তাঁকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিনই সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।
দুর্বৃত্তদের গুলিতে ওসমান হাদির গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন বলে গতকাল জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং।
হাদির বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করার পর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছিলেন তিনি। পাশাপাশি সক্রিয় ছিলেন বিভিন্ন আন্দোলনে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ভূমিকা রাখার পর ইনকিলাব মঞ্চ গঠন করে আলোচনায় আসেন হাদি। সাংস্কৃতিক এই প্ল্যাটফর্ম তাদের লক্ষ্য ঠিক করে, ‘সমস্ত আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও ইনসাফভিত্তিক একটি রাষ্ট্র বিনির্মাণ’। এই প্ল্যাটফর্ম থেকে বিভিন্ন কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ ও ভারতবিরোধী বক্তব্য হাদিকে আলোচনায় আনে। ঢাকার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙার সময় হাদি সক্রিয় ছিলেন। তিনি গোপালগঞ্জ জেলা ভেঙে দিতে বলেছিলেন।
ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার প্রতিষ্ঠা, নির্বাচনী তহবিলের হিসাব প্রকাশ এবং তাঁর ওপর ময়লা পানি নিক্ষেপের ঘটনায় ‘অসুবিধা নেই’ উল্লেখ করে ফেসবুক পোস্ট দিয়েও আলোচনায় আসেন হাদি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল জুমার নামাজের পর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে একটি ব্যাটারির রিকশায় ছিলেন হাদি ও তাঁর সঙ্গী এক ব্যক্তি। তাঁদের পেছনে পেছনে আসে একটি মোটরসাইকেল। বেলা ২টা ২৪ মিনিটে চলন্ত অবস্থায় সেই মোটরসাইকেল থেকেই একাধিক গুলি করা হয় হাদিকে।
ব্যাটারিচালিত রিকশায় বসা ওসমান হাদিকে গুলি করেন মোটরসাইকেলের পেছনে বসা ব্যক্তি। দ্রুত ঘটনা ঘটিয়ে তাঁরা ওই মোটরসাইকেলে সেখান থেকে চলে যান