বন্দরে অধরা জলদস্যু ডালিম ও অনিকগং
Published: 12th, January 2025 GMT
বন্দরে এমভি বি জামান নামক এক জাহাজ থেকে ৩ লাখ ৬৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে জলদস্যু ডালিম ও অনিকগং এর বিরুদ্ধে। গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুর যাওয়ার সময় বন্দর ও মুন্সিগঞ্জ মধ্যবর্তী ধলেশ্বরী-শীতলক্ষ্যা মোহনার চর মুক্তারপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জলদস্যুদের কবলে পরা জাহাজের কর্মীরা জানায়, ওই জায়গায় ওঁৎ পেতে থাকা সশস্ত্র জলদস্যুরা ট্রালার থেকে জাহাজে উঠে পড়ে। মাস্টারসহ জাহাজে থাকা ছয় জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল ফোনসহ সব কিছু ছিনিয়ে নিয়ে কালো কাপড় দিয়ে মুখে ঢেকে দেয়।
পরে তাদের ইঞ্জিন কক্ষে আটকে রেখে জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে জাহাজে থেকে থাকা ৩ লাখ ৬৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল লুট করে সন্ধ্যা ৭টার দিকে মেঘনা সেতুর কাছে জাহাজটি ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়।
জাহাজটির মালিক কিং ফিশার শিপিং জানিয়েছে, লুট হওয়া ফার্নেস ওয়েলের দাম ৩ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ওই ফার্নেস অয়েল সামিট গ্রুপের।
এ ব্যাপারে কোম্পানির ম্যানেজার ফজল আহম্মেদ বলেন, সকালে জাহাজের কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তারা বিষয়টি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান। পরে মোবাইল ট্র্যাক করে মেঘনা সেতুর কাছে জাহাজের অবস্থান শনাক্ত করা হয়।
পুলিশ সন্ধ্যায় সেখানে গেলে জাহাজ রেখে দ্রুত ট্রলারে করে পালিয়ে যায় জলদস্যুরা। এরপর জাহাজ কোম্পানির কর্মকর্তাসহ নৌপুলিশ এবং বিআইডব্লিউটি এর লোকজন জাহাজে গিয়ে বন্দী কর্মীদের উদ্ধার করে।
জাহাজের মাস্টার সাইজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, নারায়ণগঞ্জে সামিট পাওয়ারের ডিপো থেকে ফার্নেস অয়েল গাজীপুরে সামিট পাওয়ারের কেন্দ্রে নেওয়ার জন্য শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে রওনা হন তিনি।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, “প্রথমে মুখোশ পড়া ছয় জন ডাকাত জাহাজে ওঠে। তাদের কাছে বড়বড় রাম দাসহ নানারকম অস্ত্র ছিল। তাদের মুখে ডালিম নামটি শোনা যায়।”
এলাকাবাসী তথ্য সূত্রে জানাগেছে, বন্দর থানার চর ধলেরশ্বরী এলাকার চিহ্নিত জলদস্যু ও একাধিক নৌ ডাকাতি মামলার আসামী ডালিম ও ঘারমোড়া সরদারবাড়ী এলাকার মহিদ মিয়ার সন্ত্রাসী ২ ছেলে হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামী জলদস্যু অনিক, সিফাত ও শিপন বাহিনী দীর্ঘ দিন ধরে ধলেরশ্বরী ও শীতলক্ষ্যা মহনায় চাঁদাবাজি ও ছিনতাইসহ নৌ ডাকাতি করে আসছে। তাদের উৎপাতে নৌযান শ্রমিকেরা চরমভাবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে।
মুক্তারপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লুৎফর রহমান জানান এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। কোস্ট গার্ড জাহাজটি পরিদর্শন করেছে। ডাকাতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তবে ফার্নেস অয়েল লুট করে কোথায় নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উৎস: Narayanganj Times
এছাড়াও পড়ুন:
বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বন্দর প্রেসক্লাবের ২০২৫-২৭ মেয়াদের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত সভাপতি আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল আলম জাহিদের সঞ্চালনায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবু সালেহ আকন। প্রধান আলোচক ছিলেন বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সিআইডি) হারুন অর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন পন্টি, বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আনিসুর রহমান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন মিয়া সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সিদ্দিকী প্রমুখ।
উদ্বোধকের বক্তব্যে সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম বলেন, বন্দর প্রেসক্লাবের নবাগত কমিটির সকলকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানায়। আজকে তিন বিষয়ে আজকে গুরুত্ব বহন করে। এক. পেশাগত নিয়ে তাদের সম্মান নিয়ে কথাটা, দুই. সাংবাদিকদের প্রশিক্ষিণের ব্যাপারটা, তিন. হলো আমাদের বিষয় নিয়ে।
সেটা হলো, বেগম খালেদা জিয়া সরকার মেয়াদকালে একটি সমানজ্জল্য পালন করতে পেরেছিলাম। আমাদের তখন স্বার্থক ছিলো বন্দর প্রেসক্লাবকে একটি জমি দিতে সক্ষম হয়েছিলাম। আজকের বন্দর প্রেসক্লাব সেটা স্বীকার করে নিলো সেটা কৃর্তত্ব আমার নয়, এটার কৃর্তত্ব বেগম খালেদা জিয়া। তিনি দিয়েছিলেন বলে আমাদের স্বার্থকতা পেলাম।
তিনি আরো বলেন, একটা কথা বিরাজমান, হলুদ সাংবাদিকতা। এই শব্দটা এখন ডেঙ্গু’র মত অবস্থা। এটা আমার কাছে দুঃখজনক অবস্থা যারা সৎ সাংবাদিকতা হিসেবে পেশাকে গ্রহণ করেছেন, করেন তাদের জন্য কষ্টকর বিষয়। আশা করবো, আপনাদের ঘর আপনাদের ঠিক রাখতে হবে। সংবাদ প্রকাশ করার আগে অবশ্যই যাচাই বাছাই করা উচিত।
সংবাদে বিশেষ বিশ্লেষণ করে প্রকাশ করা ভালো। একটি দুসময় আমরা পাড় হয়ে এসেছি। চার সংবাদপত্র ছাড়া বাকি বিলুপ্ত করা হয়েছিলো। এখন সাংবাদিক পেশা মহান হিসেবে ধরে রাখতে হবে। রাজনীতিবিদ সাথে সাংবাদিক সম্পর্ক পারিবারিকভাবে হয়ে যায়। আমাদের কর্মদক্ষতা সাংবাদিকরা লিখনী মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
সাংবাদিকদের দক্ষতা কারণে আমাদের কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। এই পেশা কারথে আমাদের উৎসাহ করে কাজ করার। বন্দর প্রেসক্লাব ও নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের এখানে সাধারণ সম্পাদক আছেন, দুই প্রেসক্লাবই আমার নির্বাচনী এলাকার ভিতরে। আমার ব্যক্তিভাবে কোন প্রয়োজন হয়, তাহলে সকল কিছুতে প্রস্তুত।
প্রধান অতিথি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ও পিআইডি সদস্য আবু সালেহ আকন বলেছেন, মফস্বল সাংবাদিক আর কেন্দ্রীয় সাংবাদিক বলে কিছু নেই। আমরা সবাই গণমাধ্যম কর্মী সবাই সাংবাদিক। তবে স্থানীয়ভাবে যারা পত্রিকাগুলোতে কাজ করেন তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই কাজ করেন।
কিন্তু ঠিকমতো তারা বেতন ভাতা পান না। ওয়েজবোর্ড অনুযায়ী তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হয় না। স্থানীয় সাংবাদিকদের ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী বেতন ভাতা পরিশোধ করা উচিত। যে সমস্ত পত্রিকা ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের ব্যর্থ সেগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া উচিত।