দুর্নীতি মামলায় সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও তাঁর বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের এপিএস মনির হোসেনের স্থাবর সম্পদসহ তাঁর আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া পৃথক মামলায় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন আদালত। 
গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ জাকির হোসেন মামলাগুলোর পৃথক শুনানি নিয়ে এসব আদেশ দেন। এদিকে অপর একটি মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে দুদকের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

গতকাল পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর ও তাঁর মেয়ের আয়কর নথি জব্দের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হাফিজুল ইসলাম। আদালতে শুনানি করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন। এর আগে গত ৮ জানুয়ারি বেনজীরের স্ত্রী জিশান মীর্জা ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দেন আদালত। এ ছাড়া গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। 
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বেনজীর ৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ২ কোটি ৬২ লাখ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। তাঁর স্ত্রী ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং ১৬ কোটি টাকার তথ্য গোপন করেছেন। তাদের বড় মেয়ে পৌনে ৯ কোটি টাকার এবং দ্বিতীয় মেয়ে ৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়। এদিকে, গত ১ জানুয়ারি দুর্নীতির মামলায় সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করেছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ। এ মামলায় গতকাল তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। 

এ ছাড়া সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিএস মনির হোসেনের বিরুদ্ধে গত ৯ অক্টোবর মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হোসাইন। ওই মামলায় গতকাল তাঁর সম্পদসহ আটটি ব্যাংক হিসাব জব্দের আদেশ চাওয়া হয়। 
গতকাল দুদকের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম। ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ আসামির উপস্থিতিতে গ্রেপ্তার শুনানির জন্য আগামী ২০ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রধান কার্যালয়ে আজ রোববার হঠাৎ অভিযান পরিচালনা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইপিবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে ডলারে ঘুষ নিয়েছেন সংস্থাটির এক উপপরিচালক, এমন অভিযোগে ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘ডলারে ঘুষ নেন ইপিবির এক কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ঘটনা তদন্ত করতে এরপর তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ইপিবি। কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগের সত্যতা ওঠে আসে।

তবে এক বছরের বেশি সময় পার হলেও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি ইপিবি। দুদক সম্প্রতি এ বিষয়ে অনুসন্ধান করার জন্য একটি দল গঠন করে এবং ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ আমলে নিয়েই দুদক আজ অভিযান পরিচালনা করেছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাসান আরিফ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের এক উপপরিচালকের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ ছিল। এ অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই দুদকের তিন সদস্যের একটি দল আমাদের কার্যালয়ে আসে। আমরা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে সহায়তা করেছি। বিষয়টি অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে।’

ইপিবি গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ইপিবির অনুমোদন ছাড়া ১৪টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জামানত বাবদ ১৫০ ডলার করে নেওয়া ঠিক হয়নি।’ আরও বলা হয়, চীনের কুনমিংয়ে ২০২৩ সালের আগস্টে অনুষ্ঠিত একটি মেলায় অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে জামানত নেওয়া হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া।

দুদকের সূত্রগুলো বলছে, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন পরিমাণের পে–অর্ডার দিয়েছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা, ইপিবির এক উপপরিচালক আত্মসাতের উদ্দেশ্যে এত দিন সেগুলো নিজের জিম্মায় রেখে দিয়েছিলেন। দুদক সরেজমিন ইপিবি কার্যালয়ে এসে পে-অর্ডারগুলো উদ্ধারের চেষ্টা করেছে, তবে কিছু উদ্ধার হয়েছে কি না, তা জানা যায়নি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোতে হঠাৎ দুদকের অভিযান
  • ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করদাতাদের ই-রিটার্ন জমা দিতে বলেছে এনবিআর