১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে বাবরের মুক্তিতে বাধা নেই। তাহলে কখন কারামুক্ত হবেন, সাবেক এ স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। জানা গেছে, যে কোনো সময় তিনি কারামুক্ত হবেন।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে জানতে চাইলে ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) মো.
জানা গেছে, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মুক্তির কাগজ এখনো কারাগারে এসে পৌঁছায়নি। এ ছাড়া হবিগঞ্জ ও দিরাই থানার বিচারাধীন ৪টি মামলার প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট এখনো রয়েছে। কাগজ এলে এবং ওয়ারেন্ট প্রত্যাহার হলেই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।
এর আগে, গত ১৮ ডিসেম্বর ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের করা চোরাচালান মামলায় খালাস পান তিনি। এবার খালাস পেলেন অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায়। বাবরের খালাস পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে তার আইনজীবী শিশির মণির জানান, বাবরের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই।
পড়ুন- ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় খালাস পেলেন বাবর
এই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ৫ আসামিকে খালাস দেওয়া ছাড়াও ৫ জনের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া, চার জন মারা যাওয়ায় তাদের আপিল বাতিল করা হয়েছে।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সিইউএফএল ঘাট থেকে আটক করা হয় ১০ ট্রাকভর্তি অস্ত্রের চালান। এ নিয়ে কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে চোরাচালানের অভিযোগ এনে দুটি মামলা হয়। মামলায় ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত এবং বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১ রায় দেন।
এর মধ্যে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামী (অন্য মামলায় ফাঁসি কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া এবং দুটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৪ জনকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়। অস্ত্র আইনে করা অন্য মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয় একই আসামিদের।
বিচারিক আদালতের রায়ের পর ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার নথিপত্র হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয় এবং তা ডেথ রেফারেন্স মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়। একই সময়ে সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা।
ঢাকা/মাকসুদ/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথম কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ওয়াশিংটন সফর করবেন শারা
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল–শারা যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন সফর করবেন। গতকাল শনিবার দামেস্কে নিযুক্ত বিশেষ মার্কিন দূত টম ব্যারাক এ ঘোষণা দেন। এটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানীতে কোনো সিরীয় রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম সফর।
হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, ১০ নভেম্বরের দিকে এ সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে।
গতকাল বাহরাইনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতিবিষয়ক সম্মেলন ‘মানামা ডায়ালগ’-এর ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন টম ব্যারাক। এ সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, শারার এ সফরে সিরিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইসলামিক স্টেটবিরোধী জোটে যোগ দেবে।
আরও পড়ুনযে মার্কিন জেনারেল একদিন গ্রেপ্তার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে এক মঞ্চে বসে সাক্ষাৎকার দিলেন আল-শারা২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে অবগত এক সিরীয় সূত্র জানায়, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে শারা ওয়াশিংটন সফরে যেতে পারেন।
কোন কোন বিদেশি নেতা যুক্তরাষ্ট্র সফর করেছেন, তার একটি ঐতিহাসিক তালিকা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে সংরক্ষিত আছে। সে তালিকায় দেখা গেছে, এখন পর্যন্ত কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াশিংটন সফর করেননি। গত সেপ্টেম্বরে শারা নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।
গত বছরের ডিসেম্বরে স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা গ্রহণের পর শারার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যরা একাধিক বিদেশ সফর করেছেন। আসাদ আমলে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া সিরিয়ার সঙ্গে বিশ্বশক্তিগুলোর সম্পর্ক পুনর্গঠন করাই এসব সফরের লক্ষ্য।ব্যারাক বলেন, ওয়াশিংটনের লক্ষ্য হলো ২০১৪ সাল থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যে জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাতে সিরিয়াকে যুক্ত করা। আইএস তাদের উত্থানের সময় ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে সিরিয়া ও ইরাকের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অঞ্চল দখল করে রেখেছিল।
ব্যারাক বলেন, ‘আমরা সবাইকে এ জোটের অংশীদার করার চেষ্টা করছি, যা তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
শারা একসময় আল-কায়েদার সিরীয় শাখার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তবে এক দশক আগে তাঁর নেতৃত্বাধীন আসাদবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী ওই নেটওয়ার্ক থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং পরে আইএসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। আল–কায়েদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ওসামা বিন লাদেন।
আরও পড়ুনসিরিয়ার নেতা শারাকে গ্রেপ্তারে ১ কোটি ডলার পুরস্কারের ঘোষণা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র২১ ডিসেম্বর ২০২৪যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোট ও তাদের স্থানীয় সহযোগীরা ২০১৯ সালে সিরিয়ায় আইএসের সবশেষ শক্ত ঘাঁটি দখলমুক্ত করে। তবে বিভিন্ন সূত্র গত জুনে রয়টার্সকে বলেছে, আইএস আসাদ সরকারের পতনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সিরিয়া ও প্রতিবেশী দেশ ইরাকে নতুন করে ফিরে আসার চেষ্টা করছে।