বাড়ির পাশে মাঠে খেলা করছিল শিশুরা। হঠাৎ মাটির নিচ থেকে ভেসে আসা এক নবজাতকের কান্নার শব্দ শুনতে পায় তারা। কিছুটা ভয় পায় শিশুরা। কান্নার শব্দ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকলে শিশুরা আশপাশের লোকজনকে ডেকে আনে। পরে তারা মাটির নিচে উবু করে চাপা দেওয়া অবস্থায় এক নবজাতককে দেখতে পায়। দ্রুত মাটি সরিয়ে নবজাতককে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। 

গাজীপুর সদর উপজেলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের শিরিরচালা এলাকার সামিট ক্যাডেট একাডেমির পেছনের মাঠের পাশে গত সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। মাটি চাপা দেওয়া অবস্থা থেকে শিশুটিকে জীবন্ত উদ্ধার করেন স্বপ্না বেগম নামে এক নারী। তবে নবজাতকটির বাবা-মায়ের সন্ধান মেলেনি। শেষ পর্যন্ত বাঁচানোও যায়নি শিশুটিকে। 

স্বপ্না বেগমের ভাষ্য– তাঁর বাড়ির কাছে মাঠে ছোট শিশুরা খেলছিল। হঠাৎ তারা মাটির নিচ থেকে কান্নার শব্দ শুনতে পায়। তখন তারা সেখানে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় নবজাতককে মাটির নিচে উবু হয়ে পড়ে থাকতে দেখে। তখনও সে কান্না করছিল। তার নাড়িও কাটা হয়নি। দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে তিনি বাড়িতে নিয়ে পরিষ্কার করেন, বুকের দুধ পান করান। পরে একটি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। 

গতকাল মঙ্গলবার রাতে জয়দেবপুর থানার ওসি আব্দুল হালিম বলেন, ওই নারী শিশুটিকে উদ্ধারের পর সেবা দিয়ে খানিকটা সুস্থ করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে তারা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। 

গাজীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন বলেন, তারা নবজাতককে গ্রহণ করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো যায়নি। সোমবার রাতেই সে মারা যায়। লাশ মর্গে রয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ