বলিউড অভিনেত্রী নার্গিস ফাখরি। ২০১১ সালে ‘রকস্টার’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক ঘটে এই মার্কিন অভিনেত্রীর। এরপর ‘মাদ্রাজ ক্যাফে’, ‘হাউজফুল থ্রি’-এর মতো সিনেমা উপহার দিয়েছেন এই আলোচিত নায়িকা।

এক যুগের বেশি সময় ধরে বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন নার্গিস। কিন্তু এই জার্নি মোটেও সহজ ছিল না। কারণ হঠাৎ ভারতে যাওয়া, হিন্দি ভাষা না জানা— সব মিলিয়ে জীবনের বাঁকে বাঁকে ছিল নতুন নতুন রহস্য! সব বাধা অতিক্রম করে আজকের নার্গিস ফাখরি।

নার্গিস ফাখরি আইটেম গানে নেচেও দর্শক মনে নাড়া দিয়েছেন। তবে আইটেম গানে পারফর্ম করাও তার জন্য সহজ ছিল না। সুভাষ কে ঝা-কে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন নার্গিস ফাখরি। এ আলাপচারিতায় নার্গিস ফাখরি বলেন, “আমার কাছে তখন আইটেম গান নতুন ব্যাপার। পরে বুঝেছি, মানুষ এটাকে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন।”

আরো পড়ুন:

‘অশ্লীল নাচ’ নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন উর্বশী

‘তিন বছর বিশ্বাস করতাম আমি মরে গেছি’

অভিনেতা শহিদ কাপুরের সঙ্গে আইটেম গানে পারফর্ম করার কথা স্মরণ করে নার্গিস ফাখরি বলেন, “আমি শহিদের সঙ্গে ‘ফাটা পোস্টার নিকলা হিরো’, ‘ম্যায় তেরা হিরো’ সিনেমায় আইটেম গানে নাচ করেছি। আমার কাছে তখন আইটেম ড্যান্স শব্দটা নতুন ছিল। মানুষ যখন বলতেন, এই মেয়েটি আইটেম গানে নাচ করছে, তখন তা ভালোভাবে নেওয়া হতো না। হিন্দি ভাষার মতোই বলিউডের নাচ-গান তখন আমার কাছে এলিয়নের মতো ছিল। আমি এটি শেখার পাশাপাশি উপভোগ করার চেষ্টা করছিলাম।”

আইটেম গানে অভিনেত্রীদের আবেদনময়ীরূপে হাজির হওয়ার কথাটি বলে দিতেন নির্মাতারা। তা উল্লেখ করে এই অভিনেত্রী বলেন, “আইটেম গানে নাচের সময় অভিনেত্রীদের আবেদনময়ীভাবে হাজির হওয়ার কথা বলা হতো। একই সঙ্গে আবার মনে করিয়ে দেওয়া হতো, আমরা যেন মাত্রা ছাড়িয়ে না যাই। আমার জন্য শুরুর দিকে এসব করা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু পরে আর অসুবিধা হতো না। আইটেম গানে নাচের জন্য সেটে কিছু মানুষকে রাখা হতো। আসলে মুম্বাইয়ের কাজের ধরন অন্য অনেক জায়গা থেকে অনেকটাই আলাদা।”

বড় পর্দায় খুব একটা নিয়মিত নন নার্গিস ফাখরি। মাঝে বিরতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। বিরতি ভেঙে ভারতে ফিরে ফের কাজ শুরু করেছেন তিনি।

নার্গিস ফাখরি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘শিব শাস্ত্রী বলবো’। ২০২৩ সালে মুক্তি পায় এটি। বর্তমানে দুটো সিনেমার কাজ তার হাতে রয়েছে। ‘হাউজফুল ফাইভ’ সিনেমার কাজ নিয়ে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন এই অভিনেত্রী।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পর্কের নতুন রসায়ন...

২০০৭ সালে যখন মুক্তি পেয়েছিল অনুরাগ বসুর পরিচালনায় ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’। তখনও শহরের জীবন, সম্পর্কের টানাপোড়েন, একাকিত্ব আর জটিলতা নিয়ে এত স্পষ্টভাবে কেউ বলেননি। বছর গড়িয়েছে ১৮, শহরের পরিবেশ বদলেছে, বদলেছে মানুষের মন, বদলে গেছে ভালোবাসার সংজ্ঞাও। সম্পর্কের ভাঙা-গড়ার গল্প কি বদলেছে? সেই প্রশ্নকে নতুন করে ছুঁয়ে দেখতে যেন অনুরাগ ফিরলেন ‘মেট্রো ইন দিনো’ নিয়ে। ছবিটির ট্রেলার যেন অতীত ও বর্তমানের মাঝে এক উড়ন্ত সেতু। কোলাজে বাঁধা চারটি সম্পর্কের গল্প–নতুন, পুরোনো, গাঢ়, হালকা, বাস্তব আর কিছুটা রূপকথার মতো। 

ব্যস্ত শহরের শ্বাস টেনে নিয়ে তাদের ছুঁয়ে যায় টানাপোড়েনের ট্র্যাক। চার জুটির চার ধরনের সম্পর্ক, অথচ এক সুতোয় বাঁধা। ট্রেলারেই তার ইঙ্গিত। ট্রেলারে প্রথমে নজর কাড়ে আদিত্য রায় কাপুর ও সারা আলি খানের জুটি। তারা শহরের নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। চশমা চোখে, ছোট চুলে সারা যেন এক সহজ, বাস্তববাদী চরিত্র। তাঁর প্রেমে দ্বিধা আছে, আছে অনিশ্চয়তা, আবার একরকম তীব্র টানও। আদিত্যকে সেই অনিশ্চয়তার মাঝে পরিণত প্রেমিকের মতোই শান্ত ও সাবলীল মনে হয়। দু’জনের কেমিস্ট্রি ট্রেলারে যেমন মায়া তৈরি করে, তেমনি হাসিও জাগায়। এরপরে আসে আলি ফজল ও ফাতিমা সানা শেখের জুটি। অনুরাগ তাদের মাধ্যমে বর্তমান সময়ের ‘লাভ-সেক্স-ধোঁকা’ থিমটি তুলে ধরেছেন। তাদের গল্প যেন একঝাঁক সাহসী প্রজন্মের প্রতিচ্ছবি, যারা অনুভূতির চেয়ে অভিজ্ঞতাকে বেশি গুরুত্ব দেয়, আবার ভালোবাসা হারিয়ে গেলে কাঁদতেও জানে। ফাতিমার চরিত্রে একঝলক দেখা গেছে দ্বন্দ্ব আর আকাঙ্ক্ষার জটিলতা, যা কিছুটা মনে করিয়ে দেয় অনুরাগের আগের ছবির কঙ্গনা রানাওয়াতকে। 
তৃতীয় জুটিতে আছেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী ও কঙ্কণা সেন শর্মা। দু’জনেই বাস্তব অভিনয়ের মানদণ্ড। মাঝবয়সী সম্পর্কের মাঝে কীভাবে গুমরে ওঠে অভিমান, অসম্পূর্ণতা আর স্মৃতির ছায়া, তা ফুটে উঠেছে তাদের চোখের ভাষায়। কঙ্কণাকে পর্দায় দেখলে মনে পড়ে যায় ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’তে তাঁর ইরফান খানের সঙ্গে সম্পর্কের অসাধারণ রসায়ন। 

শেষে আসে অনুপম খের ও নীনা গুপ্তার ষাটোর্ধ্ব জুটি। বয়স যতই বাড়ুক, প্রেম তো থাকে একইরকম। হয়তো তা আর চিঠিতে লেখা হয় না, কিন্তু চোখে ভেসে ওঠে। এই জুটির মধ্যে রয়েছে গভীর সংলাপ, দীর্ঘশ্বাস, আর একরাশ অতীত। তাদের দৃশ্য যেন বলে–ভালোবাসা কখনোই বৃদ্ধ হয় না।

ছবির আরেক গুরুত্বপূর্ণ দিক–মিউজিক। প্রীতম আবারও অনুরাগের সঙ্গে। ট্রেলারে অরিজিৎ সিংয়ের কণ্ঠে যে গান শোনা গেছে, তা একবারেই বলে দেয়, মেট্রোর মতোই সুরেও চলবে অনুভূতির ট্রেন। প্রতিটি গানের কথা যেন গল্পের সংলাপ। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন ঋতু শর্মা ও রোহিত সরাফ, যারা গল্পের কিছু মোড়কে নীরব ভূমিকা রাখেন। তাদের চরিত্র এখনও পুরোপুরি উন্মোচন করা হয়নি, কিন্তু ট্রেলারে তাদের উপস্থিতি যেন এক রকম অপ্রত্যাশিত সংযোজন। 

ছবির প্রেক্ষাপট কলকাতা, মুম্বাই, দিল্লি ও বেঙ্গালুরু। চার শহরের আলাদা স্বাদ। প্রেম সেখানে শুধু অনুভূতি নয়, বরং এক ধরনের টিকে থাকার উপায়। ভালোবাসা এখানে লাইট অ্যাকশনের মোড়কে আসে, কিছুটা কমেডি হয়ে হাসায়, আবার কিছুটা চোখ ভিজিয়েও দেয়। 

তবে এই ছবির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে অনিচ্ছা সত্ত্বেও উঠে এসেছে সারা আলি খানের লুক। ছোট চুল, সাধারণ জামাকাপড়, চোখে চশমা–এই লুককে ঘিরে তুলনা চলছে কৃতি স্যানন থেকে ক্যাটরিনা কাইফ, এমনকি ‘হামসাকল’ সিনেমায় সাইফ আলি খানের নারীবেশ পর্যন্ত! কেউ বলছেন ‘জেরক্স কপি’, কেউ বলছেন ‘বাবাই বেশি সুন্দর!’ ট্রলের মাঝে সারা অবশ্য শান্ত, জানেন এসব থামবে না। বরং মায়ের দুঃখে তাঁর কষ্ট হয়। তবু এই বাস্তবচেতনায় তৈরি চরিত্রকে নিয়ে সারা বলেন, ‘এই চরিত্রটি গ্ল্যামারাস নয়, বরং অনেক বেশি বাস্তবিক। এরকম শহুরে মেয়ের চরিত্র আগে করিনি।’ অনুরাগ বসুকে নিয়ে আবেগঘন স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন তিনি–ওনার ‘মেট্রো’ দেখে ওনার প্রেমে পড়েছিলাম, আজ আমি নিজেই ওনার ছবির নায়িকা। এখন প্রশ্ন একটাই–এটি কি সিকুয়াল? নির্মাতারা কিছু না বললেও স্পষ্ট, গল্প আলাদা হলেও কাঠামো, আবেগ আর চরিত্র গঠনে ‘লাইফ ইন অ্যা মেট্রো’র ছায়া রয়েছে। একরকম নস্টালজিয়ার নতুন মোড়ক বলা চলে।  ‘মেট্রো ইন দিনো’ মুক্তি পাচ্ছে আগামীকাল শুক্রবার ৪ জুলাই। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ