Samakal:
2025-05-01@02:23:18 GMT

যেমন ছিল সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব

Published: 16th, January 2025 GMT

যেমন ছিল সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব

ভাষার ভিত্তিতে গঠিত বাংলাদেশ একটি জাতিরাষ্ট্র। জাতিরাষ্ট্রের আত্মপরিচয়ে সংস্কৃতির পরিচয় মুখ্য। সেই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির জাগরণী ভূমিকায় আমৃত্যু তৎপর ছিলেন নাট্যকার সেলিম আল দীন। তাঁর ১৮তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে  ১০, ১১, ১২, ১৩ জানুয়ারি শিল্পকলায় আয়োজিত ‘সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব ও ৭৫তম জয়ন্তী’র সেমিনারে গবেষক আবু সাঈদ তুলুর বক্তব্যে এমনটিই ফুটে উঠেছিল। আয়োজন করেছিল সেলিম আল দীন সংগ্রহশালা। চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে প্রতিদিন একটি করে সেমিনার, সেলিম আল দীন তথ্য প্রদর্শনীসহ ঐতিহ্যবাহী গাজীর গান ও সেলিম আল দীন রচিত নাটকের উপস্থাপনও ছিল। আয়োজকদের উদ্দেশ্য ছিল সেলিম আল দীনের দর্শন-চিন্তা-কর্মকে তরুণ প্রজন্মের কাছে পরিচিত করিয়ে তাদের দেশীয় সংস্কৃতির বিকাশী মনোবৃত্তিতে আগ্রহী করে তোলা। আহ্বায়ক মো.

কামরুল হাসান খান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে সবাইকে সেলিম আল দীন চর্চার ব্যাপকতা জাতীয়ভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। 

চার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানে ১০ জানুয়ারি, বিকেল ৪টায় শিল্পকলা একাডেমির কনফারেন্স কক্ষে উদ্বোধন ও উদ্বোধনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ। তিনি তাঁর বক্তব্যে বাংলা নাটক বিশ্বমুখী করার পেছনের কারিগর হিসেবে সেলিম আল দীনকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। উদ্বোধনের পর প্রথম সেমিনারের সভাপতি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘একশত বছরে বড় যে সংখ্যক লেখক বাংলা ভাষায় হওয়া উচিত ছিল– তা হয়নি। যতজন হয়েছেন, তাদের ভেতর সেলিম আল দীন একজন।’

‘সেলিম আল দীন স্মরণোৎসব ও ৭৫তম জয়ন্তী’র চার দিনের ৪টি সেমিনারে প্রবন্ধ পাঠ করেন যথাক্রমে– জাহারাবী রিপন, লাবণ্য মণ্ডল, তারেক রেজা ও আবু সাঈদ তুলু। সেমিনারগুলোয় আলোচকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইউসুফ হাসান অর্ক, হামিম কামরুল হক, কুদরত ই হুদা, সোহেল হাসান গালিব, রকিব লিখন, অনিকেত শামীম, ইসলাম শফিক, অসীম কুমার নট্ট, জাহিদ রিপন, ফজলে রাব্বি সুকর্ন প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন যথাক্রমে– মোহাম্মদ আজম, শহীদুল মামুন, ফয়েজ আলম ও গোলাম শফিক। ১২ ও ১৩ জানুয়ারি বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল হলের লবিতে সেলিম আল দীনসংক্রান্ত তথ্য প্রদর্শনী হয়। এতে সেলিম আল দীনের ওপর ১১টি এমফিল গবেষণা, ২৫টি পিএইচডি গবেষণার নানা তথ্য প্রদর্শন করা হয়। তা ছাড়াও সেলিম আল দীনকে নিয়ে নানা গ্রন্থ, পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা, নানা ধরনের প্রবন্ধ প্রদর্শন করা হয়। সেলিম আল দীননির্ভর বৈচিত্র্যময় নানা তথ্য-ডকুমেন্ট প্রদর্শন করা হয়। 

১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এক্সপেরিমেন্টাল হলে সন্ধ্যা ৭টায় প্রদর্শিত হয় গাজীর গান। গাজীর গান পরিবেশন করেন মানিকগঞ্জের জামশা থেকে আসা আজিজের দল। প্রায় দু’ঘণ্টা সময় টান টান উত্তেজনায় নৃত্য-গীত-অভিনয় সহযোগে বাংলার ঐতিহ্যবাহী গায়েন রীতিতে গাজীর জন্মখন্ডের পালাটি উপস্থাপিত হয়। ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টায় এ হলে প্রদর্শিত হয় সেলিম আল দীন রচিত নাটক ‘ধাবমান’। নাটকটি পরিবেশন করেন সেলিম আল দীন প্রতিষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ। তৃতীয় বর্ষের ছাত্র-ছাত্রীরা অভিনয়সহ উপস্থাপনার কুশলীর ভূমিকা পালন করেন। নাটকটির নির্দেশনা দেন সেলিম আল দীনের ছাত্র আনন জামান। জীবের মুক্তি পালানোর মধ্য দিয়ে হতে পারে না। জীবনের অনিবার্যকে মানার মধ্যে মুক্তি। মৃত্যুর মধ্যে প্রকৃত মুক্তি এমনই ভাব ফোটে ওঠে নাটকে। একটি ষণ্ড মহিষকে কেন্দ্র করে এ নাটকের আখ্যান আবর্তিত। সেলিম আল দীন তাঁর শিল্পাদর্শে উপনিবেশের জ্ঞানতত্ত্বকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। 

নাট্যকার-অধ্যাপক আনন জামান নির্দেশিত সেলিম আল দীন রচিত এ ‘ধাবমান’ নাটকেও উপনিবেশ জ্ঞানাদর্শকে প্রত্যাখ্যান করে নৃত্য-গীত-অভিনয়-সংগীতের ঐক্যনির্ভর চারদিকে দর্শকবেষ্টিত মঞ্চে আবহমান বাংলা শিল্পনন্দনে উপস্থাপিত হয়। প্রাণবন্ত অভিনয়, টান টান ঘটনা বিন্যাস, কালারফুল লাইট, হৃদয়ভেদী সংগীত ও অনবদ্য নাট্য পরিবেশে অনন্য উপস্থাপন ‘ধাবমান’। চার দিনের ঢাকা পর্ব শেষে ১৪ জানুয়ারি প্রয়াণ দিবসে সাভারের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে সেলিম আল দীনের সমাধিতে সকাল ১০টায় ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য দিয়ে এ বছরের স্মরণোৎসবের সমাপ্তি ঘটে। 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ল ম আল দ ন এক ড ম র প রদর শ উপস থ প শ ল পকল পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

বকশিশের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে হত্যা: সহকর্মীর যাবজ্জীবন 

বকশিশের ১০০ টাকা না পেয়ে কাজী মারুফ নামে এক তরুণকে হত্যার ঘটনায় তার সহকর্মীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

গতকাল বুধবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক মোছা. ফরিদা ইয়াসমিন এ রায় দেন। 

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন গোলাম রাব্বী (২২)। তিনি কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে।

মামলার অভিযোগ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১০ মে সকালে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার এসকে ফিলিং স্টেশনে বকশিশের ১০০ টাকার ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বে গোলাম রাব্বী নামের এক তরুণ তার সহকর্মী কাজী মারুফে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেলে নেওয়া পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পর নিহতের মা মিনুয়ারা বেগম বাদী হয়ে রাব্বীকে একমাত্র আসামি করে সদর দক্ষিণ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ