জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, “স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারগুলো হওয়ার পর যদি আমরা নির্বাচনের দিকে যাই, তাহলে যে নির্বাচন প্রত্যাশা করছি, তা পূরণ হবে।” 

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড়ে মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

সারজিস আলম বলেন, “যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে দ্বিমত করব না। কিন্তু, আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া অবাস্তব এবং অসম্ভব। এত বড় একটি অভ্যুত্থান, এত রক্ত-জীবন গেলো; সকল কিছুর বিনিময়ে যে চাওয়া, এ চাওয়াটা কেবল একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। আমরা অবশ্যই মনে করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা যাবে, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, ছয় মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, বিচার ব্যবস্থা সংস্কার অসম্ভব।”

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের জায়গা থেকে বলেছিল, ২০২৬ সালের মাঝামাঝির আগেই নির্বাচন দেবে। অর্থাৎ, অভ্যুত্থানের দুই বছরও হচ্ছে না। তারা যদি মনে করেন, আরো ২-৪ মাস আগেই নির্বাচন দেবেন, তাও যৌক্তিক হতে পারে। আমরা এমনটাও শুনেছিলাম, ২৫ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।” 

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম বলেন, “অন্যায়-অনিয়ম ঠেকাতে প্রত্যেক জেলা ও উপজেলার মানুষকে নিয়ে গ্রুপ তৈরি করা হবে। বিগত ১৬ বছরে রংপুর বিভাগসহ পঞ্চগড় অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। কয়েকটি রাস্তা ছাড়া কিছুই হয়নি। একটা শিল্পকারখানা হয়নি। আমাদের বেশি কিছু দরকার নেই। যেটুকু পঞ্চগড়ের মানুষের পাওনা বা হক, সেটা কীভাবে আদায় করা যায়, আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করব।” 

অনুষ্ঠানে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফী, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান, গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দিপু উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/নাঈম/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে। তবে এর অপব্যবহার করা যাবে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের সদস্য জুলফিকার মাহমুদ।

রোববার উপাচার্যের সভাকক্ষে রাজনৈতিক ও সক্রিয় সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত জকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-২০২৫-এর আচরণবিধিবিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদের এক দাবির জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে ফয়সাল মুরাদ বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধির ৭–এর ঘ ধারায় বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। আমরা যারা ছোট সংগঠন, আমাদের তহবিল সীমিত। আমরা নির্বাচনী প্রচারের জন্য এআই ব্যবহার করে দু-এক মিনিটের ভিডিও বানিয়ে প্রচার কার্যক্রম চালাতে চাই। আমাদের দাবি, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যেন শিথিল নীতি গ্রহণ করে।’

মুরাদ আরও বলেন, বিগত চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কিছু ত্রুটি লক্ষ করা গেছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও বিতর্কমুক্ত রাখার জন্য যতগুলো ভোটকক্ষ থাকবে, সব কটি সিসিটিভি ফুটেজের আওতায় রাখতে হবে। সবার জন্য সেই সিসিটিভি ফুটেজ উন্মুক্ত রাখতে হবে। ভোট গ্রহণকে স্বচ্ছ রাখার জন্য ভোটকক্ষের ভেতরে জাতীয় গণমাধ্যমকে সরাসরি সম্প্রচার করার অনুমতি দেওয়ার কথা বলেন তিনি।

দাবির পরিপ্রেক্ষিতে জকসুর নির্বাচন কমিশনার জুলফিকার মাহমুদ বলেন, ‘এআই ব্যবহার করে বিভিন্নজনের চরিত্র হনন করা হয়, অপপ্রচার চালানো হয়। সেদিক থেকে চিন্তা করে এআই ব্যবহার নিষিদ্ধ রেখেছিলাম। তোমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এআই ব্যবহারে শিথিলতা থাকবে প্রচার–প্রসারে, তবে অপব্যবহার করা যাবে না। আর সরাসরি সম্প্রচারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আলোচনা করে।’

প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোস্তফা হাসানের সভাপতিত্বে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল শিক্ষার্থী সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচন কমিশনার ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রিয়াশীল সংগঠন ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ