গান প্রকাশ করা ছিল এক ধরনের বিলাসিতা: অবন্তি সিঁথি
Published: 20th, January 2025 GMT
অবন্তি সিঁথি। এ সময়ের আলোচিত কণ্ঠশিল্পী। সম্প্রতি নাটাই মিউজিক থেকে প্রকাশিত হয়েছে তানজীব সারোয়ারের সঙ্গে গাওয়া দ্বৈত গান ‘প্রেমের টান’। এ আয়োজন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ িনিয়ে কথা হয় তাঁর সঙ্গে...
প্লেব্যাকের বাইরে এই প্রথম তানজীব সারোয়ারের সঙ্গে দ্বৈত গান গাইলেন। ‘প্রেমের টান’ গানটি নিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
মাত্র তিন দিন আগে ‘প্রেমের টান’ গানটি প্রকাশ করা হয়েছে। এই অল্প সময়ে শ্রোতাদের কাছে যে সাড়া পেয়েছি, তা আমাকে আশাবাদী করে তুলেছে। আমার ধারণা, যত দিন যাবে, গানের শ্রোতা তত বাড়বে। মূলত শ্রোতাদের প্রত্যাশা থেকেই এই ধারণা তৈরি হয়েছে। কারণ, ‘সুরঙ্গ’ সিনেমায় তানজীবের সঙ্গে গাওয়া ‘গা ছুঁয়ে বল’ গানটি অনেকে ভীষণ পছন্দ করেছেন। তখন থেকেই চাইছিলেন আমরা যেন এমন আরও কিছু গান গাই। সে কারণেই তানজীব মেলোডি সুরে ‘প্রেমের টান’ গানটি তৈরি করেছেন। সংগীতায়োজনের জন্য বেছে নিয়েছেন সাজিদ সরকারকে। আমি ও তানজীব দু’জনেই চেষ্টা করেছি, গায়কীর মধ্য দিয়ে গানটি শ্রুতিমধুর করে তোলার।
শুনেছি, ‘প্রেমের টান’ গানটি অনেক দিন আগে তৈরি করা। তাহলে প্রকাশ করতে এতটা সময় নেওয়ার কারণ?
গত কয়েক মাস আমরা যে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছি, তাতে নতুন গান প্রকাশ করা ছিল এক ধরনের বিলাসিতা। সে কারণে গান প্রকাশে একটু সময় নেওয়া।
আজকাল নাটকেই বেশি প্লেব্যাক করতে দেখা যাচ্ছে, কারণ কী?
এখন টিভি নাটকের গল্পেও অনেক বিষয় বৈচিত্র্য উঠে আসছে। যেজন্য গল্পের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের গান। সিনেমার ক্যানভাসটা নাটকের চেয়ে বড়– এটুকু যা পার্থক্য। তাই সিনেমার মতোই আনন্দ পাচ্ছি, নাটকের গানে প্লেব্যাক করে।
ভার্সেটাইল শিল্পী হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার ইচ্ছা বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে মেলোডি গানই প্রাধান্য দিচ্ছেন?
মেলোডি গানের আবেদন সবসময় ছিল। তাই চাইলেও মেলোডি থেকে দূরে সরে থাকা সম্ভব নয়। আবার কথা সত্যি যে, ভার্সেটাইল শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই গানের ভুবনে পা রেখেছিলাম। এখনও চেষ্টা করে যাচ্ছি। বেশ কিছুদিন ধরেই চাইছি, গায়কীতে নিজেকে ভেঙে আরও নতুনভাবে তুলে ধরতে। যেজন্য গান নিয়ে একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট করে যাচ্ছি।
নতুন আর কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
এর মধ্যে একক গানের পাশাপাশি এ সময়ের আলোচিত কয়েকজন শিল্পীর সঙ্গে কয়েকটি দ্বৈত গান গেয়েছি। সেগুলো বছরের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকাশ পাবে। এর বাইরে আমার জীবনসঙ্গী অমিত দে’র সঙ্গে একটি এক্সপেরিমেন্টাল প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। সেখানে সুরকার ও সংগীত পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন মিঠুন চক্র। সঙ্গে আরও আছেন গীতিকার রাসেল রহমান। এরই মধ্যে আমরা ‘সহসা’ শিরোনামে একটি গান তৈরি করেছি। সামনে আরও কিছু কাজের পরিকল্পনা আছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বছরে ৬ লাখ অপরিণত শিশুর জন্ম
দেশে বছরে গড়ে জন্ম নিচ্ছে প্রায় ৬ লাখ অপরিণত (প্রিম্যাচিওর) শিশু। জন্মের সময় গর্ভকাল পূর্ণ না হওয়ায় এসব নবজাতকের ঝুঁকি থাকে নানা জটিলতায় পড়ার, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে বেশি। তাই নবজাতকদের মৃত্যু হ্রাসে অপরিণত নবজাতক জন্ম প্রতিরোধে সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
সোমবার শহীদ ডা. মিল্টন হলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিওন্যাটোলজি বিভাগ ও সেভ দ্যা চিলড্রেন আয়োজিত সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাদেকা চৌধুরী মনি। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইসমত জাহান। তিনি বলেন, মা ও অপরিণত নবজাতকদের জীবন রক্ষাকারী প্রকল্প সেভিং উইমেন এন্ড প্রিমেচিউর বেবিজ বা সোয়াপের মাধ্যমে দেশের পাচঁটি হাসপাতাল মা ও নবজাতক সেবা দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১ লাখ ৬৫ হাজার গর্ভবতী মা ও ৮৭ হাজার নবজাতককে সেবা পেয়েছে। দেড় হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য অর্জন হলো ভায়ু বাবল সিপ্যাপ, ফ্যামিলি সেন্টার কেয়ার, ক্যাঙ্গারু মাদার কেয়ার, নিওনেটালি লাইভ ইত্যাদিকে সফলভাবে প্রয়োগ করে নবজাতকদের জীবন রক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গেছে।
বিএমইউর নিওনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল মান্নান বলেন, বাংলাদেশে বছরে ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। সেই হিসেবে বছরে অপরিণত ৬ লাখ শিশু জন্মায়। নবজাতকের মৃত্যুহার হ্রাস পেলেও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতি হাজার জীবিত জন্মে বর্তমানে নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জন থেকে ১২ জনে কমিয়ে আনা। যদিও এই প্রকল্পের কার্যক্রমসহ সামগ্রিক প্রচেষ্টায় নবজাতকের মৃত্যুহার ২০ জনে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
বিএমইউর ফিটোম্যাটার্নাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. তাবাসসুম বলেন, নবজাতকের মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো অপরিণত নবজাতকের জন্ম দান। বাংলাদেশে প্রতি বছর ৩০ লাখ নবজাতকের জন্ম হয়। যার মধ্যে শতকরা ২০ শতাংশই অপরিণত নবজাতক এবং বিশ্বের মধ্যে এই হার সর্বোচ্চ। গত ১০ বছর ধরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়। এটি প্রতিরোধে আমাদের উদ্যোগ নেই। কেনো কমানো যাচ্ছে না এবিষয়েও কোনো গবেষণা হয় না। তবে সচেতনতা, প্রসূতি সেবা এবং মাতৃস্বাস্থ্য কার্যক্রম জোরদার করলে এ সমস্যা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। অপরিণত শিশুর জন্মের পেছনে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্যের অবনতি, অপুষ্টি, সময়মতো প্রসবপরিচর্যার অভাব, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও প্রসবকালীন জটিলতা। এ ছাড়া ধূমপান, অনিয়ন্ত্রিত ওষুধ সেবন এবং অল্প বয়সে গর্ভধারণও অন্যতম কারণ।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, সোয়াপের মাধ্যমে নবজাতকদের পরিবার কেন্দ্রিক চিকিৎসা (ফ্যামিলি সেন্টারড কেয়ার-এফসিসি) মা ও শিশুর জীবন রক্ষায় বিরাট অবদান রাখছে। এই পদ্ধতিকে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে বৃহৎ আকারে কাজে লাগাতে পারলে সমগ্র স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর গবেষণা ও উন্নয়ন অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান।