বোর্ডের চাপে ১ যুগ পর রঞ্জি ট্রফিতে ফিরছেন কোহলি
Published: 21st, January 2025 GMT
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কড়াকড়ির ফলে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরছেন ভারতের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। দীর্ঘ ১২ বছর পর সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন বিরাট কোহলি। আসন্ন রঞ্জি ট্রফির শেষ রাউন্ডের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দিল্লির হয়ে মাঠে নামবেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।
দিল্লির কোচ শরণদীপ সিং নিশ্চিত করেছেন, ৩০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা রেলওয়ের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা যাবে কোহলিকে। তবে ২৩ জানুয়ারি সৌরাষ্ট্রের বিপক্ষে দিল্লির আগের ম্যাচে থাকবেন না কোহলি। ওই ম্যাচে দিল্লির হয়ে খেলবেন ঋষভ পন্ত ও রবীন্দ্র জাদেজা।
কোহলি বিসিসিআইকে জানিয়ে রেখেছেন যে, ঘাড়ের ব্যথা থেকে তিনি এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। সুস্থ হতে ৮ জানুয়ারি তিনি একটি ইনজেকশন নিয়েছেন। তাই পুরোপুরি প্রস্তুত হতে তিনি আরও কিছুটা সময় নিচ্ছেন।
বিসিসিআইয়ের সাম্প্রতিক নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারির ম্যাচে মাঠে নামবেন রোহিত শর্মা, শুভমান গিল এবং যশস্বী জয়সোয়াল।
তবে কোহলির রঞ্জি ট্রফিতে খেলার বিষয়ে জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্ট বা নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকারকে কিছু জানিয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, রঞ্জির ম্যাচটি শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। ফলে সিরিজের আগে কোহলির হাতে থাকবে মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতির সময়।
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পর বিসিসিআই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। হেড কোচ গৌতম গম্ভীর, অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকারের সঙ্গে আলোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার মধ্য দিয়ে খেলোয়াড়দের ফর্ম ও মান ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছে বিসিসিআই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।
অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।
মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।
শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।
কর্মসূচিশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।