ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কড়াকড়ির ফলে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরছেন ভারতের জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। দীর্ঘ ১২ বছর পর সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছেন বিরাট কোহলি। আসন্ন রঞ্জি ট্রফির শেষ রাউন্ডের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে দিল্লির হয়ে মাঠে নামবেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক।  

দিল্লির কোচ শরণদীপ সিং নিশ্চিত করেছেন, ৩০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা রেলওয়ের বিপক্ষে ম্যাচে দেখা যাবে কোহলিকে। তবে ২৩ জানুয়ারি সৌরাষ্ট্রের বিপক্ষে দিল্লির আগের ম্যাচে থাকবেন না কোহলি। ওই ম্যাচে দিল্লির হয়ে খেলবেন ঋষভ পন্ত ও রবীন্দ্র জাদেজা।  

কোহলি বিসিসিআইকে জানিয়ে রেখেছেন যে, ঘাড়ের ব্যথা থেকে তিনি এখনও পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। সুস্থ হতে ৮ জানুয়ারি তিনি একটি ইনজেকশন নিয়েছেন। তাই পুরোপুরি প্রস্তুত হতে তিনি আরও কিছুটা সময় নিচ্ছেন।  

বিসিসিআইয়ের সাম্প্রতিক নির্দেশনায় কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী ২৩ জানুয়ারির ম্যাচে মাঠে নামবেন রোহিত শর্মা, শুভমান গিল এবং যশস্বী জয়সোয়াল।  

তবে কোহলির রঞ্জি ট্রফিতে খেলার বিষয়ে জাতীয় দলের ম্যানেজমেন্ট বা নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকারকে কিছু জানিয়েছেন কিনা, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। উল্লেখ্য, রঞ্জির ম্যাচটি শেষ হবে ২ ফেব্রুয়ারি এবং ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। ফলে সিরিজের আগে কোহলির হাতে থাকবে মাত্র তিন দিনের প্রস্তুতির সময়।  

টেস্ট ক্রিকেটে ভারতের সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পর বিসিসিআই কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। হেড কোচ গৌতম গম্ভীর, অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও নির্বাচক প্রধান অজিত আগারকারের সঙ্গে আলোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নেয়। কেন্দ্রীয় চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার মধ্য দিয়ে খেলোয়াড়দের ফর্ম ও মান ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়েছে বিসিসিআই। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব র ট ক হল

এছাড়াও পড়ুন:

বিজিবিতে চাকরি পেলেন ফেলানীর ছোট ভাই

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী খাতুনের ছোট ভাই আরফান হোসেন (২১) বিজিবির সিপাহি পদে চাকরি পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লালমনিরহাটে ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এ সময় আরফান হোসেনের বাবা মো. নুরুল ইসলামও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

সাতক্ষীরা সীমান্তে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর

কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি 

এর আগে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৫ বিজিবি আয়োজিত সিপাহি নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হন আরফান হোসেন।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম বলেন, ‘‘বিজিবি সর্বদা ফেলানীর পরিবারের পাশে আছে। ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবি নিয়োগ পরীক্ষায় সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ শুরু করবেন। আমরা আশা করি, প্রশিক্ষণ শেষ করে তিনি একজন যোগ্য বিজিবি সদস্য হিসেবে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করবেন।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘সীমান্তে ফেলানী হত্যার মতো নৃশংস ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে বিজিবি সর্বদা সীমান্তে অত্যন্ত সতর্ক ও সচেষ্ট রয়েছে।’’

আরফান হোসেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনটারী গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা নুর ইসলাম দিনমজুর ও মা জাহানারা বেগম গৃহিণী। পরিবারের অন্য দুই ভাইয়ের মধ্যে জাহান উদ্দিন স্নাতক পড়ছেন এবং আক্কাস আলী পড়ছেন এইচএসসিতে। দুই বোন মালেকা খাতুন ও কাজলী আক্তারের বিয়ে হয়েছে।

আরফান হোসেন বলেন, ‘‘ফেলানী হত্যার পর সারা দেশের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছিল, তখন থেকে ইচ্ছে ছিল; বিজিবিতে চাকরি করব। আজ সেই স্বপ্ন পূর্ণ হলো। আমি দেশের মানুষের জন্য কাজ করব।’’

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘‘ভারত থেকে ফেরার পথে আমার নাবালিকা মেয়েকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখে বিএসএফ। সেই দৃশ্য আজও ভুলতে পারিনি। তবে, দেশবাসী আর বিজিবি সব সময় আমাদের পাশে ছিল। আজ আমার ছেলে মেধা ও যোগ্যতায় বিজিবিতে সুযোগ পেয়েছে। এটা আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।’’

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া পার হওয়ার সময় বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় কিশোরী ফেলানী। তার নিথর দেহ কাঁটাতারের বেড়ায় দীর্ঘ সাড়ে চার ঘণ্টা ঝুলে ছিল। সেই ছবি ছড়িয়ে পড়লে দেশ-বিদেশে নিন্দার ঝড় উঠে।

ঢাকা/সৈকত/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ