কঙ্গোতে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৩ শান্তিরক্ষী নিহত
Published: 26th, January 2025 GMT
মধ্য আফ্রিকার দেশ ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে (ডিআর কঙ্গো) জাতিসংঘের ১৩ জন বিদেশি শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন। বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম২৩ এর সঙ্গে সংঘর্ষে তারা নিহত হয়েছেন।
রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। নিহত শান্তিরক্ষীদের ৯ জনই দক্ষিণ আফ্রিকার।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বাহিনীর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, গোমা শহরের কাছে বিদ্রোহীদের প্রতিহত করার সময় তাদের ৯ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া তিনজন মালাউইয়ান এবং একজন উরুগুয়ের সৈন্যও প্রাণ হারিয়েছেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ডিআর কঙ্গো ও রুয়ান্ডার নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং সহিংসতা বন্ধে বিশ্বব্যাপী আহ্বানের কথা উল্লেখ করেছেন।
ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক সোমবারের পরিবর্তে আজ রোববারেই ডাকা হয়েছে।
জাতিসংঘের পক্ষ থেকে গোমা শহর থেকে সব অপ্রয়োজনীয় কর্মী সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। ১০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস এই শহরে, যেখানে লড়াই ক্রমশ তীব্র হচ্ছে।
এদিকে এম২৩ বিদ্রোহীরা গোমার কঙ্গো সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে, ডিআর কঙ্গো প্রতিবেশী রুয়ান্ডার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে এবং রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ এনেছে।
এই পদক্ষেপ এসেছে এম২৩-এর দ্বারা এক কঙ্গোলিজ সামরিক গভর্নরের হত্যা পরবর্তী সময়ে। এই গভর্নর বৃহস্পতিবার সম্মুখসারিতে সফরকালে নিহত হন। জানুয়ারির শুরুতে এম২৩ পূর্ব কঙ্গোর গুরুত্বপূর্ণ শহর মিনোভা ও মাসিসি দখল করে।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সতর্ক করেছে যে, কঙ্গো সেনাবাহিনী ও এম২৩ বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই বেসামরিক জনগণের জন্য বড় বিপদ বয়ে আনছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের জন্য যা যা করা দরকার, সব করেছেন আহমদ ছফা
আহমদ ছফাকে বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই সহ্য করতে পারতেন না। কিন্তু তাঁর বেশির ভাগ কথা এখন সত্যে পরিণত হয়েছে। দেশের সঙ্গে তিনি প্রাণকে যুক্ত করেছিলেন। দেশকে ভালোবেসে যা যা করা দরকার, তার সবকিছু করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতায় সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন। এশীয় শিল্পী ও সংস্কৃতি সভা জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘আহমদ ছফা স্মৃতি বক্তৃতা-২০২৫’ আয়োজন করে। ‘আহমদ ছফার রাষ্ট্র বাসনা এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পরিচয়’ শীর্ষক স্মৃতি বক্তৃতা দেন বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের পরিচালক ফারুক ওয়াসিফ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক সভার সভাপতি জহিরুল ইসলাম। আহমদ ছফা (১৯৪৩–২০০১) ছিলেন লেখক, প্রগতিশীল সাহিত্যকর্মী ও রাজনৈতিক চিন্তক।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘আহমদ ছফা ছিলেন মূলত সাহিত্যিক। তবে তিনি সাহিত্যের গণ্ডি পেরিয়ে চিন্তাকে রাষ্ট্রভাবনা বিষয়ে প্রসারিত করেছিলেন। তিনি ছিলেন অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। তিনি এমন বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছিলেন, তা অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না।’ ছফা বলেছিলেন, ‘বিপ্লবের একটি নতুন ভাষা থাকতে হবে। মানুষের রাষ্ট্রের বাসনা বুঝতে হবে। দেশটা আমার নিজের বলে মনে করলে তার সমস্যার সমাধানও আমার নিজের মতো করেই ভাবতে হবে।’
স্মৃতি বক্তৃতায় ফারুক ওয়াসিফ বলেন, আহমদ ছফা রাষ্ট্র নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে ধরনের দেশ সেই বৈশিষ্ট্যকে ধারণ করার মতো কোনো তাত্ত্বিক রাজনৈতিক রূপরেখা নেই। কোনো রাজনৈতিক দলও নেই।
ফারুক ওয়াসিফ বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বপরিকল্পনা ছিল না। একাত্তর ছিল অপরিকল্পিত। একইভাবে জুলাই অভ্যুত্থানও হয়েছে অপ্রস্তুতভাবে। এখন জুলাইয়ের নেতারা প্রান্তিক শক্তিতে পরিণত হয়েছেন। বড় দলের যে সামর্থ্য আছে, সেই শক্তি–সামর্থ্য তাদের নেই। তারা মিত্রহীন হয়ে পড়েছে।’
আহমদ ছফার বন্ধু ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, জনগণ রাষ্ট্রের পরিবর্তন চেয়েছিল। বাংলাদেশের নবীন প্রজন্ম সেই পরিবর্তন ঘটিয়েছে। সারা বিশ্ব দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। এখন একটি নতুন রাজনীতি দরকার।