পঞ্চবীথি ক্লাব ‘দখল’ করে টানানো হলো গণঅধিকার পরিষদের ব্যানার
Published: 27th, January 2025 GMT
খুলনা নগরীর পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্রের কার্যালয়ের জায়গায় গণঅধিকার পরিষদের ব্যানার টানানো হয়েছে। ক্লাব সদস্যদের অভিযোগ, আজ সোমবার দোতলা ভবনের তালা ভেঙে পঞ্চবীথির সাইনবোর্ড ফেলে দিয়ে সেখানে গণঅধিকার পরিষদের ব্যানার টানান নেতাকর্মী। ব্যানারের কথা স্বীকার করলেও দলটির নেতারা বলছেন, তারা অবৈধভাবে দখল করেননি।
নগরীর শান্তিধাম মোড়ের একটি দোতলা ভবনে প্রায় ১৪ বছর ধরে পঞ্চবীথি ক্রীড়া চক্রের কার্যালয় রয়েছে। ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল মোল্লা জানান, ভবনটি গণপূর্ত বিভাগের কাছ থেকে বরাদ্দ নিয়ে তারা ক্লাবের কার্যালয় করেন। বরাদ্দ নেওয়ার পর যুবলীগ নেতা নাহিদ মুন্সী তাঁর মায়ের নামে ভুয়া বরাদ্দ নিয়ে আসেন। এ নিয়ে আদালতে মামলা করে ক্লাব কমিটি। মামলাটি আদালতে চলমান। বরাদ্দ নেওয়ার পর থেকেই ভবনটিতে পঞ্চবীথির কার্যালয় রয়েছে।
নাজমুল মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, ‘গণঅধিকার পরিষদের ১৫-২০ জন নেতাকর্মী গতকাল দুপুরে ক্লাবের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। তারা আমাদের সাইনবোর্ড নামিয়ে তাদের ব্যানার ঝুলিয়ে দেন। আমরা ক্লাবের সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’
ক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘ভবনের নিচতলার একটি ও দোতলার চারটি কক্ষে পঞ্চবীথির কার্যক্রম চলে। অন্যান্য কক্ষে একাধিক সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের কার্যালয় রয়েছে। গতকাল গণঅধিকার পরিষদের লোকজন ক্লাব ভবন দখল করে নিয়েছে।’
বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, ভবনের দোতলায় পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের সাইনবোর্ডের জায়গায় ‘গণঅধিকার পরিষদ, খুলনা মহানগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার ঝুলছে। গণঅধিকার পরিষদের কয়েক নেতাকর্মী ভবনের সামনে চেয়ার নিয়ে বসে আছেন। কয়েকজন দাঁড়িয়ে আছেন দোতলার বারান্দায়।
ক্লাব সদস্য সাংবাদিক আবু হেনা মোস্তফা জামাল পপলু বিকেলে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘রাজনৈতিক দলের নামে সরকারি সম্পত্তি ও ক্লাব দখল করল গণঅধিকার পরিষদ, খুলনা। দখল হয়ে গেল খুলনার পঞ্চবীথি ক্লাব’। তাঁর পোস্টের নিচে অনেকেই ‘কাজটি ঠিক হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন।
এ ব্যাপারে গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশিদুল ইসলাম রাশেদ বলেন, ‘পঞ্চবীথি ক্লাবে জুয়াসহ বিভিন্ন অপকর্ম চলত। আমাদের ছেলেরা সেগুলো বন্ধ করে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছে। ভবনটি গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের জন্য জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন প্রক্রিয়া ৭০ শতাংশ এগিয়েছে। শিগগিরই আমরা অনুমতি পেয়ে যাব। তখন ভবন ব্যবহার করব।’
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে আবারও এক শ্রমিক নিহতের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাত আটটার দিকে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
নিহত মো. রাকিব (২৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে কাজ করতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জে।
এর আগে চলতি বছরের ১ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন লাইব্রেরি ভবনের চারতলা থেকে পড়ে মো. আরিফুল নামের এক শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এর তিন মাসের মাথায় আবারও এক শ্রমিকের মৃত্যু হলো।
ভবনটির নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য নির্মাণাধীন ওই ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ করছিলেন রাকিব। শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে দিকে ভবনের জানালা দিয়ে তিনি ময়লা-আবর্জনা ফেলতে গিয়ে নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে ভবনের কর্মচারীরা উদ্ধার করে সাভারের একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান। রাত আটটার দিকে তিনি সেখানে মারা যান।
ভবনটিতে সাইট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, ভবনের ৯ম তলায় আস্তরের কাজ চলছিল। রাকিব ভবনের জানালা দিয়ে ময়লা ফেলতে গিয়ে পড়ে যান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নির্মিত এই বহুতল ভবনটির কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিন ট্রেডার্স। এই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, ভবনের মধ্যে কাজ চলছিল। ভবনটির বাইরের কাজ শেষ তাই ‘সেফটি নেট’ খুলে ফেলা হয়েছে।
মো. আজিজ জানান, রাকিবের মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ভবনটিতে কর্মরত ফোরম্যানের তত্ত্বাবধানে তাঁর মরদেহ বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক একটি ঘটনা। আমরা বারবার তাদেরকে যথাযথ সেফটি (নিরাপত্তা) নিশ্চিত করে তারপর কাজ করতে বলি। কিন্তু অনেক সময় এসব কর্মচারীরা মানে না। এ বিষয়ে প্রকল্প অফিস ও প্রশাসন থেকে বারবার তাদের তাগাদা দেওয়া হয়। এরপরও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেল।’