দাউ দাউ করে জ্বলছে ঘর। বাইরে শত শত মানুষ আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায় ব্যস্ত। পুড়তে থাকা সারা ঘরের বাকি শুরু যৎসামান্য জানালার কাছে অংশটি, সেখানে দাঁড়িয়ে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা আটকা পড়া কিশোরের। একপর্যায়ে আটকা পড়া কিশোরের কান্না শুনে তাকে রক্ষা করতে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কিন্তু ঘর থেকে তাকে বের করার কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না তারা। বাধ্য হয়ে কুড়াল দিয়ে জানালার পাশের অংশ ভেঙে বের করে আনা হয় ওই কিশোরকে। যদিও ততক্ষণে পুড়ে গুরুতর আহত ওই কিশোর। বিষয়টি মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভা এলাকায়।

গুরুতর আহত কিশোরের নাম নিতুন সরকার (১৫)। সে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার বাসিন্দা নিমাই সরকারের ছেলে। গোয়ালন্দে তার পরিবার ভাড়া বাসায় বসবাস করে। নিতুন স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের হাসেম বেপারীর বাড়িতে মঙ্গলবার বিকেলের দিকে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুনে দগ্ধ হয়েছেন আরও দুজন।

ফায়ার সার্ভিস স্টেশন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির ভাড়াটিয়া দীনবন্ধুর ঘর থেকে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। দ্রুত সময়ের মধ্যে আগুন আশপাশের চারটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এরমধ্যেই ঘরে কিশোর নিতুনের আটকা পড়ার ঘটনা সবার নজরে আসে। 

স্থানীয়রা জানান, তারা কোনো উপায় না পেয়ে দেয়াল ভেঙে নিতুনকে উদ্ধার করে। তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরে খুশি স্থানীয়রা। 

গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের টিম লিডার মো.

সাবেকুল ইসলাম জানান, বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট হতে আগুনের সূত্রপাত হয়। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের করে ফায়ার সার্ভিস। কিন্তু সরকারি কামরুল ইসলাম কলেজ সংলগ্ন সড়কে বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখায় এবং অপরিকল্পিত ভবনের জন্য অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি ঘটনাস্থলেই পৌঁছাতে পারেনি।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি কার্যালয়ে গুলি ও বোমা হামলা, নিহত ১

খুলনা নগরের আড়ংঘাটায় কুয়েট আইটি গেট–সংলগ্ন বিএনপির কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এতে ইমদাদুল হক (৫৫) নামের এক শিক্ষক নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সোয়া নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মামুন শেখসহ আরও তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পুলিশ ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাতে মামুন শেখ স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে ওই কার্যালয়ে বসে ছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে করে আসা দুর্বৃত্তরা অফিস লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চারটি গুলি ছোড়ে। এরপর তারা পালিয়ে যায়। প্রথম গুলিটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে পাশে থাকা শিক্ষক ইমদাদুল হকের শরীরে লাগে। ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পরে আবার গুলি চালালে মামুন শেখসহ অন্য দুজন গুলিবিদ্ধ হন। পরে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা তাঁদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

নিহত ইমদাদুল বছিতলা নুরানি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। এলাকাবাসীর ভাষ্য, তিনি একটি মাহফিলের অনুদান সংগ্রহের জন্য ওই কার্যালয়ে গিয়েছিলেন।

আড়ংঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল বাসার বলেন, মামুন শেখ প্রায়ই স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ে বসে আড্ডা দেন। গতকাল রাতেও তিনি আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁকে লক্ষ্য করেই হামলা চালানো হয়েছিল। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে অভিযান চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ