এক মাসেও আসামি গ্রেপ্তার নেই, ক্ষোভ
Published: 31st, January 2025 GMT
মানিকগঞ্জের ঘিওরে কৃষক মোজাফফর হোসেন (৬৫) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হওয়া মামলার আসামিরা এক মাসেও গ্রেপ্তার হয়নি। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁর স্বজন ও এলাকাবাসী। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে গতকাল শুক্রবার মানববন্ধন করেন তারা।
এদিন দুপুরের পর ঘিওর উপজেলার বৈলতলা গ্রামে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, মোজাফফর হত্যার এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি। উল্টো আসামিরা বাদীপক্ষকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার না করলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
নিহত ব্যক্তির স্বজন ও এলাকাবাসী জানায়, বৈলতলা গ্রামে বসতবাড়ির সীমানা নিয়ে প্রতিবেশী আবদুর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মোজাফফরের বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৮ ডিসেম্বর দুপুরে রহমান বসতবাড়ির সীমানার খুঁটি তুলতে গেলে মোজাফফর বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রহমান ও তাঁর লোকজন লোহার রড দিয়ে ঘাড়ে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
এ ঘটনার পরদিন নিহত মোজাফফরের ছেলে সালমান শাহ বাদী হয়ে ঘিওর থানায় হত্যা মামলা করেন। এতে রহমানসহ সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচর আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়। সালমান শাহ বলেন, মামলার এক মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো আসামি গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মামলা তুলে না নিলে প্রধান আসামির আত্মীয়স্বজন তাদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে।
ঘিওর থানার এসআই চিন্ময় মণ্ডল বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস