বিদেশি তারকা ক্রিকেটার এনে শক্তি বাড়িয়েছে রংপুর রাইডার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আন্দ্রে রাসেল, অস্ট্রেলিয়ার টিম ডেভিড ও ইংল্যান্ডের জেমন্স ভিন্সি খেলছেন দলটির হয়ে।তবু এলিমিনেটরে খুলনা টাইগার্সের স্পিনের স্পিন ঘূর্ণিতে মহাধসে পড়ে দলটি। শেষ উইকেটে আকিফ জাভেদ কিছু রান করলেও একশ’ রান করতে পারেনি রংপুর। ১৬.৫ ওভারে ৮৫ রানে অলআউট হয়েছে।

রংপুর রাইডার্সকে শেষ চারে তুলতে বড় ভূমিকা রাখেন পাকিস্তানি দুই অলরাউন্ডার খুশদীল শাহ ও ইফতিখার আহমেদ। কিন্তু জাতীয় দলে ডাক পেয়ে খুলদীল দেশে ফিরেছেন। তারার মেলায় একাদশে সুযোগ হয়নি ইফতিখারের।

টি টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৬ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৯ রান তুলতে পারে রংপুর। নাসুম আহমেদ দুই ওভার বল করে দুই উইকেট নিয়েছেন। মিরাজ তার দ্বিতীয় ওভারে এসে উইকেট নিয়েছেন। তার প্রথম ওভারে রান আউট হন সৌম্য সরকার। ষষ্ঠ ওভারে পেস আক্রমণে এসে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ। সেখান থেকে ৫০ রানে ৭ ও ৫২ রানে ৯ উইকেট হয়ে যায় রংপুর।

পাকিস্তানি বাঁ-হাতি পেসার আকিফ ১৮ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে দলকে ওই মহাবিপর্য় থেকে রক্ষা করেন। তিনি চারটি চার ও দুটি ছক্কা মারেন। এর আগে রংপুরের  ওপেনার সৌম্য সরকার কোন বল না খেলেই শূন্য করে ফিরে যান। ইংলিশ ওপেনার ভিন্সি ৭ বল খেলে ১ রান করে বোলার নাসুমের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন। শেখ মাহেদী ৫ বল খেলে ১ রান করে বোল্ড হন। ১০ বলে ৪ রান করে ক্যাচ দেন সাইফ হাসান। সাইফউদ্দিন ৮ বলে ৮ রান করেন। আন্দ্রে রাসেল ৯ বলে ৪ রান করেন। ২৫ বলে নুরুল হাসানের ২৩ ছিল দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। 

রংপুরকে ধসিয়ে দিতে বড় ভূমিকা রেখেছেন স্পিনার মেহেদী মিরাজ ও নাসুম আহমেদ। মিরাজ ৪ ওভারে ১০ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন নাসুম। মোহাম্মদ নওয়াজ, হাসান মাহমুদ ও মুশফিক হাসান একটি করে উইকেট দখল করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল উইক ট ন য় ছ ন র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ

‘উদয়ের পথে শুনি কার বাণী/ ভয় নাই ওরে ভয় নাই/ নিঃশেষে প্রাণ যে করিবে দান/ ক্ষয় নাই তার ক্ষয় নাই’। তাঁদের নিঃশেষে প্রাণদানের স্মৃতি আজ গভীর বেদনায় স্মরণ করবে জাতি। আজ থেকে ৫৪ বছর আগে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীরা হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নীলনকশার শিকার হয়ে নির্মম হত্যার শিকার হয়েছিলেন।

অমিত বিক্রম বাঙালির জীবনপণ যুদ্ধে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর চূড়ান্ত পরাজয় তখন ছিল কেবল দিনগণনার বিষয়। সেই অনিবার্য পরাজয়ের প্রাক্কালে মরণকামড় দেওয়ার চেষ্টা করেছিল ঘাতক বাহিনী। স্বাধীনতা অর্জন করলেও বাঙালি জাতি যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেই চক্রান্ত করেছিল তারা। দেশের সেরা বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদের সরাসরি সহায়তা করেছিল তাদের মিত্র এ দেশি রাজাকার, আলবদর বাহিনী। এরাই ঘাতক সেনাদের নিয়ে গিয়ে চিনিয়ে দিয়েছে বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি। চিনিয়ে দিয়েছে সেই নিরীহ মানুষগুলোকে।

মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ে পরে মিরপুরে রায়েরবাজার পরিত্যক্ত ইটখোলা ও মিরপুরে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া সেসব বুদ্ধিবৃত্তিক পেশায় যুক্ত মানুষের মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অনেকের ছিল পিছমোড়া করে হাত ও চোখ বাঁধা। ভয়ানক নির্যাতনের চিহ্ন ছিল শরীরে। তাঁদের মরদেহ উদ্ধার হওয়ার মধ্য দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবী হত্যার গভীর ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে পড়ে। এর পর থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও শোক প্রকাশ করে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়ে আসছে।

শুধু ঢাকাতেই নয়, সারা দেশেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত মানুষদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এই হত্যাকাণ্ডের ছিল দুটি পর্যায়। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে হানাদার সেনারা রাজধানীতে গণহত্যা শুরু করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ নিরীহ জনসাধারণের পাশাপাশি শিক্ষক, চিকিৎসকদেরও হত্যা করে। এরপর থেকে হানাদাররা সারা দেশের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, সংস্কৃতিসেবীসহ মেধা মনন সৃজনশীল কাজে যুক্ত মানুষদের বেছে বেছে হত্যা করতে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে শেষ পর্যায় তারা এই বুদ্ধিবৃত্তিক মানুষদের নিঃশেষ করে দেওয়ার জন্য তালিকা করে হত্যা চালাতে থাকে। তাঁদের মধ্যে যেমন প্রবীণ প্রাজ্ঞজনেরা ছিলেন, তেমনি ছিলেন উদিত যৌবনের বহু সম্ভাবনাময় তরতাজা প্রাণ। আজ তাঁদের স্মৃতির স্মরণ করা হবে সারা দেশে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পৃথক বাণী দিয়েছেন।

কর্মসূচি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের সভায় জানানো হয়েছে, আজ রোববার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এবং ৭টা ৬ মিনিটে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন। তাঁরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে সেখানে নীরবে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন। এ সময় বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টাকে রাষ্ট্রীয় স্যালুট প্রদান করবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার পুষ্পস্তবক অর্পণের পর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরী, শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্য এবং হুইলচেয়ারধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ