শিল্পনগরী নারায়ণগঞ্জের  হোসিয়ারী সেক্টরের সবচেয়ে প্রেস্ট্রিজিয়াস নির্বাচনে নয়ামাটি, উকিলপাড়াসহ হোসিয়ারী এলাকার জনপ্রিয় নেতা আলহাজ্ব বদিউজ্জামান বদু’র প্যানেল বিজয়ী হয়েছেন। 

বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন পরিচালনা পর্ষদ ২০২৫-২৭ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। নয়ামাটি,  দেওভোগ, টানবাজার ও উকিলপাড়াসহ পুরো হোসিয়ারী এলাকায় আনন্দের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে ১৮ টি পদের জন্য ৩৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর রেজাল্ট ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনে হোসিয়ারী মালিক ঐক্যজোট প্যানেল থেকে ১৮জন, স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম থেকে ১৪ এবং স্বতন্ত্র থেকে ৪জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন।

নির্বাচনে এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৬জন নির্বাচিত হয়েছেন। হোসিয়ারী মালিক ঐক্যজোটের প্যানেল থেকে সাইফুল ইসলাম হিরু শেখ (নিউ শেখ হোসিয়ারী) ৮৬২ ভোট, সাঈদ আহমেদ স্বপন (সেহেলী হোসিয়ারী এন্ড গার্মেঃ) ৭১৯ ভোট, আলহাজ্ব মো.

নাছির শেখ (নাছির হোসিয়ারী) ৭০২ ভোট, নাছিম আহমেদ (গাজী হোসিয়ারী) ৪৯৮ ভোট।

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে নির্বাচিত হয়েছে আবদুস সোবহান তালুকদার (আদর হোসিয়ারী) ৫৭৫ ভোট, মো. বিল্লাল হোসেন (সেভেন স্টার হোসিয়ারী) ৪৯৫ ভোট পেয়ে।

এদিকে জেনারেল গ্রুপে ১২ জন নির্বাচিত হয়েছে। হোসিয়ারী মালিক ঐক্যজোট প্যানেল থেকে আলহাজ্ব বদিউজ্জামান বদু (বদিউজ্জামান টেক্সটাইল) ৮৯৩ ভোট, মোঃ আবদুল হাই (নিউ বৃষ্টি টেক্সটাইল) ৮২৭ ভোট,মোঃ মিজানুর রহমান (সায়মন হোসিয়ারী) ৮০৫ ভোট, মোঃ পারভেজ মল্লিক (নিউ লিপি হোসিয়ারী এন্ড গার্মেন্টস)৭৮৭ ভোট, আবদুস সবুর খান (সাকলাইন টেক্সটাইল) ৭৮৩ ভোট, হাজী মোঃ শাহীন হোসেন (শাহীন ট্রেডার্স) ৭৫১ ভোট, মোঃ আতাউর রহমান (গনি হোসিয়ারী এন্ড গার্মেন্টস) ৭২৭ ভোট,আলহাজ্ব মোঃ মনির হোসেন (নিউ মনির হোসিয়ারী) ৭২০ ভোট,মোঃ দুলাল মল্লিক (আদর ট্রেডার্স) ৬৯০ ভোট, মোঃ মাসুদুর রহমান (আবীর ফ্যাশন) ৬০৫ ভোট ও বৈদ্যনাথ পোদ্দার (নিউ দূরস্থ হোসিয়ারী) ৫৭২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া  স্বতন্ত্র হোসিয়ারী মালিক ঐক্য ফোরাম থেকে ফতেহ মোহাম্মদ রেজা (ফতেহ হোসিয়ারী) ৬৭০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ বিষয়ে হোসিয়ারী এসোসিয়েশন নির্বাচন কমিশনের সভাপতি, জাসাস জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আনিসুল ইসলাম সানি বলেছেন, অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোনরকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আনন্দঘন পরিবেশে ভোটাররা ভোট প্রদান করেন। নির্বাচনে এসোসিয়েট গ্রুপ থেকে ৬জন ও জেনারেল গ্রুপ থেকে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। রাতেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে ভোটের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষনা করেন।

এর আগে, উৎসবমুখর পরিবেশে সোমবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্মাণাধীন ভবনে, বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন ২০২৫-২৭ ভোট কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে মোট ১ হাজার ১৫৯ জন ভোটারদের মধ্যে ভোট পড়েছে ১ হাজার ১১৩ টি।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য মনে ৯৬.০৩ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ হোসিয়ারী এসোসিয়েশন পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচন ২০২৫-২৭। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভাবে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নির্মাণাধীন ভবনে ভোট কার্যক্রম পরিচালনা হয়।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র ব চ ত হয় ছ ন স বতন ত র আলহ জ ব

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।

নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।

নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।

তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা। 

এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।

তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা। 

এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। 

তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।

চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না। 

এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। 

এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই। 

তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো? 

আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।

এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

 এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
  • ফতুল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • সোনারগাঁয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির চিঠি
  • নারায়ণগঞ্জে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদল নেতা রিয়াদের দুই মেয়ে গুরুতর আহত : দোয়া প্রার্থনা 
  • আড়াইহাজারের সেপটি ট্যাংকির ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
  • বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে