আবারও ইতিহাস গড়লেন মেসি, দ্বিতীয়বার এমভিপি
Published: 10th, December 2025 GMT
ইন্টার মায়ামিকে প্রথমবারের মতো এমএলএস কাপ জেতানোর পর যথাযোগ্য স্বীকৃতি পেলেন লিওনেল মেসি। যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে (এমএলএস) টানা দ্বিতীয় মৌসুমে জিতলেন মর্যাদার এমভিপি (মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ার) খেতাব।
এবারের অর্জনে এক অনন্য ইতিহাসও লিখেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। এমএলএস–এ পরপর দুই মৌসুমে এমভিপি জেতা প্রথম ফুটবলার এখন তিনি। গত সপ্তাহে হেরনদের হয়ে জেতা তাদের প্রথম এমএলএস কাপই তাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলেছে।
আরো পড়ুন:
১২ বছরে ৩০ প্রচেষ্টার পর অস্ট্রেলিয়ায় সেঞ্চুরি পেলেন রুট
ওয়াসিম আকরামের রেকর্ড ভেঙে শীর্ষে স্টার্ক
এর পাশাপাশি, মেসি হলেন এমএলএস ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয় ফুটবলার যিনি একাধিকবার এমভিপি জিতলেন। এর আগে ১৯৯৭ ও ২০০৩ সালে কানসাস সিটি উইজার্ডসের প্রেদ্রাগ রাদোসাভলজেভিক এই কৃতিত্বের একমাত্র মালিক ছিলেন।
চলতি মৌসুমে মেসির হিসাবও চোখধাঁধানো। ২৯ গোল ও ১৯ অ্যাসিস্ট, যা তাকে এনে দিয়েছে গোল্ডেন বুট। এ যাত্রায় তিনি পিছনে ফেলেন ন্যাশভিল এসসি’র স্যাম স্যারিজ ও এলএএফসি’র দ্যেনিস বুয়াঙ্গাকে।
এমএলএস ইতিহাসে এক মৌসুমে অন্তত ১৮ গোল ও ১৮ অ্যাসিস্ট; এমন কীর্তিও এই প্রথম কারও দখলে এসেছে। তার মোট গোল-অবদান সংখ্যা (৪৮)। অল্পের জন্য ভাঙতে পারেনি ২০১৯ সালে কার্লোস ভেলার গড়া ৪৯–এর রেকর্ড।
প্লে-অফেও তিনি ছিলেন একই রকম উজ্জ্বল। পোস্ট সিজনে মেসির ১৫ গোল–অবদান (৬ গোল, ৯ অ্যাসিস্ট) তৈরি করেছে নতুন লিগ রেকর্ড। শেষ ম্যাচে ভ্যাঙ্কুভার হোয়াইটক্যাপসের বিপক্ষে ৩-১ জয়ে দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগো দে পল ও তাদেও আলেন্দেকে গোল বানিয়ে দেন তিনি।
২০২৩ সালের জুলাইয়ে মায়ামিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত মেসির গোল–অবদান সংখ্যা ১০১। যা এই সময়ের মধ্যে লিগে কারও নেই। এবং হেরনদের জার্সিতে প্রতি মৌসুমেই কোনো না কোনো শিরোপা জয়ের ধারাও ধরে রেখেছেন। ২০২৩ সালে লিগস কাপ ও ২০২৪ সালে সাপোর্টার্স’ শিল্ড জিতিয়েছিলেন দলকে।
গত অক্টোবরে তিনি জাভিয়ের মাশচেরানোর দল ইন্টার মায়ামির সঙ্গে ২০২৮ সাল পর্যন্ত চুক্তি নবায়ন করেছেন।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র কর ড ফ টবল এমভ প
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে আওয়ামী লীগের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মানি লন্ডারিং-১) আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় সিলেটে মামলাটি করেন।
সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ জারির পরও হিসাব দাখিল না করার পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলা হয়েছে বলে দুদক দূত্রে জানা গেছে। মামলায় সাবেক মেয়রের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। দুদক সিলেটের উপপরিচালক রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ আজ সোমবার রাত আটটার দিকে প্রথম আলোকে মামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাফী মো. নাজমুস্ সা’দাৎ জানান, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রাথমিক সত্যতা রয়েছে। এ জন্য তাঁকে নিজের সম্পদ ঘোষণার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে নির্ধারিত সময়ে সম্পদের তথ্য না দেওয়ায় কিংবা সময় বাড়ানোর আবেদন না করায় কমিশনের অনুমোদনের ভিত্তিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি (নন-সাবমিশন) দায়ের করেছেন। বিধি অনুযায়ী তদন্ত ও পরবর্তী কার্যক্রম নেওয়া হবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আনোয়ারুজ্জামান ২০২৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রায় আট মাস দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইএফআইসি ব্যাংক পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি নির্বাচনী হলফনামায় লন্ডনে তাঁর নিজ নামে থাকা ৪ হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ি, ১ হাজার ৮০০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট এবং একটি রেস্টুরেন্টের তথ্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া ঢাকার পূর্বাচলে রাজউক বরাদ্দ করা পাঁচ কাঠা জমির তথ্যও গোপন করেছেন।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ এবং ২০২৪-২০২৫ সালে দাখিল করা আয়কর রিটার্ন অনুসারে আনোয়ারুজ্জামানের মোট ৮৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার সম্পদ রয়েছে। তবে এ সম্পদ তিনি কীভাবে অর্জন করেন, এর কোনো সঠিক তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি ৯৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯৮ টাকার অগ্রহণযোগ্য নিট সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে দুদক প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হয়েছে। তবে এ নিট সম্পদের হিসাবে যুক্তরাজ্যে থাকা ফ্ল্যাট, বাড়ি ও রেস্তোরাঁর মূল্য আনা হয়নি।
দুদক বলছে, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আয়কর রিটার্নে বা নির্বাচনী হলফনামায় তাঁর সম্পদের উৎস, ধরন, সময় ও মূল্য উল্লেখ করেননি। এ ছাড়া দুদক সম্পদ বিবরণী আদেশ জারির ২১ কার্যদিবসের মধ্যে দাখিল না করায় তিনি দুদক আইন অনুযাযী শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
এদিকে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী লন্ডনে চলে যান। মামলার বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুদকের আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া। জীবনে কখনো একটি পয়সাও আমি অবৈধভাবে অর্জন করিনি। রাষ্ট্রীয় মদদে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমার সম্পর্কে মিথ্যাচার ছড়ানো হচ্ছে।’
আনোয়ারুজ্জামান দাবি করেন, ‘হলফনামায় বিদেশের সম্পদ দেখানোর কোনো অপশন ছিল না, তাই বিদেশের সম্পদ দেখাতে পারিনি। এসব আমার বহু আগে অর্জিত সম্পদ। এ ছাড়া রাজউকের প্লটটি বৈধভাবে বরাদ্দ পেলেও সেটি আমাকে এখন পর্যন্ত রেজিস্ট্রারি করে দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। তাই সেটি সম্পদ হিসেবে দেখানোর সুযোগও ছিল না। আর আইএফআইসি ব্যাংকে আমি স্বাধীন পরিচালক ছিলাম।’
আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ২০২৩ সালের ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র হন। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ১৯ আগস্ট সিলেটসহ দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার।