মাঠ থেকে বাড়ি ফেরার পথে কৃষক কুদ্দুস আলী শেখের (৬৫) পায়ে রাসেলস ভাইপার সাপ কামড় দেয়। তখন তিনি লাঠির সাহায্যে সাপটির গতি রোধ করেন। এরপর নিজেই পা বেঁধে ফেলেন, খবর দেন পরিবারের সদস্যদের। জীবিত সাপটি প্লাস্টিকের বোতলে ভরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।

গত সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী চিলমারীতে কুদ্দুস আলী শেখকে সাপ কামড় দেয়। তাঁর বাড়ি চিলমারী চরে। তিনি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কুদ্দুস আলীকে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছে। তিনি আপাতত সুস্থ। তবে ক্ষতস্থানে ফোলা রয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হবে।

কুদ্দুস আলী শেখের ভাষ্যমতে, সোমবার সকালে তিনি চরে কলাইখেতে যান। সেখানে কাজ শেষে দুপুরে মাঠের ভেতরে কাঁচা পথ দিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তাঁকে সাপ কামড় দেয়। তিনি বলেন, ‘মাঠ থিকি আসছিলাম। একটা জিপা জাগা। একপাশে জঙ্গলমতো ছিল। আরেক পাশে কলার বাগান। সাপের মুখের সামনে পাওডা (পা) পড়চে, অমনি কামড় দিছে। কুট করে উঠলো। জইলি–পুড়ি যাচ্ছে। দেখছি যে সাপ চলি যাচ্ছে। হাতের পর একটা লাঠি ছিল, সাপের সামনে টোকা দিলাম। সাপ থাইমি গেল।’

কুদ্দুস আলী শেখ আরও বলেন, ‘নিজের ক্ষেমতায় গামছা দিই বান (পা বাঁধা) দিলাম। তারপর সাপটাকে ধরলাম। এরপর পরিবারকে ফোন দিলাম। দ্রুত তাঁরা আইসি প্লাস্টিকের বোতল নিয়ে সাপটাকে ভরে হাসপাতালে নিই। গাড়িত করি আমাকে কুষ্টিয়ায় হাসপাতালে নেয় তারা।’

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সাপটি হাসপাতালে কুদ্দুস আলীর কাছে প্লাস্টিকের বোতলে ছিল। তবে একপর্যায়ে সাপটি মারা যায়। স্থানীয় কয়েকজন তরুণ সাপটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চত্বরে পুঁতে রাখেন।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ডের চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাপটি অনেক বড়, পূর্ণবয়স্ক; প্রায় তিন ফুট লম্বা। সাপের ছোবলে কৃষকের কাটা অংশ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে। হয়তো সাপ বিষ ঠিকমতো দিতে পারেনি। এ জন্য তিনি সুস্থ আছেন। সাপটি সঙ্গে করে নিয়ে আসায় ভালো হয়েছে। সাপ চিহ্নিত করা গেলে দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া যায়।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক দ দ স আল

এছাড়াও পড়ুন:

আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে

ঢাকার আদালত চত্বর থেকে পুলিশের চোখে স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলবিরুনী মীর এ আদেশ দেন।

এর আগে এই তিনজন এ মামলায় জামিনে ছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাঁদের জামিনাদেশ বাতিল করে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন।

আসামিরা হলেন আবদুস সবুর ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ও আরাফাত রহমান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. জায়েদুর রহমানের ভাষ্য, জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনার সময় এই তিন আসামি অন্য একটি মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। এরপর ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর জঙ্গি ছিতাইয়ের ঘটনায় করা মামলায় সেদিনই এই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে আরাফাত, ৬ এপ্রিল খায়রুল এবং গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সবুর এ মামলা থেকে জামিন পান। গত ৩০ সেপ্টেম্বর তাঁদের আদালতে হাজিরা দেওয়ার তারিখ ধার্য ছিল। কিন্তু ভুলবশত তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়নি। এ কারণে আদালত তাঁদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

আইনজীবী বলেন, ‘৩ ডিসেম্বর তাঁদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করি। আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আমরা পুনরায় এই মামলায় তাঁদের জামিনের জন্য আবেদন করব।’

যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই হয়েছিল

২০২২ সালের ২০ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল থেকে আট জঙ্গিকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। আসামিরা যখন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) আদালতের প্রধান ফটকের সামনে আসেন, তখন হাতকড়া পরা দুই জঙ্গি এক পুলিশ সদস্যকে মারধর শুরু করেন।

এ সময় আশপাশে থাকা জঙ্গিদের সহযোগীরাও হামলায় যোগ দেন। অন্য পুলিশ সদস্যরা আক্রান্ত সদস্যকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে তাঁদের ওপর মরিচের স্প্রে ছোড়া হয়। এরপর সিজেএম আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীত দিকের গলি দিয়ে মোটরসাইকেলে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গি মইনুল হাসান শামীম ওরফে সিফাত সামির ও মো. আবু ছিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

ঘটনার দিন রাতেই পুলিশ ২০ জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। মামলার এজাহারে বলা হয়, আনসার আল–ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। এতে জড়িত আনসার আল–ইসলামের ১৫ থেকে ১৮ সদস্য।

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পালিয়ে যাওয়া দুজন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল–ইসলামের (সাবেক আনসারুল্লাহ বাংলা টিম) সদস্য। তাঁরা জাগৃতি প্রকাশনীর প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই জঙ্গি সংগঠনের নেতা হিসেবে পরিচিত মেজর (বরখাস্ত) সৈয়দ জিয়াউল হক, যাঁর পরিকল্পনায় ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত একাধিক লেখক, প্রকাশক, ব্লগার ও অধিকারকর্মীকে হত্যা করা হয়।

আরও পড়ুনআদালত চত্বর থেকে যেভাবে জঙ্গি ছিনতাই২০ নভেম্বর ২০২২

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন্দির নির্মাণে ১৩৬ কোটি টাকা দান, অভিনেত্রীর আধ্যাত্মিক জীবন
  • আদালত চত্বর থেকে দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় তিন আসামি কারাগারে
  • বাজারে এসেছে নতুন আলু, দাম কত
  • মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের জামিন আবারও নামঞ্জুর
  • এই দিনে হানাদার মুক্ত হয়েছিল কুষ্টিয়ার যেসব স্থান
  • দীর্ঘ বিরতির পর কেন এই জরিপ
  • ৬০ বছর বয়সে প্রেমের দেখা পাব ভাবিনি: আমির খান
  • ইংল্যান্ডকে উড়িয়ে ২–০–তে এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া
  • আইএল টি–টোয়েন্টিতে অভিষেকেই মোস্তাফিজ জাদু