ব্যাংক হিসাব এখন অতি প্রয়োজনীয় চাহিদা হয়ে গেছে। ব্যাংক হিসাব ছাড়া এখন মধ্যবিত্তের জীবন প্রায় অচল।

দেশের ব্যাংক খাতে নানা ধরনের ব্যাংক হিসাব আছে। যেমন সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, কৃষি হিসাব, স্কুল ব্যাংকিং হিসাব ইত্যাদি।

কিন্তু অনেকেই জানেন না, কোন ব্যাংক হিসাব কী কাজে লাগে। এসব হিসাব খুলতে কী ধরনের কাগজপত্র লাগে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি আপনার হিসাবটি খুলতে পারবেন।

কী কাগজপত্র লাগে

যেকোনো ধরনের ব্যাংক হিসাব খুলতে কিছু সাধারণ কাগজপত্র জমা দিতে হয়। নিচে এর একটি তালিকা দেওয়া হলো—

১.

আবেদনকারীর পরিচয়পত্র: জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ডের ফটোকপি দিতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি এবং এর পাশাপাশি ছবিসহ অন্য যেকোনো পরিচয়পত্র (যেমন পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র) জমা দিতে হবে।

২. আবেদনকারীর সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।

৩. নমিনির কাগজপত্র। যেমন নমিনির সদ্য তোলা ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি (আবেদনকারী কর্তৃক সত্যায়িত), নমিনির জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি।

৩. ঠিকানা প্রমাণপত্র হিসেবে আপনার বর্তমান ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বা পানির বিলের ফটোকপি।

৪. কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) থাকলে এর ফটোকপি জমা দিতে পারেন।

কোনটি কী হিসাব

বর্তমানে সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, কৃষি হিসাব স্কুল ব্যাংকিং হিসাবসহ নানা ধরনের হিসাব আছে। কোনটির কী কাজ, তা দেখা যাক—

সঞ্চয়ী হিসাব

সাধারণ মানুষের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো সঞ্চয়ী হিসাব। এই হিসাব খুলতে ওপরে সাধারণ কাগজপত্রের পাশাপাশি ন্যূনতম জমার টাকা প্রয়োজন হবে। সাধারণ গ্রাহকেরা এই হিসাব খুলে থাকেন।

চলতি হিসাব

ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য চলতি হিসাব বিশেষভাবে উপযোগী। এই হিসাব খোলার জন্য সাধারণ কাগজপত্রের সঙ্গে আরও কিছু ব্যবসায়িক নথি জমা দিতে হয়। যেমন ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি; ব্যবসার প্রমাণপত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠানের ভিজিটিং কার্ড, লেটারহেড প্যাড ইত্যাদি; অংশীদারি কারবারের ক্ষেত্রে নিবন্ধিত অংশীদারি চুক্তিপত্রের কপি।

অন্যদিকে লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে কোম্পানির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশন ও সার্টিফিকেট অব ইনকরপোরেশনের ফটোকপি।

স্কুল ব্যাংকিং হিসাব

শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে জনতা ব্যাংকে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলার ব্যবস্থা রয়েছে। ১৮ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা এই হিসাব খুলতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হলো শিক্ষার্থীর কাগজপত্র, শিক্ষার্থীর জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছবিসহ পরিচয়পত্রের ফটোকপি বা বেতন রসিদের কপি, শিক্ষার্থীর ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।

অভিভাবকের কাগজপত্র হিসেবে লাগবে অভিভাবকের (মা–বাবা, বৈধ অভিভাবক) জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি। মনে রাখতে হবে, এই হিসাব মূলত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

কৃষক ও কৃষিভিত্তিক হিসাব

কৃষকদের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে বিশেষায়িত হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য সাধারণ কাগজপত্রের পাশাপাশি কৃষি উপকরণ কার্ড বা কৃষিকাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণপত্র প্রয়োজন হবে।

হিসাব খোলার প্রক্রিয়া

১. আপনার কাছের ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যোগাযোগ করুন।

২. ব্যাংক কর্মকর্তার কাছ থেকে হিসাব খোলার আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন।

৩. ফরমটি নির্ভুলভাবে পূরণ করুন।

৪. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ছবি সংযুক্ত করুন।

৫. নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে আপনার হিসাবটি চালু করুন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই হ স ব খ ল র ক গজপত র ন বন ধ র জন য ব যবস ধরন র আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

এডিবি বৃত্তিতে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্য মাস্টার্স, আবেদন শেষ ১০ ডিসেম্বর

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) বৃত্তিতে জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৬ সালের জন্য আবেদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এডিবি বৃত্তি সম্পূর্ণ অর্থায়ন করে থাকে। এডিবির সদস্যদেশগুলোর শিক্ষার্থীরা ২০২৬ সালের শরৎ (Fall) সেমিস্টারের জন্য আবেদন করতে পারবেন। মাস্টার্স ডিগ্রি প্রোগ্রামের মেয়াদ দুই বছর। টিউশন ফি ও বিমানের ভাড়াসহ নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের সব ব্যয়ভার এডিবি বহন করবে। এই বৃত্তির জন্য কোনো আবেদন ফি নেই।

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে

টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং–২০২৫ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি ৩২তম স্থানে রয়েছে। জাপানের শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় ও উদ্ভাবনী শিক্ষার জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে বহু শিক্ষার্থী জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে যান।

আরও পড়ুনযুক্তরাজ্যর পাঠ্যক্রম পর্যালোচনা, পরিবর্তনে করা হয়েছে ১০ সুপারিশ৫ ঘণ্টা আগেযেসব বিষয়ে আবেদন করা যাবে—

ন্যাচারাল এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ বিভাগ

ওশেন টেকনোলজি, নীতি ও পরিবেশ বিভাগ

এনভায়রনমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ

হিউম্যান অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ার্ড এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ বিভাগ

সোশিও–কালচারাল এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ বিভাগ

ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগ

সাসটেইনেবিলিটি সায়েন্স গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম

যোগ্যতার শর্ত

১. এডিবি সদস্যদেশের নাগরিক হতে হবে।

২. স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।

৩. উন্নত দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা যাবে না।

৪. স্নাতক শেষ করার পর কমপক্ষে দুই বছরের পূর্ণকালীন কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৫. আবেদনের সময় বয়স ৩৫ বছরের নিচে হতে হবে।

৬. প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার পর নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।

৭. আবেদন করার সময় কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি থাকা যাবে না।

৮. ভালো একাডেমিক ফল থাকতে হবে।

আরও পড়ুনলন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে ফ্রি অনলাইন কোর্স, পেশাজীবী এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫বৃত্তির সুবিধা—

পূর্ণ বৃত্তি।

মাসিক ভাতা, যা বাসস্থানসহ দৈনন্দিন খরচ মেটাতে সহায়তা করবে।

স্বাস্থ্যবিমা।

বই ও শিক্ষাসামগ্রীর খরচের জন্য বিশেষ ভাতা।

থিসিস বা গবেষণার জন্য বিশেষ অনুদান।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

পূরণ করা আবেদন ফরম।

ফিল্ড অব স্টাডি ও গবেষণা পরিকল্পনা।

অফিশিয়াল একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট।

স্নাতক সমাপ্তির সনদ (অফিশিয়াল কপি)।

দুটি সুপারিশপত্র।

আরও পড়ুনঅস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা: ভিসা–জটিলতা এড়াতে শিক্ষার্থীদের যে নতুন নির্দেশনা০৩ ডিসেম্বর ২০২৫আবেদনের প্রক্রিয়া—

১. প্রথমে নিশ্চিত হতে হবে যে আপনি সব শর্ত পূরণ করছেন।

২. সুপারভাইজার নির্বাচন করতে হবে।

৩. নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সম্পূর্ণ আবেদনপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

৪. বিশ্ববিদ্যালয় ডিসেম্বর–ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রার্থীদের যোগ্যতা যাচাই করবে।

৫. মে ২০২৬–এ এডিবি নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে।

৬. নির্বাচিত প্রার্থীদের সব কাগজপত্রের মূল কপি জমা দিতে হবে।

৭. চূড়ান্ত নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ১ অক্টোবর ২০২৬ থেকে শরৎ সেমিস্টারে ভর্তি হবেন।

বিশেষ নোট: এই বৃত্তির জন্য আইইএলটিএস প্রয়োজন নেই এবং জাপানি ভাষার দক্ষতারও শর্ত নেই। ফলে আবেদনের প্রক্রিয়া আরও সহজ।

আরও পড়ুনহার্ভার্ড–অক্সফোর্ডসহ বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফ্রি অনলাইন কোর্স, যেভাবে আবেদন২৭ নভেম্বর ২০২৫একনজরে বৃত্তির বৃতান্ত—

আয়োজক দেশ: জাপান

আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়: টোকিও বিশ্ববিদ্যালয় (গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব ফ্রন্টিয়ার সায়েন্সেস–জিএসএফএস)

অর্থায়নের ধরন: সম্পূর্ণ অর্থায়িত

ডিগ্রির ধরন: মাস্টার্স

প্রোগ্রামের মেয়াদ: দুই বছর

আবেদনের শেষ তারিখ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

সেমিস্টার শুরুর তারিখ: ১ অক্টোবর ২০২৬

আরও পড়ুনমাইক্রোসফটের ফ্রি অনলাইন কোর্স : ডেটা সায়েন্স–এআইসহ নানা বিষয়ে শেখার সুযোগ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এডিবি বৃত্তিতে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা মূল্য মাস্টার্স, আবেদন শেষ ১০ ডিসেম্বর
  • চট্টগ্রামে সড়ক থেকে নৌবাহিনী সদস্যের লাশ উদ্ধার
  • সঞ্চয়পত্রের ক্রেতা মারা গেলে কীভাবে টাকা পাবেন