বিস্তৃত প্রশ্ন, উত্তরও বড় হবে
Published: 10th, December 2025 GMT
বাংলা: প্রশ্ন নম্বর–৮
প্রাথমিক বিদ্যালয়–শিক্ষার্থী মেধা যাচাই পরীক্ষায় বাংলা বিষয়ে ৮ নম্বর প্রশ্ন থাকবে বিস্তৃত উত্তর প্রশ্নের ওপর। ৩টি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। নম্বর থাকবে ১৫।
প্রশ্ন: দেশকে কেন ভালোবাসতে হবে?
উত্তর: দেশ মানে এর মানুষ, নদী, আকাশ, প্রান্তর, পাহাড়, সমুদ্র ইত্যাদি সবকিছু। তাই দেশ আমাদের কাছে মায়ের মতো। মা যেমন স্নেহ–মমতা দিয়ে সন্তানকে আগলে রাখেন, দেশও তেমনই আলো, বাতাস ও সম্পদ দিয়ে আমাদের আগলে রাখে। তাই মায়ের মতো এই দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশকে ভালোবাসলেই তবে জীবন সার্থক হবে।
প্রশ্ন: রাজকীয় বাঘ কোনটি? এটি সম্পর্কে লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের নামের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা রাজকীয় বাঘের নাম হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই বাঘ থাকে সুন্দরবনে। এ বাঘ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই আবার
ভয়ংকর। এর চালচলনও রাজার মতো। সুন্দরবনের ভেজা স্যাঁতসেঁতে গোলপাতার বনে এ বাঘ ঘুরে বেড়ায়।
প্রশ্ন: বৈশাখী মেলায় কী কী পাওয়া যায়?
উত্তর: বৈশাখী মেলায় নিত্যদিনের দরকারি জিনিসের পাশাপাশি নানা রকম শৌখিন জিনিস পাওয়া যায়। যেমন—কুলা, ডালা, ঝুড়ি, চালনি, মাছ ধরার চাঁই, খালুই ইত্যাদি। দোকানে পাওয়া যায় বাঙ্গি, তরমুজ, মুড়ি–মুড়কি, জিলাপি, বাতাসা ইত্যাদি। বৈশাখী মেলার অন্যতম আকর্ষণ হলো মাটির তৈরি জিনিসপত্র। মাটির তৈরি জিনিসের মধ্যে রয়েছে নানা রঙের ফুল, পাতা ও মাছের ছবি আঁকা বিচিত্র সব হাঁড়ি। এ ছাড়া মাটির তৈরি টেপাপুতুল, ঘোড়া, হাতি, ষাঁড়, মাছ, কলসি, সরা, বাসনকোসন, পেয়ালা, সুরাই, মটকা, জালা, পিঠা তৈরির নানা ছাঁচ ইত্যাদি।
প্রশ্ন: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ লেখ।
উত্তর: হাতির করুণ পরিণতির পাঁচটি কারণ নিচে দেওয়া হলো—
১.
২. অন্য প্রাণীদের তুচ্ছ ভাবা।
৩. বনের প্রাণীদের অত্যাচার করা।
৪. নিজেকে অসীম শক্তিশালী ভাবা।
৫. নিজেকে বনের রাজা ভাবতে শুরু করা।
প্রশ্ন: প্রকৃতির কাছ থেকে আমরা কীভাবে শিক্ষা লাভ করতে পারি?
উত্তর: প্রকৃতি এক বিশাল পাঠশালা। এর প্রতিটি উপাদানে রয়েছে শেখার উপকরণ। আকাশ যেমন উদার হতে শিক্ষা দেয়, তেমনই পাথর শিক্ষা দেয় কঠোর হতে। পাহাড়–মাটি, চাঁদ–সূর্য, বাতাস–মাঠ প্রতিটিই বিভিন্নভাবে আমাদের শিক্ষা দেয়। উদারতা, সহিষ্ণুতা, কর্মপরায়ণতা, নীরবতা, মহানুভবতা ইত্যাদির শিক্ষা আমরা প্রকৃতির কাছ থেকে পেয়ে থাকি। এভাবে প্রকৃতির দিকে গভীরভাবে তাকালে বিনা পরিশ্রমে, কোনো ধরনের কৃত্রিমতা ছাড়াই আমরা এসব প্রকৃতি থেকে লাভ করতে পারি।
প্রশ্ন: মৃৎশিল্পের ওপর নকশাগুলো কীভাবে করা হয়?
উত্তর: আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হলো মৃৎশিল্প। এই মৃৎশিল্পের ওপরের সুন্দর নকশা, রং সবই গ্রামের শিল্পীরা করে থাকেন। নকশাগুলো তাঁরা মন থেকে আঁকেন। আর রং তাঁরা নিজেরা তৈরি করে নেন শিম, সেগুনপাতার রস কিংবা কাঁঠালগাছের বাকল থেকে। তবে আজকাল বাজার থেকে কেনা রংও লাগানো হয়।
প্রশ্ন: ‘আমরা একে অপরের উৎসবে সহযোগিতা করি।’—এ কথার দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
উত্তর: বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সব মানুষ মিলেমিশে বাস করে। প্রতিটি ধর্মের মানুষের রয়েছে আলাদা আলাদা উৎসব। যুগ যুগ ধরে সব ধর্মের মানুষ এ দেশে একত্রে বসবাস করে আসছে। এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্মের উৎসবে আনন্দের সঙ্গে অংশগ্রহণ করে। উৎসব পালনে আমরা একে অপরকে সহযোগিতা করি, প্রশ্নের উক্তিটিতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে।
প্রশ্ন: যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে মানুষ ঘুরছে বলতে কী বোঝ? বর্ণনা করো।
উত্তর: কবিতায় ‘যুগান্তর’ বলতে সময়ের পরিবর্তন এবং ‘ঘূর্ণিপাক’ বলতে এর দ্রুততাকে বোঝানো হয়েছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবীর অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়। নতুন নতুন রহস্য ও ঘটনার সৃষ্টি হয়। সময়ের গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মানুষও এগিয়ে চলে রহস্য অনুসন্ধান ও ঘটনার মূল উদ্ঘাটনের জন্য। যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের এই এগিয়ে যাওয়ার মানসিকতাকে বোঝানোর জন্যই বলা হয়েছে যুগান্তরের ঘূর্ণিপাকে ঘুরছে।
প্রশ্ন: পশুপাখি জীবজন্তু না থাকলে প্রকৃতির কী বিপর্যয় ঘটবে বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর: পশুপাখি, জীবজন্তু যেকোনো দেশের স্বাভাবিক প্রকৃতির পরিবেশ রক্ষার জন্য অপরিহার্য। যদি পৃথিবীতে পশুপাখি না থাকত, তাহলে প্রকৃতির ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ত
এবং পরিবেশের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটত। ফলে দেখা দিত নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা মানুষের জীবনধারণকে হুমকির মধ্যে ফেলত। তাই এদের যত্ন ও সংরক্ষণে আমাদের সচেতন হতে হবে।
প্রশ্ন: ‘মাটির শিল্পকলা’ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: যখন কোনো কিছু সুন্দর করে আঁকা বা বানানো হয়, তখন তাকে শিল্প বলে। শিল্পের এ কাজকে বলে শিল্পকলা। মাটি দিয়ে তৈরি শিল্পকে বলা হয় মাটির শিল্পকলা। আমাদের দেশের সবচেয়ে প্রাচীন শিল্প হচ্ছে মাটির শিল্প। এ দেশের কুমার সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে এই শিল্পকলা ধরে রেখেছে।
প্রশ্ন: সুন্দরবন সম্পর্কে পাঁচটি বাক্য লেখ।
উত্তর: বাংলাদেশের দক্ষিণে সমুদ্রের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা বিশাল বন হলো সুন্দরবন। এই বনে যেমন রয়েছে প্রচুর গাছপালা, তেমনই রয়েছে নানা প্রাণী ও জীবজন্তু, যা আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার। সর্বোপরি সুন্দরবন ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।
প্রশ্ন: পরস্পর মিলেমিশে থাকার পাঁচটি সুফল লেখ।
উত্তর: পরস্পর মিলেমিশে থাকার চারটি সুফল হলো—
১. একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার সৃষ্টি হয়।
২. বিপদ–আপদে একে অন্যকে সাহায্য করা যায়।
৩. একে অপরের প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি পায়।
৪. সমাজে সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
৫. দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়।
*লেখক: খন্দকার আতিক, শিক্ষক, উইল্স লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঢাকা
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন প রক ত র শ ল পকল আম দ র র পর ব ত মনই র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
আইইউবিএটিতে ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যালে নানা আয়োজন
তরুণ প্রজন্মের ক্যারিয়ার গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবের কাছাকাছি নিয়ে যেতে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির (আইইউবিএটি) আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যারিয়ার ফেস্টিভ্যাল ২০২৫’।
গত শনিবার (৬ ডিসেম্বর) আইইউবিএটির ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী উৎসবে দেশের প্রথম সারির করপোরেট গ্রুপ, ব্যাংকিং খাত, টেলিকম, ই-কমার্স, আইটি, হেলথকেয়ার, ম্যানুফ্যাকচারিং, হসপিটালিটি, এনজিও, অ্যাগ্রিবিজনেসসহ বিভিন্ন খাতের প্রায় ১৩০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
এবারের উৎসবে আন্তর্জাতিক কোম্পানি, মাল্টিন্যাশনাল ফার্ম এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান–সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানও ক্যাম্পাস-আধুনিক করপোরেট পরিবেশে উপস্থিত ছিল। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের বুথে ভিড় জমান হাজারো শিক্ষার্থী, গ্র্যাজুয়েট ও তরুণ চাকরিপ্রত্যাশীরা।
মোট ১ হাজার ২০০-এর বেশি শূন্য পদ নিয়ে উৎসবে অংশ নেয় প্রতিষ্ঠানগুলো। দিনব্যাপী তারা উপস্থিত সিভি সংগ্রহ, প্রাথমিক স্ক্রিনিং, লিখিত পরীক্ষা, গ্রুপ ডিসকাশন এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করে। প্রতিষ্ঠানের এইচআর প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের সিভি উন্নয়ন, ইন্টারভিউ প্রস্তুতি, জব রোল নির্বাচন ও করপোরেট সংস্কৃতি সম্পর্কে বাস্তবধর্মী পরামর্শ দেন।
দিনব্যাপী উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল ১০টি ক্যারিয়ার সেশন, যেখানে দেশের অভিজ্ঞ মানবসম্পদ পেশাজীবীরা শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন। সেশনগুলোতে ভবিষ্যতের চাকরি–বাজারে কোন দক্ষতার চাহিদা বাড়ছে, ইন্টার্নশিপের গুরুত্ব, সিভি ও কভার লেটার প্রস্তুতি, ইন্টারভিউতে আত্মবিশ্বাস, করপোরেট আচরণ ও যোগাযোগদক্ষতা, নেতৃত্ব ও টিমওয়ার্ক, ডিজিটাল দক্ষতা অর্জনের কৌশল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) যুগে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়।
দিনের শেষে অনুষ্ঠিত প্যানেল ডিসকাশনে বাংলাদেশের শীর্ষ করপোরেট নেতা, সফল উদ্যোক্তা ও খ্যাতনামা এইচআর পেশাজীবীরা অংশ নেন।
আয়োজন প্রসঙ্গে আইইউবিএটির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সেলিনা নার্গিস বলেন, করপোরেট বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সরাসরি যোগাযোগ ও কর্মসংস্থান তৈরি এবং ক্যারিয়ার উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আইইউবিএটি সেই সুযোগই তৈরি করে চলেছে। এ ধরনের উৎসব তরুণদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, দক্ষতা উন্নত করে এবং তাদের কর্মজীবনের প্রকৃত দরজায় পৌঁছে দেয়।