পঞ্চগড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 10th, December 2025 GMT
পঞ্চগড়ে সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। লাগামহীন গতির যানবাহন ও সড়কে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছে ‘জাগ্রত পঞ্চগড়’ নামে একটি সংগঠন।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ পথচারীরা অংশ নেন।
সাংবাদিক আবু নাঈমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- পঞ্চগড় জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইকবাল হোসাইন, পঞ্চগড় আদালতের জিপি অ্যাডভোকেট আব্দুল বারী, ‘জাগ্রত পঞ্চগড়’ এর আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান মিলন, পঞ্চগড় সম্মিলিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আহসান হাবীব সরকার, বোদা উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী শিশির আসাদ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন- পঞ্চগড়ে দুর্ঘটনা বাড়ার মূল কারণ চালকদের বেপরোয়া গতি, সড়কের অনিয়ম, অনভিজ্ঞ ও বদলি চালক, যানবাহনের ফিটনেস হীনতা এবং কার্যকর তদারকির অভাব।
তারা দ্রুত সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা, সচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার, স্থায়ী ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় গতি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি জানান। একই সাথে বাইপাস সড়ক এবং একটি ফুট ওভার ব্রিজসহ শুরু হওয়া চারলেন সড়কের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর শহরের করতোয়া সেতুতে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে জেলা প্রশাসনের এক কর্মচারী নিহত হন। এর পরপরই গত ৯ ডিসেম্বর শহরের বিজিবি ব্যাটালিয়নের সামনে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এক নারীর।
ঢাকা/নাঈম/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে নদীবন্দরের সীমানা নিয়ে উত্তেজনা, বিক্ষোভে পিছু হটল বিআইডব্লিউটিএ
কক্সবাজার শহরে নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। আজ রোববার দুপুরে শহরের বাঁকখালী নদীর কস্তরাঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শেষ পর্যন্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে পিছু হটেন বিআইডব্লিউটিএর (বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ) কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ কস্তুরাঘাট এলাকায় নদীবন্দরের সীমানা নির্ধারণে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা আসবেন—এমন খবরেই সকাল থেকেই স্থানীয় বাসিন্দারা জড়ো হতে থাকেন। সকাল ৯টা থেকে বদরমোকাম, কস্তুরাঘাট ও পেশকারপাড়ার লোকজন গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন। এতে ওই এলাকার যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১১টার দিকে একই জায়গায় কয়েক শ নারী-পুরুষ এক হয়ে মানববন্ধন করেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ, র্যাব, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা কস্তুরাঘাট এলাকায় পৌঁছান। এরপর উত্তেজনা আরও বাড়ে। শেষ পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণের কাজ বন্ধ করেই ফিরে যায় বিআইডব্লিউটিএ।
বিআইডব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত ১ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর বাঁকখালী নদীর ওই অংশে উচ্ছেদ অভিযানে ৪৯৬টি অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে প্রায় ৬৩ একর জমি উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার জমি আবার দখলের ঝুঁকি থাকায় কাঁটাতারের বেড়া ও সীমানা পিলার দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিএ।
যা বলছেন বিক্ষোভকারীরা
অবরোধকারীদের দাবি, উচ্ছেদ হওয়া স্থানের মধ্যে ব্যক্তিমালিকানাধীন খতিয়ানভুক্ত জমিও রয়েছে। পারুল আক্তার নামের এক নারী বলেন, ‘আমাদের খতিয়ান আছে, খাজনাও দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বা আলোচনা না করে ঘরবাড়ি ভাঙা ও কাঁটাতার দেওয়া চলবে না।’
সাবিনা ইয়াছমিন নামের আরেক নারী বলেন, অনেক পাকা ভবন যখন তৈরি হলো, তখন কেউ থামাননি। এখন হঠাৎ উচ্ছেদ করা হয়েছে। এতে অনেকেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতিপূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা এ জায়গায় স্থায়ী কোনো অবকাঠামো হতে দেবেন না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের এ মানববন্ধনে বিএনপি ও এর অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও অংশ নেন। তাঁদের একজন কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও জেলা মহিলা দলের সভাপতি নাসিমা আকতার। তিনি বলেন, বাঁকখালী নদীর দখল নিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের পৃথক তিনটি মামলা রয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ নিয়েও হাইকোর্টে তিনটি মামলা হয়েছে। মামলা নিষ্পত্তি না করে ঘরবাড়ি উচ্ছেদ করে জায়গাজমিতে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে ফেলা অন্যায়। আলোচনার মাধ্যমে সংকটের নিরসন না করলে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
কর্মসূচিতে থাকা জেলা যুবদলের প্রচার সম্পাদক ও আইনজীবী মো. ইসমাইল বলেন, বিআইডব্লিউটিএর উচ্ছেদ করা জমিতে অসংখ্য মানুষের খতিয়ানভুক্ত জমি রয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে তিনিসহ ৭৭ জন মামলা করেছেন।