ঢাকার ধামরাইয়ে মাটি খননের কাজে ব্যবহৃত একটি ভেকু ও মোটরসাইকেলে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে এলাকাবাসী। কৃষি জমি ক্ষতির অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দীঘল গ্রামের দুটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। 

এলাকাবাসী জানান, সম্প্রতি একটি পুকুর খননের জন্য অনুমোদন দেয় উপজেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার মাটি খননের জন্য সেখানে ভেকু ও ড্রাম ট্রাক নিয়ে যান অনুমতি পাওয়া ব্যক্তিরা। কৃষি জমি নষ্ট হবে এমন অভিযোগ তুলে তাদের বাধা দেয় এলাকাবাসী।

আরো পড়ুন:

সুনামগঞ্জে আগুনে পুড়ল ৭ ঘর 

বিবিয়ানা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ড

বিকেলের দিকে এ নিয়ে সংঘাতের ঘটনাও ঘটে। রাতে ফের সেখানে মাটি খনন চেষ্টা করলে স্থানীয়রা মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে খননকাজের জন্য আনা ভেকু ও পাশে রাখা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার সুব্রত সাহা জানান, রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার দীঘল গ্রামে ভেকু ও মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়ার খবর আসে। ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করে। এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে বাধা দেন। পরে অল্প কিছু কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ফিরে যান।

ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, “একটি মোটরসাইকেল ও ভেকু আগুনে পুড়ে গেছে। তিনটি ড্রাম ট্রাক ভাঙচুর করা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে এসে দেখি কয়েক শতাধিক মানুষ। ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হলে উত্তেজিত জনতা ড্রাম ট্রাকেও আগুন ধরিয়ে দিত। হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ভেকুটি মাটি কাটার জন্য আনা হয়েছিল। ঘটনাস্থল ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) পরিদর্শন করেছেন।”

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) খান সালমান হাবীব বলেন, “এই জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে একটি ভেকু ও মোটরসাইকেল আগুন দেওয়া হয়েছে। মূলত এক পক্ষকে পুকুর করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কারণ ওই জমিতে কোনো সফল উৎপাদন না হওয়ায় তাদের এই অনুমতি দেওয়া হয়। তাদের শর্ত দেওয়া হয়েছিল ওই জমির মাটি কোথাও বিক্রি করা যাবে না। আজকে ড্রাম ট্রাক এবং ভেকু নিয়ে আসলে উত্তেজিত লোকজন আগুন দেয়। উভয় পক্ষকেই আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।” 

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন এল ক ব স র জন য উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে আগুনের ঘটনায় জিডি

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার তারাপুর কবরস্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশে আগুনের ঘটনায় পাংশা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সবুজ হোসেন বাদী হয়ে জিডি করেন।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পাংশা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় কবরস্থানে আগুনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। অবিলম্বে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান মুক্তিযোদ্ধাসহ বক্তারা।

আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রিফাতুল হক। ইউএনও মো. রিফাতুল হক ও পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মইনুল ইসলাম দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাদ আহম্মেদ।

সভায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কাউন্সিলের সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিজয়ের মাসে কারা এমন ঔদ্ধত্য দেখান? তাঁরা কি স্বাধীনতাকে বিশ্বাস করেন না? না হলে বিজয়ের মাসে এমন জঘন্যতম কাজটি করতে পারতেন না।’

কবরস্থান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. সবুজ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আমি বাদী হয়ে রোববার রাতে থানায় জিডি করেছি। আশা করি, পুলিশ দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

স্থানীয়দের ভাষ্য, গতকাল রোববার ভোরে ফজরের নামাজ পড়তে তারাপুর জামে মসজিদে আসার সময় মুসল্লিরা পাশে অবস্থিত তারাপুর কবরস্থানে আগুন দেখতে পান। মসজিদের মুয়াজ্জিন ও কবরস্থান দেখভালের দায়িত্বে থাকা মো. শহিদুল ইসলাম তাৎক্ষণিক মসজিদের মাইকে আগুন লাগার খবর প্রচার করেন।

এ সময় মুসল্লিসহ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী মিলে দ্রুত আগুন নেভান। আগুনে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানের বাঁশ ও প্লাস্টিকের বেড়া পুড়ে যায়। আগুন লাগার স্থানে পেট্রল ও কেরোসিনের গন্ধ পাওয়া যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ইউএনও, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।

আজ দুপুরে কবরস্থান পরিদর্শনকালে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মইনুল ইসলাম বলেন, ‘রোববার রাতে থানায় যোগদান করে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা জানতে পারি। এ ঘটনায় রোববার রাতেই থানায় জিডি হয়েছে। আমি নিজে বিষয়টি তদন্ত করছি। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।’

ইউএনও মো. রিফাতুল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে আগুন লাগার ঘটনার দ্রুত রহস্য উদ্‌ঘাটন এবং অপরাধীদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে কবরস্থানটি ঘিরে দিতে অনুরোধ করেছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জামালপুরে ধানখেতে কম্বলে মোড়ানো ছিল নবজাতকটি
  • স্বামী-স্ত্রী হত্যা: যোগেশ চন্দ্রকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়
  • সোনারগাঁয়ে নতুন ইউএনও’র সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় 
  • রাজবাড়ীতে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে আগুনের ঘটনায় জিডি
  • তারাগঞ্জে ১০৭ বস্তা টিএসপি সার জব্দ, ডিলারকে জরিমানা
  • বন্দরে নতুন ইউএনও শিবানী সরকারের যোগদান
  • রাজবাড়ীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত কবরস্থানে দুর্বৃত্তদের আগুন