যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি আবাসিক হলে বন্দুকধারীর এলোপাথাড়ি গুলিতে এক শিক্ষার্থী নিহত এবং আরো একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। 

আরো পড়ুন:

ইউরোপীয় নেতাদের ‘দুর্বল’ বলে সমালোচনা করলেন ট্রাম্প

ওমরাহ পালন করতে সৌদিতে জায়েদ খান

প্রতিবেদনে বলা হয়,  হামলার পরেই সন্দেহভাজন বন্দুকধারীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একই এলাকায় চার মাসের মধ্যে এটি দ্বিতীয় গুলিবর্ষণের ঘটনা। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

ফ্রাঙ্কফোর্টের সহকারী পুলিশ প্রধান স্কট ট্রেসি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মঙ্গলবারের গুলিবর্ষণের ঘটনায় সন্দেহভাজন কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র নয়। ট্রেসি বলেন, পুলিশ দ্রুত গুলিবর্ষণের ঘটনায় সাড়া দিয়েছে।

তিনি বলেন, “ফ্রাঙ্কফোর্ট পুলিশ বিশ্বাস করে যে, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং এই মুহূর্তে ক্যাম্পাসে কোনো সক্রিয় নিরাপত্তা উদ্বেগ নেই।”

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আবাসিক হলে গুলিবিদ্ধ এক ছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও তার অবস্থা স্থিতিশীল। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের নাম প্রকাশ করছে না।

কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটির এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি এবং তাদের জন্য কাউন্সেলিংসহ সম্ভাব্য সব সহায়তা প্রদান করছি।”

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক্স-এ পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় কেন্টাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ার বলেন, “গুলি চালানো একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মনে হচ্ছে এবং কোনো চলমান হুমকি নেই।”

তিনি বলেন, “আমাদের কমনওয়েলথ বা দেশে সহিংসতার কোনো স্থান নেই। আসুন আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও আমাদের কেএসইউ শিক্ষার্থীদের জন্য প্রার্থনা করি। আসুন এমন একটি পৃথিবীর জন্যও প্রার্থনা করি যেখানে এই ঘটনাগুলো না ঘটে।” 

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, সপ্তাহের বাকি সময়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, ফাইনাল পরীক্ষা ও ক্যাম্পাস কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, “শিক্ষার্থীরা যদি ইচ্ছা করে বাড়ি ফিরে যেতে পারে। অতিরিক্ত নির্দেশিকা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জানানো হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি কফি সি আকাকপো এটিকে ‘অর্থহীন ট্র্যাজেডি’ বলে অভিহিত করেছেন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিন বলেন, “আমরা আমাদের একজন ছাত্রের মৃত্যুতে শোকাহত। একজন অভিভাবক হিসেবে আমি কল্পনাও করতে পারি না যে, আজ আমি অভিভাবকদের কাছে যে ফোন করেছি তা পাব।”

এর আগে গত ১৭ আগস্ট, একই আবাসিক হলের কাছে কেউ একজন গাড়ি থেকে একাধিক গুলি চালিয়েছিল, যার ফলে দুজন আহত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, হামলাকারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল না। 

কেনটাকি স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাপিটল ভবন থেকে প্রায় ২ মাইল (৩.

২ কিমি) পূর্বে অবস্থিত।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র স ট ট ইউন ভ র স ট র জন য ক নট ক র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা ও কৌশলে নতুন তালেবানের ভিন্ন এক শাসন

দক্ষিণ-পূর্ব আফগানিস্তানের সীমান্ত প্রদেশ খোস্তের মানুষের এই মুহূর্তে নানা প্রশ্ন। তাঁদের প্রশ্নের কেন্দ্রে রয়েছেন একজন আফগান শরণার্থী—রহমানুল্লা লাকানয়াল। বলা হচ্ছে, খোস্তের লাকান জেলার বাসিন্দা রহমানুল্লা লাকানয়াল ওয়াশিংটনে দুই নিরাপত্তাকর্মীর ওপরে ২৬ নভেম্বর গুলি চালান। মৃত্যু হয় একজনের, আহত আরেকজন। আহত অবস্থায় হাসপাতালের বিছানা থেকে রহমানুল্লা লাকানয়াল জানিয়েছেন তিনি নির্দোষ।

কিন্তু মানুষ উদ্বিগ্ন। এর নানা কারণ আছে বলে মনে করেন খোস্ত শহরের বাসিন্দা এবং প্রদেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় শেখ জায়েদ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আহসান উল্লাহ। আফগানিস্তানে আমার হোটেলে পরিচয় হয় আহসানের সঙ্গে। বিশ্বরাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে গড়পড়তা আফগানের থেকে অনেক বেশি জানেন আহসান।

ওয়াশিংটনের ঘটনার কী প্রভাব খোস্তের ওপরে পড়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে আহসান ডিসেম্বরের গোড়ায় ফোনে বললেন, ‘একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি। যে লোকটা (লাকানয়াল) গুলি চালাল, আমেরিকাই তাঁকে আফগানিস্তানে মানুষকে হত্যা করার প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। এখন সে আমেরিকার রক্ষীদেরই মেরে বসল।’

আহসানের কথায়, এর ফলে বিপদে পড়ল সেই সব আফগান শরণার্থী, যাঁরা আমেরিকা বা ইউরোপে অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, তাঁদের যেকোনো সময় ফেরত পাঠানো হতে পারে। তিনি আরও বললেন, ‘একই সঙ্গে এটাও ঠিক যে আমেরিকা যদি পেশাদার হত্যাকারী তৈরি না করত তাহলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। ফলে সব মিলিয়ে আফগানরা বিভ্রান্ত, একধরনের মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি।’

হিংসা অবশ্য আফগানিস্তানে বিশ বছরের যুদ্ধের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে, যা তালেবানের পক্ষেই যায়। ওয়াশিংটনে গুলি চললে যেমন বিষয়টি তালেবানের পক্ষের আখ্যান হিসেবে দাঁড় করানো যায়, পাকিস্তান কাবুলের ওপরে বোমা ফেললেও তেমনই যায়। এটা বুঝেছে নতুন তালেবান।

এটা স্পষ্ট যে নতুন তালেবান অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলের মতোই যেকোনো হিংসার ঘটনা নিয়ে একটা ‘ন্যারেটিভ’ বা আখ্যান নির্মাণের গুরুত্ব বুঝেছে।

অতীতের মুজাহিদরা বুঝেছেন, যুদ্ধের বা হিংসার স্মৃতি ফিরলে বা যুদ্ধ শুরু হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে তৈরি হওয়া প্রতিষ্ঠান–বিরোধিতার হাওয়া গতি হারায়। তাই তাঁরা বারবার বলছেন, ওয়াশিংটনের ঘটনার জন্য আদতে দায়ী আমেরিকাই। এমনকি তালেবান-বিরোধীদেরও অনেকটা সেই মত। তালেবানের অন্যতম সমালোচক এবং সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও সাবেক উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেছেন, লাকানয়ালের মতো মানুষের এ পর্যন্ত আসার ক্ষেত্রে দায় আমেরিকার।

ফলে এটা স্পষ্ট যে নতুন তালেবান অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দলের মতোই যেকোনো হিংসার ঘটনা নিয়ে একটা ‘ন্যারেটিভ’ বা আখ্যান নির্মাণের গুরুত্ব বুঝেছে। এটাকে তাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য বা বৈশিষ্ট্য বলে মনে করছেন অনেকে।

অধ্যাপক ফয়েজ জালান্দ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিমানবিধ্বংসী কামান থেকে বের হচ্ছিল সাদা ধোঁয়ার কুণ্ডলী
  • রাশিয়ার সাথে যৌথভাবে অস্ত্র তৈরিতে ভারতের উৎপাদনকারীদের গোপন বৈঠক
  • বন্ধন বিশ্বাসের ‘সিক্রেট’-এ অপু-আদর
  • শ্রমিক থেকে ‘বীজ সুলতান’ রফিক
  • ধুরন্ধর ঝড়: কে কত টাকা পারিশ্রমিক নিলেন?
  • স্বপ্নের উড়াল যাত্রা, অস্ট্রেলিয়ার পথে রিশাদ
  • ‘ওয়ান বক্স পলিসিতে’ সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন করবে জামায়াতসহ ৮ দল
  • রায়পুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে কুয়েতপ্রবাসী যুবক নিহত
  • প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা ও কৌশলে নতুন তালেবানের ভিন্ন এক শাসন