পাহাড় কাটায় বন্ধ কাজ চালু করতে চীনা দলের চাপ
Published: 4th, February 2025 GMT
কুফা কাটছে না চট্টগ্রাম বার্ন ইউনিটের। ১০ বছরে অগ্রগতি শূন্য। পাহাড়ে কোপ দিয়ে কাজ শুরু করায় প্রথমেই হোঁচট খেয়েছে। আপাতত কাজ বন্ধ রেখেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে অর্থায়ন থাকায় তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করতে চায় চীনারা।
প্রকল্প পাস হতে ১০ বছর পার
মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানোর পর ২০১৪ সালে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়ে চীনের প্রতিনিধি দল চট্টগ্রামে আসে। তখন থেকে শুরু প্রকল্পের আলাপ-আলোচনা। মাঝখানে চলে যায় ১০টি বছর। অনেক আগে থেকে চূড়ান্ত করা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ভেতর গোঁয়াছি বাগানে ঘুরপাক খেয়েছে সবাই। এত বছর ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়, চীনসহ একাধিক টিম এই স্থান পরিদর্শন করেছে। গত বছরের ৯ মে একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) অনুমোদন পায় প্রকল্পটি। ২৮৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পে চীন সরকার অর্থায়ন করবে ১৮০ কোটি টাকা। আর বাংলাদেশ সরকার দেবে ১০৫ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। গোঁয়াছি বাগানের চারপাশ জঞ্জালমুক্ত করা
হয়। আগামী ডিসেম্বরে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
শুরুতেই গলদ, কাজ বন্ধ
ছয়তলা ভবন নির্মাণ করার জন্য চলতি মাসে পাহাড়ে কোপ দেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা। এতে ক্ষুব্ধ হন পরিবেশবাদীরা। এর প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি সংগঠন মানববন্ধন, প্রতিবাদ সভাসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। সর্বশেষ ২২ জানুয়ারি প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনসহ (বাপসা) কয়েকটি সংগঠন। পাহাড় কাটার স্থানে রোপণ করে গাছের চারা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, পাহাড় কাটা কিংবা ড্রেসিং (মোচন) করার আগে নিতে হয় ছাড়পত্র এবং এনভায়রনমেন্টাল ইমপেক্ট অ্যাসেসমেন্ট (ইআইএ)। এর আগেই এক্সক্যাভেটর দিয়ে পাহাড়ের একটা বড় অংশ সাবাড় করা হয়েছে। এর পর বিষয়টি নজরে আসে পরিবেশ অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের। তাই পাহাড় কাটা বন্ধের পাশাপাশি কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা।
সরেজমিন যা দেখা গেল
সম্প্রতি সরেজমিন গোঁয়াছি বাগানে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্প এলাকার চারপাশ ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। দূর থেকে চোখে পড়ছে অবৈধভাবে পাহাড় কাটার চিহ্ন। কয়েকটি স্থানে পড়ে আছে পাহাড় কাটার কিছু সরঞ্জাম ও কেটে ফেলা গাছ।
আছে চীনা দলের চাপ
পাহাড় কাটায় নতুন করে জটিলতা তৈরি হওয়ায় দ্রুত কাজ শুরুর জন্য কর্তৃপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে চট্টগ্রামে আসা চীনা প্রতিনিধি দল। এতে বেকায়দায় পড়েছে প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
চীনা প্রতিনিধি দলের প্রধান মে ইইউ চ্যং সমকালকে বলেন, ‘পাহাড়টির মাটি খুব নরম। পানির স্পর্শ পেলে সেটি নিচের দিকে চলে আসার শঙ্কা রয়েছে। প্রকৌশলীরা সয়েল নেইলিং প্রযুক্তির মাধ্যমে পাহাড়টি ড্রেসিং করে কলাম বসিয়ে কাজ করবেন। পরে ঘাস লাগানো হবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘এমনিতে নানা কারণে এ প্রকল্পের কাজ বহুবার পিছিয়েছে। অনেক বছর পর কাজ শুরু হয়ে আবার বন্ধ হয়ে গেছে। এমন হলে চীনা প্রকৌশলীরা কাজ না করে চলে যাবেন। অর্থও ফেরত দিতে হবে। কাজ শুরু করতে চীনা প্রতিনিধিরা আমাদের খুব চাপাচাপি করছেন। এরই মধ্যে চীন থেকে বেশকিছু মালপত্র এনেছেন।’
ক্ষুব্ধ পরিবেশবাদীরা
পরিবেশবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.
বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) চট্টগ্রামের সমন্বয়ক মনিরা পারভীন বলেন, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাহাড় কাটা হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও তা মানেনি। যে পরিমাণ পাহাড় কাটা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।’
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুক্তাদির হাসান বলেন, ‘অনুমতি না নিয়ে বিশাল আকৃতির পাহাড় কাটার প্রমাণ পেয়েছি। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় করণীয় ঠিক করবে।’
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দিন বলেন, ‘কাজ বন্ধ রয়েছে। চীনাদের সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার বৈঠক করার কথা রয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’ অভিযোগ ওঠার পর পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে টার্মস অব রেফারেন্স এবং ইআইএ পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘গাছ কাটলে তা লাগাতে পারবেন। কিন্তু পাহাড় সৃষ্টি করার কোনো জাদু নেই। মানুষের জন্য হাসপাতাল অবশ্যই প্রয়োজন। তবে সেটি পাহাড় কেটে নয়।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প র ক জ বন ধ উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি, স্নাতক/স্নাতকোত্তরে আবেদন
বেসরকারি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। বাণিজ্যিক এ ব্যাংকটি ‘প্রজেক্ট অ্যাপ্রাইজাল অ্যানালিস্ট’ পদে কর্মী নিয়োগ দেবে। গত ৩০ এপ্রিল প্রকাশ করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। নির্বাচিত প্রার্থীরা মাসিক বেতন ছাড়াও প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবেন। ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক টেক্সটাইল প্রজেক্টস বিভাগে প্রজেক্ট অ্যাপ্রাইজাল অ্যানালিস্ট পদে কতজনকে নিয়োগ দেবে, তা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ নেই।
আবেদনে শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক/স্নাতকোত্তর অথবা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
অন্যান্য যোগ্যতা: ব্যাংকিং, প্রকল্প মূল্যায়ন অথবা পর্যবেক্ষণ কার্যক্রমে অভিজ্ঞতা থাকা। টেক্সটাইল উৎপাদন, যন্ত্রপাতি, খরচ বিশ্লেষণ এবং উৎপাদন ব্যবস্থা সম্পর্কে ভালো ধারণা।
অভিজ্ঞতা: ন্যূনতম ৫ বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বেতন: আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে।
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা: প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য হবেন।
প্রার্থীর বয়স: ৩৮ বছরের মধ্যে হতে হবে (১৪ মে ২০২৫ তারিখে)।
কর্মস্থল: দেশের যেকোনো স্থানে।
আবেদন যেভাবে—
কাজের ক্ষেত্র, আবেদনপদ্ধতিসহ অন্যান্য বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী প্রার্থীরা এখানে ক্লিক করুন।
আবেদনের শেষ তারিখ: আগ্রহী প্রার্থীরা আগামী ১৪ মে তারিখের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।
আরও পড়ুন৯ ব্যাংকের ৯৭৪ পদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ, দেখুন নির্দেশনা৮ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনইসলামিক ফাউন্ডেশনের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি স্থগিত৩০ এপ্রিল ২০২৫