রাজবাড়ীতে নষ্ট হচ্ছে ২ কোটি টাকার বাস টার্মিনাল
Published: 5th, February 2025 GMT
রাজবাড়ীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালটি দীর্ঘ ৩০ বছরেও পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করতে পারেনি জেলা প্রশাসন। এতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনালের অবকাঠামো, আসবাব ও অন্য মালামাল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যা হলে এখানে বসে মাদকসেবীদের আড্ডা।
স্থানীয় লোকজন এবং বাসমালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজবাড়ী শহর থেকে দূরে হওয়ায় এবং যেখানে টার্মিনাল, সেখানে যাত্রী না পাওয়ায় বাসমালিকেরা টার্মিনাল ব্যবহার করছেন না। এতে টার্মিনালটি বেশ কয়েকবার চালু করলেও পরে বন্ধ হয়ে যায়।
জেলা পরিষদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা পরিষদের অর্থায়নে ১৯৯৪ সালে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে রাজবাড়ী জেলা বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় ৪ একর ২০ শতাংশ জায়গায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৯৪ সালের ১৯ এপ্রিল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহানারা বেগম এটি উদ্বোধন করেন। কিছুদিন চালু থাকার পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। ২০০০ সালে টার্মিনালটি জেলা পরিষদ থেকে রাজবাড়ী পৌরসভায় হস্তান্তর করা হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় টার্মিনালটি আবার চালু করা হয়। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে টার্মিনালটি পুনরায় বন্ধ হয়ে যায়।
বাসমালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজবাড়ী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ পৌরসভা থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে টার্মিনাল থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে শহরের মুরগির ফার্ম এলাকায় বাস রাখার ব্যবস্থা করেছে। সেখানে পার্কিং চার্জ বাবদ প্রতিটি বাস থেকে ৫০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। এবার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক লিটনের নামে প্রায় ৩০ লাখ টাকার বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণ না করায় বাস টার্মিনালের ১০টি টিকিট কাউন্টারসহ ১৫টি কক্ষের দরজা–জানালা ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল ভবনের বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা খসে পড়ছে। টার্মিনালের শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী। চারপাশ আগাছা-জঙ্গলে ভরে গেছে।
জেলা ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘টার্মিনালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।’
কয়েকজন পরিবহনশ্রমিক বলেন, টার্মিনালটি বন্ধ থাকায় পরিবহনমালিক বা সংগঠনের নেতাদের স্বার্থে বর্তমানে রাজবাড়ী শহরের মুরগির ফার্ম, বড়পুল ও জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের কার্যালয়ের সামনে মহাসড়ক থেকে যাত্রী ওঠানামা করানো হয়। বাস কাউন্টার করা হয়েছে মালিক গ্রুপের কার্যালয়ের নিচতলায়।
রাজবাড়ী সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সদস্য পরিমল কুমার সাহা বলেন, ‘ তিন চাকার যানগুলো টার্মিনাল ওভারটেক করে শহর থেকে যাত্রী আনা-নেওয়া করে। তাই বাধ্য হয়ে তাদের মতো আমরাও শহরের বড়পুল ও মুরগির ফার্ম এলাকার সড়কে বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করাই।’
পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মল্লিকা দে বলেন, ‘তিনি পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করে টার্মিনালটি চালুর উদ্যোগ নেবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
সালমান শাহকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে: প্রসূন আজাদ
ঢাকায় সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান এই অভিনেতা। তার রহস্যজনক মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেন অভিনেতার স্ত্রী সামিরা হক। সালমান শাহর মৃত্যুর প্রায় তিন দশক পর আদালতের নির্দেশে তার অপমৃত্যুর মামলা, হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করেছে পুলিশ। এ মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সামিরা হককে।
সালমান শাহর ক্যারিয়ারের বৃহস্পতি যখন তুঙ্গে তখন অনন্তের পথে তার যাত্রা। তার মৃত্যু কেউই মেনে নিতে পারেননি, এমনকি এখনো না। তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হয়েছে রহস্য। তদন্ত ও বিচার কাজ সঠিকভাবে সম্পূর্ণ হলেই এই রহস্যের জাল ভেদ করে সত্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা সালমান শাহর ভক্ত-অনুরাগীদের।
আরো পড়ুন:
আমার বাচ্চার দাদা-দাদিও কী এক্স হয়ে গিয়েছেন, প্রশ্ন পরীমণির
সালমানকে ভাই ছাড়া অন্য চোখে দেখিনি: শাবনূর
এদিকে, ছোট ও বড় পর্দার আলোচিত অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ তার ফেসবুকে সালমান শাহকে নিয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সন্দেহ প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন—“সত্যিকার অর্থে সালমান শাহকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে।”
প্রসূন আজাদ বলেন, “আমার ধারনা সালমান প্রচণ্ড ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু সত্যিকার অর্থে তাকে কেউ কখনো ভালোবেসেছিল কি না আমার সন্দেহ আছে।”
কারণ ব্যাখ্যা করে প্রসূন আজাদ বলেন, “স্টারদের স্টারডম সবাই ভালোবাসে। তার একাকিত্ব তাতে কমে না। তার মা কিংবা বউ কেউ আদৌ নিঃস্বার্থভাবে তার পাশে দাঁড়াতে চেয়েছিল কি না সন্দেহ। সফলতার চরমতম স্বাদ পাওয়ার পর তারা সব ছেড়ে চলে যায়, যারা অভিমানী।”
১৯৮৫ সালে ‘আকাশ ছোঁয়া’ নাটক দিয়ে অভিনয়ের যাত্রা শুরু করেন সালমান শাহ। এটি বিটিভিতে প্রচার হয়। ১৯৯৩ সালে পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের হাত ধরে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে সালমান শাহর। অভিষেক চলচ্চিত্রে নায়িকা হিসেবে পান মৌসুমীকে।
চার বছরের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেন সালমান শাহ। এর মধ্যে ১৪টি সিনেমায় শাবনূরের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন তিনি। ‘তুমি আমার’ সিনেমায় প্রথম জুটি বাঁধেন তারা। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমা পরিচালনা করেন জহিরুল হক।
সালমান শাহ অভিনীত সিনেমাগুলো হলো—‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ (১৯৯৩), ‘তুমি আমার’, ‘অন্তরে অন্তরে’, ‘সুজন সখী’, ‘বিক্ষোভ’, ‘স্নেহ’, ‘প্রেম যুদ্ধ’ (১৯৯৪), ‘কন্যাদান’, ‘দেনমোহর’, ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘আঞ্জুমান’, ‘মহামিলন’, ‘আশা ভালোবাসা’ (১৯৯৫), ‘বিচার হবে’, ‘এই ঘর এই সংসার’, ‘প্রিয়জন’, ‘তোমাকে চাই’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’, ‘জীবন সংসার’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’ (১৯৯৬), ‘প্রেমপিয়াসী’, ‘স্বপ্নের নায়ক’, ‘শুধু তুমি’, ‘আনন্দ অশ্রু’ ও ‘বুকের ভেতর আগুন’ (১৯৯৭)।
ঢাকা/শান্ত