পদ্মা শুকিয়ে ধু-ধু মাঠ, বিস্তীর্ণ চরে বাড়ছে ফসলের চাষ
Published: 6th, February 2025 GMT
প্রমত্তা পদ্মা নদী শুকিয়ে তার জৌলুস হারিয়েছে। পানি কমায় সেখানে বাড়ছে চরের বিস্তৃতি। এক সময়ের ভরা যৌবনা পদ্মা শুকিয়ে ধু-ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি না থাকায় কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার হার্ডিঞ্জ ব্রিজের নিচে এখন বিভিন্ন কৃষিজাত ফসলের চাষ হচ্ছে।
পদ্মার শাখা, উপশাখা নদীগুলো মূলত পদ্মাকে ঘিরেই এর সৌন্দর্য বিরাজ করে। কিন্তু শুষ্ক মওসুমের আগেই পদ্মার পানিশূন্য হয়ে পড়ায়, এর প্রভাব পড়েছে এসব নদী ও খাল বিলে। চির যৌবনা পদ্মা এখন পানিশূন্য নদী। দূর-দিগন্তে যতদূর চোখ যায়, শুধু ধু-ধু বালুচর।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার বৈশাখ মাস আসার আগেই যতটুকু পানি পদ্মায় রয়েছে, হয়তো সেটা আর দেখা যাবে না। মূলত নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে বালুচরের উচ্চতা বেড়ে গেছে। বর্ষা মওসুমে মাস তিনেকের জন্য নদীতে পানি থাকলেও বছরজুড়েই তলানিতে থাকে পানি। পদ্মায় শেষ পর্যন্ত যে পানি থাকে, তাতে কোনো কাজে লাগে না। বেশিরভাগ সময় একেবারে নাগালের বাইরে এ পানি অবস্থান করে। যা দিয়ে সেচের কাজও করতে পারেন না কৃষকরা।
নদীপাড়ের জেলে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘পদ্মা নদীতে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে জেলেদের একটি বড় অংশ বেকার হয়ে যায়। যারা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের এখনই দুর্দিন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই পদ্মা নদী থেকে নৌকা ও জাল গুটিয়ে নিয়েছেন। তারা মাছ শিকার না করে দিনমজুর, অটো, ভ্যান ও রিকশা চালানোর পেশা বেছে নেয়।’’
পরিবেশবিদ আতাউর রহমান বলেন, ‘‘আমরা অনেক আগে থেকেই ‘নদী বাঁচাও’ আন্দোলন করে যাচ্ছি। তবে মূল বিষয়টি হল, ভারত আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গঙ্গাসহ অভিন্ন নদীগুলোর পানি একতরফাভাবে সরিয়ে নিচ্ছে। এ কারণে পদ্মা থেকে শুরু করে শাখা উপশাখা নদীগুলো শুষ্ক মওসুমের আগেই শুকিয়ে যাচ্ছে। আর এ অঞ্চলের মানুষের ওপর এর প্রভাব পড়ছে।’’
কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘নদীতে পানি কম থাকায় চর বেড়েছে। এতে হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পূর্ব পাশে লালন শাহ সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজের মাঝখানে পদ্মার চরে গাজর চাষের বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আগাম জাতের গাজরের ভালো ফলন হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১ লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত গাজর বিক্রি হয়েছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘অন্য বছরের তুলনায় এবারে গাজর আবাদের খরচ বেড়েছে। গাজরের বীজ এবারে কৃষকরা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি কৃত্রিম সার সংকটের কারণে সরকারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার কিনতে হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে আবাদের শুরুতে তীব্র খরায় দ্বিগুণ সেচ দিতে হয়েছে। গাজর চাষে আগে খরচ হতো সর্বোচ্চ ৪০ হাজার টাকা। এবারে হয়েছে ৬০-৭০ হাজার টাকা। তবে সার ও বীজের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বিদেশ থেকে গাজর আমদানির ফলে কৃষকরা দেশীয় গাজরের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। গাজর চাষিদের কেউ কেউ আগাম গাজরের দাম পেয়ে খুশি।’’
ভেড়ামারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদা সুলতানা বলেন, ‘‘নদী শুকিয়ে গেলে জেলেরা এখানে চাষাবাদ করে থাকেন। এবার তারা গাজর চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো। গাজর চাষ লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর আবাদ বাড়ছে। বর্তমান বাজারে গাজর যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে কৃষকরা অনেক লাভবান হচ্ছেন। এজন্য চাষিদের নানা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করে আসছে কৃষি বিভাগ।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/এনএইচ/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস
জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।
বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫