বিএনপি জোটের শরিক হিসেবে ২০১৮ সালে বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ) আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচন করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। আগামী নির্বাচনেও তিনি জোটবদ্ধ নির্বাচনে আগ্রহী এবং তা নিজ দলের প্রতীক ‘কেটলি’ নিয়ে। কিন্তু  বিএনপির তৃণমূল বাইরের প্রার্থী মানতে নারাজ। মান্নাকে নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। যদিও সম্ভাব্য প্রার্থীরা বলছেন, হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

জানতে চাইলে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করে আসছি। নির্বাচনও জোটবদ্ধ হয়ে করতে চাই।’ 

তিনি বলেন, ‘২০১৮ সালের নাগরিক ঐক্যের নিবন্ধন ছিল না বলে ধানের শীষ নিয়েছিলাম। এখন আমার দল নিবন্ধিত। কেটলি প্রতীকই হবে আমার নির্বাচনী প্রতীক।’
বগুড়া-২ আসনে ১৯৯১ সালে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এমপি হন। এর পর ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে বিএনপি জয় পায়। ২০১৪ সালে বিনা ভোটে এমপি হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। ২০১৮ সালে ধানের শীষ নিয়ে মান্না হেরে যান জাপার কাছে।

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে জামায়াত প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। নবীন-প্রবীণ মিলে বিএনপির ছয় নেতা আলোচনায়। তারা হলেন– জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম আর ইসলাম স্বাধীন, শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মীর শাহে আলম, সাবেক এমপি এ কে এম হাফিজার রহমান, অধ্যক্ষ নুর আফরোজ জ্যোতি, ড্যাব নেতা ডা.

ফিরোজ আহম্মেদ ও উপজেলা মহিলা দলের বহিষ্কৃত সভাপতি বিউটি বেগম। বিএনপি কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি করে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে এলাকায় মান্নার ঘন ঘন আগমন ও সভা-সমাবেশ করায় তিনিই জোটের প্রার্থী হচ্ছেন বিএনপিতে এমন গুঞ্জন রয়েছে। যদিও মান্নার কর্মসূচিতে নিজ দলের নেতাকর্মী ছাড়া বিএনপির কাউকে দেখা যায় না।

সূত্র জানায়, বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা মুখে কিছু না বললেও দলের বাইরে কাউকে মেনে নেবেন না। ইতোমধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের কয়েক নেতা বলেছেন, বগুড়ায় একটি আসনও সমমনাদের দেওয়া হবে না। স্থানীয় বিএনপির দুটি গ্রুপের বড়টি নিয়ন্ত্রণ করেন মীর শাহে আলম। তারা সবাই মান্নাবিরোধী। তবে অন্য পক্ষ ভেতরে ভেতরে মান্নাকে সমর্থন দিচ্ছে।

বিএনপির একাংশের দাবি, মান্না নৌকা 

এবং ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করেও জিততে পারেননি। আগামীতে জোটের প্রার্থী হিসেবে কেটলি নিয়ে লড়লে আসনটি জামায়াতের ঘরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি অধ্যক্ষ নুর আফরোজ জ্যোতি বলেন, ‘মান্নাকে আসন ছাড় দেওয়া হবে কিনা, জানি না। তবে তাঁর সম্পর্কে বিএনপির ভোটার ও নেতাকর্মীর ধারণা নেতিবাচক।’ 

মীর শাহে আলম বলেন, ‘বিষয়টি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেখভাল করছেন। দল যাকে বেছে দেবে, তাঁর হয়ে কাজ করব।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ব এনপ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ‘আমাদের সন্তানেরা জীবন বাজি রেখে রাস্তায় নেমেছিল, আমরাও তাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা ফ্যাসিবাদকে বিদায় করেছে। এক বছর আগেও মানুষ চিন্তা করতে পারেনি যে তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে। কিন্তু আজ সারা দেশের জনগণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছেমতো কেড়েও নেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।’

আজ সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার খানজাহান আলী থানা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত ‘সহযোগী সদস্য সংগ্রহ অভিযান-২০২৫’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথাগুলো বলেন।

২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন নিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘২০১৪ সালে তারা ষড়যন্ত্র করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছিল। কেউ নির্বাচনে যায়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল ইতিহাসের আরেক কালো অধ্যায়। যেখানে রাতেই ভোট হয়ে গিয়েছিল। আর এসব নির্বাচনে হাসিনাকে সঙ্গ দিয়েছে জাতীয় পার্টি। আমরা একটা কালো যুগ পার করেছি। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছিল। মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। মানুষকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়নি। তারা মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে দেয়নি।’ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘যারা হাত-পা হারিয়েছে, যারা নির্যাতিত হয়েছে, তারা কখনোই এসব খুনিকে ক্ষমা করবে না। খুনিদের বিচার করতে হবে এবং সব স্তরে সংস্কার করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে, যেখানে কালোটাকা ও পেশিশক্তির প্রভাব থাকবে না। নির্বাচন জনগণের অধিকার। জনগণই তাঁদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। যাঁরা নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির ব্যবহার করতে চাইবেন, জনগণ তাঁদের প্রতিহত করবেন।’

মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবিলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালিমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।’

ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের প্রসঙ্গে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই, যেখানে ন্যায়বিচার থাকবে, বেকারত্ব ও চাঁদাবাজি থাকবে না। যেখানে মা-বোনেরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে না। আমরা সাম্যের ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চাই।’

খানজাহান আলী থানা জামায়াতের আমির সৈয়দ হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি গাজী মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মিয়া গোলাম কুদ্দুস ও বায়তুল মাল সেক্রেটারি হাফেজ আমিনুল ইসলাম। গণসংযোগের সময় স্থানীয় মার্কেটের ব্যবসায়ী, পথচারী, স্থানীয় বাসিন্দা, গাড়িচালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দাওয়াত দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক এডিসি ইশতিয়াকের নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জমা দিলেন রাশেদ খান
  • ২ মে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ, প্রচারপত্রে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ৭ অপরাধ
  • মানুষ চিন্তা করতে পারেনি, তারা মনের কথা নির্বিঘ্নে প্রকাশ করতে পারবে: জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল
  • দুর্নীতির মামলায় পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক সাময়িক বরখাস্ত
  • জাতীয় ঐক্যমত কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে গণঅধিকার পরিষদ
  • সংস্কারের প্রশ্নে ব্যক্তি–দলের স্বার্থের চেয়ে দেশকে প্রাধান্য দিতে হবে: নুরুল হক
  • চাকরি ছেড়ে হয়েছিলেন হতাশাগ্রস্ত বেকার, এখন মাসে আয় ৯ লাখ টাকা